শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির ২০ লাখ টাকার বেশি হাতিয়ে নিয়েছে প্রতারক চক্র

নরসিংদীর সদর জেলার নবাববাড়ী মোড়ের বাসিন্দা রাজমিস্ত্রী সাইফুল ইসলাম ও শাহানাজ বেগমের দুই ছেলে-মেয়ে। ছেলে সৈকত সদর উপজেলার নবাববাড়ী সরকারি প্রাইমারি স্কুলের ৩য় শ্রেণীতে আর মেয়ে শারমিন প্রথম শ্রেণীতে পড়ে। চলতি বছরের রমজানের আগে ছেলে ও মেয়ের খাতা-কলম এবং পোশাকের জন্য সরকারের দেয়া উপবৃত্তির ৭২০ টাকা আসে শাহানাজ বেগমের মোবাইলের নগদ একাউন্টে। স্কুলের দপ্তরি মাসুম তার কাছ থেকে মোবাইল ফোন নিয়ে ম্যাসেজ আদান-প্রদান করার পর টাকাটি হাওয়া হয়ে যায়। শাহানাজ বেগমের মতো ওই স্কুলের ১৮ অভিভাবকের টাকা হাওয়া হয়ে গেছে।

পুলিশ বলছে, সারাদেশে এমন বিভিন্ন সরকারি স্কুলের এমন ৪শ’ অভিভাবকের কাছ থেকে প্রায় ২০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে একটি সংঘবদ্ধ চক্র। এ চক্র এখনও সক্রিয় রয়েছে। অনেক অভিবাবক এখনও বিষয়টি বুঝতে পারছেন না।

গত দুই মাসে প্রতারণার মাধ্যমে স্কুলের শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের মোবাইলে সরকারের পাঠানো উপবৃত্তির টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে ডিএমপির সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম ইউনিট ৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।

গত ৩০ জুন ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলা থেকে মনির মিয়া, হাসান শেখ এবং কামরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে ৩০ মে রংপুর থেকে আসাদুল ইসলাম, আবু বকর সিদ্দিক এবং নরসিংদি থেকে খাবিরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ জানিয়েছে, শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির টাকা অভিনব কৌশলে হাতিয়ে নিচ্ছে প্রতারক চক্র।

ডিবির সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মহিদুল ইসলাম সংবাদকে জানান, প্রত্যেক অভিভাবকের কাছে টাকা পৌঁছানোর জন্য একটি গোপন ওটিপি নম্বর রয়েছে যা সরকারের সংশ্লিষ্টদের কাছে রয়েছে।

সম্প্রতি একটি প্রতারক চক্র অভিভাবকদের কাছে ফোন করে। এরা উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, সংশ্লিষ্ট স্কুলের প্রধান শিক্ষক পরিচয়ে ফোন করে। কৌশলে তারা গোপন ওপিটি নাম্বারটি নিয়ে টাকা তুলে নিয়ে যায়। এ প্রতারক চক্র গত কয়েক মাসে ৪ হাজার শিক্ষার্থীর উপবৃত্তির প্রায় ২০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই রিয়াজুল করিম সংবাদকে জানান, নগদ মোবাইল ব্যাংকিং কর্মকর্তা তৌহিদুল ইসলাম একটি মামলা করেন। সেখানে তিনি ৬৫টি নগদ একাউন্টে ২০ লাখ টাকারও বেশি উপবৃত্তির টাকার লেনদেনের অভিযোগ করেন। তদন্তে নেমে আমরা জানতে পারি ৬৫টি একাউন্টের ৬০টি ফরিদপুর জেলা কেন্দ্রিক। অন্য ৫টি একাউন্ট নরসিংদী, রংপুর কেন্দ্রিক। তবে মোবাইলের রেজিস্টেশন বিভিন্ন জেলা থেকে করা। আমরা একটি নম্বরের সূত্র ধরে রংপুর, নরসিংদী এলাকায় অভিযান চালাই। সেখানে স্কুলের দপ্তরিসহ ৩ জনকে গ্রেপ্তার করি। পরে ফরিদপুরের ভাঙ্গা এলাকা থেকে আরও ৩ জনকে গ্রেপ্তার করি। আমরা তদন্ত করে জানতে পারি চক্রটি ফরিদপুর, রংপুর, নরসিংদীসহ সারাদেশেই সক্রিয়। এরা অভিভাবকদের ফোন করে বলে এ মাসে আপনার সন্তানের উপবৃত্তির ৪৫০ টাকা গিয়েছে। টাকা যাওয়ার কথা ছিল ২ হাজার। আপনার নম্বরে আমরা একটি এসএমএস দিচ্ছি। আপনি ওপিটি নম্বরটি ফিরতি ম্যাসেজে আমাদের কাছে পাঠালে আমরা পুরো টাকা পাঠিয়ে দিচ্ছি। এমন ফোনের পর অনেক অভিভাবক তাদের প্রতারণার ফাঁদে পড়ে। তারা মূলত কখনও পুরো টাকা, কখনও অধৈক টাকা নিয়ে যায়। এভাবে তারা ২০০ সালের করোনা সংক্রমণ শুরুর পর থেকে প্রতারণা করে আসছিল। তাদের ৬৫ নগদ একাউন্টে ৪ হাজার শিক্ষার্থীর ২০ লাখ টাকারও বেশি জমা হওয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে।

আমরা ধারণা করছি, সারাদেশে এমন চক্র সক্রিয় আছে। সারাদেশে কত শিক্ষার্থী উপবৃত্তির টাকা পাচ্ছে সেই হিসাবও আমাদের কাছে নেই। আর এভাবে নগদ একাউন্টের টাকা হাতিয়ে নেয়ার কতগুলো চক্র আছে সেটি এখনও পরিষ্কার হয়নি। আমরা কয়েকজনকে খুঁজছি যারা এ চক্রের সঙ্গে জড়িত।

নবাববাড়ী সরকারি স্কুলের ৫ম শ্রেণী পড়–য়া এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক রাজিয়া বেগম। তিনি সংবাদকে বলেন, তার ছেলে এ বছর ৫ম শ্রেণীতে পড়ে। উপবৃত্তি চালু হওয়ার পর থেকে তিনি প্রতিবারই টাকা পেতেন। গত বছর তিনি কোন টাকা পাননি। হঠাৎ করে টাকা না পাওয়ার বিষয়টি তিনি মনে করেছিলেন হয়তো টাকা আসেনি। কিন্তু এবারও টাকা না পাওয়ায় স্কুলের শিক্ষকদের কাছে যান। সে সময় স্কুলের দপ্তরি মনির হোসেন তার মোবাইল চেক করেন। পরে তিনি দেখেন তার মোবাইলে ২৫০ টাকা এসেছে। শিক্ষকরা জানান, টাকাতো ৪৫০ টাকা আসার কথা কিন্তু কম আসল কেন। পরে স্কুলের দপ্তরির মোবাইল চেকের বিষয়টি তিনি শিক্ষকদের জানান। তিনি বলেন, তার মতো ওই স্কুলের ১৮ অভিভাবকের টাকা একই কায়দায় হাতিয়ে নিয়েছে প্রতারক চক্র। আর প্রতারক চক্রকে সহযোগিতা করেছেন স্কুলের দপ্তরি মাসুম। পরে পুলিশ মাসুমকে ধরে নিয়ে যায়। সাইবার টিম জানায়, বনানী থানায় তথ্যপ্রযুক্তি আইনে একটি মামলা হয়।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, বর্তমানে সারাদেশে ১ কোটি ৪০ লাখ প্রাইমারি শিক্ষার্থীকে উপবৃত্তির টাকা দেয়া হচ্ছে। একটি প্রকল্পের আওতায় আগে শিওর ক্যাশ মোবাইল ব্যাকিং থেকে টাকা পাঠানো হলেও চলতি বছর থেকে নগদ মোবাইল ব্যাকিংয়ের মাধ্যমে অভিবাবকদের কাছে টাকা পাঠানো হয়। প্রতি মাসে নির্ধারিত টাকা হিসাবে করে বছরে দু’বার বা তিনবারে টাকাটি পাঠানো হয়। পুরো পক্রিয়াটি নিয়ন্ত্রণ করে নগদ কর্তৃপক্ষ। তবে এ বছর থেকে এ টাকা সরকারের রাজস্ব থেকে যাবে। সূত্র জানিয়েছে, প্রতারণার বিষয়টি নগদ কর্তৃপক্ষ ভালো বলতে পারবে। তাদের কাছে একটি হিসাব আছে শিক্ষার্থীদের। কোন শিক্ষার্থী কত টাকা পায়। এ বিষয়ে জানতে চাইলে নগদের নির্বাহী পরিচালক মো. সাফায়েত আলম, শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে আমরা একটি অভিযোগ পাই যে, নগদ থেকে অভিভাবকদের কাছে পাঠানো উপবৃত্তির টাকাগুলো প্রতারক চক্র হাতিয়ে নিচ্ছে। আমরা কিছু নম্বর শনাক্ত করি যেগুলোর মাধ্যমে টাকাগুলো নেয়া হয়েছে। তখন আমরা এ বিষয়ে একটি মামলা করি এবং পুলিশকে অবগত করি। ইতোমধ্যে পুলিশ বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে। তবে আমরা বলব এখানে আমাদের কোন দুর্বলতা নেই। গ্রাহকের কাছে প্রতারক চক্র নানা কৌশলে ফোন দিয়ে গোপন পিন নম্বর জেনে নিচ্ছে। এরপর তারা ওপিটি নম্বর দিয়ে টাকা তুলে নিচ্ছে। এ বিষয়ে আমরা সতর্ক আছি।

মঙ্গলবার, ০৬ জুলাই ২০২১ , ২২ আষাঢ় ১৪২৮ ২৪ জিলক্বদ ১৪৪২

শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির ২০ লাখ টাকার বেশি হাতিয়ে নিয়েছে প্রতারক চক্র

সাইফ বাবলু

নরসিংদীর সদর জেলার নবাববাড়ী মোড়ের বাসিন্দা রাজমিস্ত্রী সাইফুল ইসলাম ও শাহানাজ বেগমের দুই ছেলে-মেয়ে। ছেলে সৈকত সদর উপজেলার নবাববাড়ী সরকারি প্রাইমারি স্কুলের ৩য় শ্রেণীতে আর মেয়ে শারমিন প্রথম শ্রেণীতে পড়ে। চলতি বছরের রমজানের আগে ছেলে ও মেয়ের খাতা-কলম এবং পোশাকের জন্য সরকারের দেয়া উপবৃত্তির ৭২০ টাকা আসে শাহানাজ বেগমের মোবাইলের নগদ একাউন্টে। স্কুলের দপ্তরি মাসুম তার কাছ থেকে মোবাইল ফোন নিয়ে ম্যাসেজ আদান-প্রদান করার পর টাকাটি হাওয়া হয়ে যায়। শাহানাজ বেগমের মতো ওই স্কুলের ১৮ অভিভাবকের টাকা হাওয়া হয়ে গেছে।

পুলিশ বলছে, সারাদেশে এমন বিভিন্ন সরকারি স্কুলের এমন ৪শ’ অভিভাবকের কাছ থেকে প্রায় ২০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে একটি সংঘবদ্ধ চক্র। এ চক্র এখনও সক্রিয় রয়েছে। অনেক অভিবাবক এখনও বিষয়টি বুঝতে পারছেন না।

গত দুই মাসে প্রতারণার মাধ্যমে স্কুলের শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের মোবাইলে সরকারের পাঠানো উপবৃত্তির টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে ডিএমপির সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম ইউনিট ৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।

গত ৩০ জুন ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলা থেকে মনির মিয়া, হাসান শেখ এবং কামরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে ৩০ মে রংপুর থেকে আসাদুল ইসলাম, আবু বকর সিদ্দিক এবং নরসিংদি থেকে খাবিরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ জানিয়েছে, শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির টাকা অভিনব কৌশলে হাতিয়ে নিচ্ছে প্রতারক চক্র।

ডিবির সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মহিদুল ইসলাম সংবাদকে জানান, প্রত্যেক অভিভাবকের কাছে টাকা পৌঁছানোর জন্য একটি গোপন ওটিপি নম্বর রয়েছে যা সরকারের সংশ্লিষ্টদের কাছে রয়েছে।

সম্প্রতি একটি প্রতারক চক্র অভিভাবকদের কাছে ফোন করে। এরা উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, সংশ্লিষ্ট স্কুলের প্রধান শিক্ষক পরিচয়ে ফোন করে। কৌশলে তারা গোপন ওপিটি নাম্বারটি নিয়ে টাকা তুলে নিয়ে যায়। এ প্রতারক চক্র গত কয়েক মাসে ৪ হাজার শিক্ষার্থীর উপবৃত্তির প্রায় ২০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই রিয়াজুল করিম সংবাদকে জানান, নগদ মোবাইল ব্যাংকিং কর্মকর্তা তৌহিদুল ইসলাম একটি মামলা করেন। সেখানে তিনি ৬৫টি নগদ একাউন্টে ২০ লাখ টাকারও বেশি উপবৃত্তির টাকার লেনদেনের অভিযোগ করেন। তদন্তে নেমে আমরা জানতে পারি ৬৫টি একাউন্টের ৬০টি ফরিদপুর জেলা কেন্দ্রিক। অন্য ৫টি একাউন্ট নরসিংদী, রংপুর কেন্দ্রিক। তবে মোবাইলের রেজিস্টেশন বিভিন্ন জেলা থেকে করা। আমরা একটি নম্বরের সূত্র ধরে রংপুর, নরসিংদী এলাকায় অভিযান চালাই। সেখানে স্কুলের দপ্তরিসহ ৩ জনকে গ্রেপ্তার করি। পরে ফরিদপুরের ভাঙ্গা এলাকা থেকে আরও ৩ জনকে গ্রেপ্তার করি। আমরা তদন্ত করে জানতে পারি চক্রটি ফরিদপুর, রংপুর, নরসিংদীসহ সারাদেশেই সক্রিয়। এরা অভিভাবকদের ফোন করে বলে এ মাসে আপনার সন্তানের উপবৃত্তির ৪৫০ টাকা গিয়েছে। টাকা যাওয়ার কথা ছিল ২ হাজার। আপনার নম্বরে আমরা একটি এসএমএস দিচ্ছি। আপনি ওপিটি নম্বরটি ফিরতি ম্যাসেজে আমাদের কাছে পাঠালে আমরা পুরো টাকা পাঠিয়ে দিচ্ছি। এমন ফোনের পর অনেক অভিভাবক তাদের প্রতারণার ফাঁদে পড়ে। তারা মূলত কখনও পুরো টাকা, কখনও অধৈক টাকা নিয়ে যায়। এভাবে তারা ২০০ সালের করোনা সংক্রমণ শুরুর পর থেকে প্রতারণা করে আসছিল। তাদের ৬৫ নগদ একাউন্টে ৪ হাজার শিক্ষার্থীর ২০ লাখ টাকারও বেশি জমা হওয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে।

আমরা ধারণা করছি, সারাদেশে এমন চক্র সক্রিয় আছে। সারাদেশে কত শিক্ষার্থী উপবৃত্তির টাকা পাচ্ছে সেই হিসাবও আমাদের কাছে নেই। আর এভাবে নগদ একাউন্টের টাকা হাতিয়ে নেয়ার কতগুলো চক্র আছে সেটি এখনও পরিষ্কার হয়নি। আমরা কয়েকজনকে খুঁজছি যারা এ চক্রের সঙ্গে জড়িত।

নবাববাড়ী সরকারি স্কুলের ৫ম শ্রেণী পড়–য়া এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক রাজিয়া বেগম। তিনি সংবাদকে বলেন, তার ছেলে এ বছর ৫ম শ্রেণীতে পড়ে। উপবৃত্তি চালু হওয়ার পর থেকে তিনি প্রতিবারই টাকা পেতেন। গত বছর তিনি কোন টাকা পাননি। হঠাৎ করে টাকা না পাওয়ার বিষয়টি তিনি মনে করেছিলেন হয়তো টাকা আসেনি। কিন্তু এবারও টাকা না পাওয়ায় স্কুলের শিক্ষকদের কাছে যান। সে সময় স্কুলের দপ্তরি মনির হোসেন তার মোবাইল চেক করেন। পরে তিনি দেখেন তার মোবাইলে ২৫০ টাকা এসেছে। শিক্ষকরা জানান, টাকাতো ৪৫০ টাকা আসার কথা কিন্তু কম আসল কেন। পরে স্কুলের দপ্তরির মোবাইল চেকের বিষয়টি তিনি শিক্ষকদের জানান। তিনি বলেন, তার মতো ওই স্কুলের ১৮ অভিভাবকের টাকা একই কায়দায় হাতিয়ে নিয়েছে প্রতারক চক্র। আর প্রতারক চক্রকে সহযোগিতা করেছেন স্কুলের দপ্তরি মাসুম। পরে পুলিশ মাসুমকে ধরে নিয়ে যায়। সাইবার টিম জানায়, বনানী থানায় তথ্যপ্রযুক্তি আইনে একটি মামলা হয়।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, বর্তমানে সারাদেশে ১ কোটি ৪০ লাখ প্রাইমারি শিক্ষার্থীকে উপবৃত্তির টাকা দেয়া হচ্ছে। একটি প্রকল্পের আওতায় আগে শিওর ক্যাশ মোবাইল ব্যাকিং থেকে টাকা পাঠানো হলেও চলতি বছর থেকে নগদ মোবাইল ব্যাকিংয়ের মাধ্যমে অভিবাবকদের কাছে টাকা পাঠানো হয়। প্রতি মাসে নির্ধারিত টাকা হিসাবে করে বছরে দু’বার বা তিনবারে টাকাটি পাঠানো হয়। পুরো পক্রিয়াটি নিয়ন্ত্রণ করে নগদ কর্তৃপক্ষ। তবে এ বছর থেকে এ টাকা সরকারের রাজস্ব থেকে যাবে। সূত্র জানিয়েছে, প্রতারণার বিষয়টি নগদ কর্তৃপক্ষ ভালো বলতে পারবে। তাদের কাছে একটি হিসাব আছে শিক্ষার্থীদের। কোন শিক্ষার্থী কত টাকা পায়। এ বিষয়ে জানতে চাইলে নগদের নির্বাহী পরিচালক মো. সাফায়েত আলম, শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে আমরা একটি অভিযোগ পাই যে, নগদ থেকে অভিভাবকদের কাছে পাঠানো উপবৃত্তির টাকাগুলো প্রতারক চক্র হাতিয়ে নিচ্ছে। আমরা কিছু নম্বর শনাক্ত করি যেগুলোর মাধ্যমে টাকাগুলো নেয়া হয়েছে। তখন আমরা এ বিষয়ে একটি মামলা করি এবং পুলিশকে অবগত করি। ইতোমধ্যে পুলিশ বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে। তবে আমরা বলব এখানে আমাদের কোন দুর্বলতা নেই। গ্রাহকের কাছে প্রতারক চক্র নানা কৌশলে ফোন দিয়ে গোপন পিন নম্বর জেনে নিচ্ছে। এরপর তারা ওপিটি নম্বর দিয়ে টাকা তুলে নিচ্ছে। এ বিষয়ে আমরা সতর্ক আছি।