লকডাউন শিথিলে সংক্রমণ বাড়ার শঙ্কা স্বাস্থ্যমন্ত্রীর

আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে লকডাউন শিথিল করা হয়েছে। আর এই লকডাউন শিথিলের ঘোষণায় সংক্রমণের হার বাড়তে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

তবে এ সময় সবাই যদি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে, সংক্রমণের হার নিয়ন্ত্রণে থাকবে বলেও আশার কথা শুনিয়েছেন তিনি। বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কোভিড-১৯ আইসিইউ সম্প্রসারণ এবং ওপিডি শেড উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, লকডাউন শিথিল করা হলেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে আশা করি সংক্রমণের হার নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

তিনি আরও বলেন, ‘ঈদের যে আনন্দ, সে আনন্দ মানুষ করতে পারবে না। আমরা এমনভাবে যাতে ঘোরাফেরা না করি, ঈদের আনন্দ যেন দুঃখে বা ট্র্যাজেডিতে পরিণত না হয়ে যায়। সংক্রমিত হয়ে মানুষ মারা গেলে ঈদ আর ঈদ থাকবে না, তখন আমাদের মাতম করতে হবে।’

তিনি বলেন, বাংলাদেশের করোনাভাইরাস প্রায় সব বিভাগে কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী। কিছু কিছু বিভাগে স্থিতিশীল আছে, কিছু কিছু বিভাগে ঊর্ধ্বমুখী। আমাদের দেশে ১৫ হাজার বেড রয়েছে, এরমধ্যে ৭৫ শতাংশ বেডে রোগী আছে। এ পরিস্থিতিতে সংক্রমণের হার কমাতে হবে। সংক্রমণের হার কমাতে হলে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। সংক্রমণের হার বাড়লে রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকবে, স্বাস্থ্য সেবায় বিরাট চাপ পড়বে। আমাদের অর্থনীতি বিপর্যস্ত হবে। মানুষের জীবন বিপর্যস্ত হবে। বিভিন্ন খাতে এর প্রভাব পড়বে। যেসব কারণে সংক্রমণ বাড়ে, আপনাদের অনুরোধ করবো সেসব কারণ আপনারা বুঝে চলবেন।

গ্রামের মানুষকে চিকিৎসা দেয়া ও তাড়াতাড়ি হাসপাতালে নেয়ার জন্য ব্যবস্থা করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ইউনিয়ন পর্যায়ের স্বাস্থ্যকর্মীরা বাড়ি বাড়ি যাবেন, দেখবেন কোন কোন লোকজন অসুস্থ হয়েছেন। প্রাথমিক পর্যায়ে টেম্পারেচার ও অক্সিজেন লেভেল মাপবেন। প্রয়োজনে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেবেন। এর মাধ্যমে রোগীর সংখ্যা ও মৃত্যুর হার কমবে বলে আমরা মনে করি। স্টক থেকে ভ্যাকসিন দেয়া শুরু হয়েছে। আমরা আরও ভ্যাকসিন পাবো। ভ্যাকসিন নিতে যদি সমস্যা হয়, গ্রামের মানুষদের যদি নিবন্ধন করতে কষ্ট হয়, তাহলে জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়েও আমরা ভ্যাকসিন দেয়া চেষ্টা করবো।

খুলনা ও রাজশাহী বিভাগে সংক্রমণ ও মৃত্যু বেড়ে গিয়েছিল। আশার কথা হলো এখন কিছু কিছু জেলায় সংক্রমণ কমেছে। খুলনাতেও মৃত্যুর হার কমেছে। অর্থাৎ লকডাউনের সুফল আমরা পেয়েছি। আমরা সব সময় মানুষকে সেবা দেয়ার চেষ্টা করছি। ঢাকা মেডিকেল কলেজে আইসিইউ মাত্র ২০টি ছিল, আমরা সেটিকে ৩০-এ উন্নীত করেছি। আমরা ১০টি আইসিইউ চালু করলাম।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এবার সংক্রমণ গ্রামগঞ্জে বেশি, শহরে কম। গ্রামের মানুষ মনে করে, সাধারণ সর্দি-কাশি, যে কারণে চিকিৎসা নিতে দেরি করে। যারা বয়স্ক আছেন তারা বেশি মারা যাচ্ছেন। আমরা ফিল্ড হাসপাতাল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

মন্ত্রী বলেন, ভ্যাকসিন গ্রহণের বয়সসীমা কমিয়ে আনার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। আমরা ছেলেমেয়েদের তাড়াতাড়ি স্কুল-কলেজে পাঠাতে চাই। শিক্ষকদের আমরা ভ্যাকসিন দিয়েছি এবং ১৮ বছর ও এর বেশি বয়সী ছেলেমেয়েদের আমরা ভ্যাকসিনের আওতায় নিয়ে আসব। তাদের স্কুল-কলেজে যাওয়ার সুযোগ করে দেব। তাদের জীবনের একটা বছর নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এটা একটা দেশের জন্য বিরাট ক্ষতি।

শুক্রবার, ১৬ জুলাই ২০২১ , ১ শ্রাবন ১৪২৮ ৫ জিলহজ ১৪৪২

লকডাউন শিথিলে সংক্রমণ বাড়ার শঙ্কা স্বাস্থ্যমন্ত্রীর

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে লকডাউন শিথিল করা হয়েছে। আর এই লকডাউন শিথিলের ঘোষণায় সংক্রমণের হার বাড়তে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

তবে এ সময় সবাই যদি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে, সংক্রমণের হার নিয়ন্ত্রণে থাকবে বলেও আশার কথা শুনিয়েছেন তিনি। বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কোভিড-১৯ আইসিইউ সম্প্রসারণ এবং ওপিডি শেড উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, লকডাউন শিথিল করা হলেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে আশা করি সংক্রমণের হার নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

তিনি আরও বলেন, ‘ঈদের যে আনন্দ, সে আনন্দ মানুষ করতে পারবে না। আমরা এমনভাবে যাতে ঘোরাফেরা না করি, ঈদের আনন্দ যেন দুঃখে বা ট্র্যাজেডিতে পরিণত না হয়ে যায়। সংক্রমিত হয়ে মানুষ মারা গেলে ঈদ আর ঈদ থাকবে না, তখন আমাদের মাতম করতে হবে।’

তিনি বলেন, বাংলাদেশের করোনাভাইরাস প্রায় সব বিভাগে কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী। কিছু কিছু বিভাগে স্থিতিশীল আছে, কিছু কিছু বিভাগে ঊর্ধ্বমুখী। আমাদের দেশে ১৫ হাজার বেড রয়েছে, এরমধ্যে ৭৫ শতাংশ বেডে রোগী আছে। এ পরিস্থিতিতে সংক্রমণের হার কমাতে হবে। সংক্রমণের হার কমাতে হলে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। সংক্রমণের হার বাড়লে রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকবে, স্বাস্থ্য সেবায় বিরাট চাপ পড়বে। আমাদের অর্থনীতি বিপর্যস্ত হবে। মানুষের জীবন বিপর্যস্ত হবে। বিভিন্ন খাতে এর প্রভাব পড়বে। যেসব কারণে সংক্রমণ বাড়ে, আপনাদের অনুরোধ করবো সেসব কারণ আপনারা বুঝে চলবেন।

গ্রামের মানুষকে চিকিৎসা দেয়া ও তাড়াতাড়ি হাসপাতালে নেয়ার জন্য ব্যবস্থা করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ইউনিয়ন পর্যায়ের স্বাস্থ্যকর্মীরা বাড়ি বাড়ি যাবেন, দেখবেন কোন কোন লোকজন অসুস্থ হয়েছেন। প্রাথমিক পর্যায়ে টেম্পারেচার ও অক্সিজেন লেভেল মাপবেন। প্রয়োজনে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেবেন। এর মাধ্যমে রোগীর সংখ্যা ও মৃত্যুর হার কমবে বলে আমরা মনে করি। স্টক থেকে ভ্যাকসিন দেয়া শুরু হয়েছে। আমরা আরও ভ্যাকসিন পাবো। ভ্যাকসিন নিতে যদি সমস্যা হয়, গ্রামের মানুষদের যদি নিবন্ধন করতে কষ্ট হয়, তাহলে জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়েও আমরা ভ্যাকসিন দেয়া চেষ্টা করবো।

খুলনা ও রাজশাহী বিভাগে সংক্রমণ ও মৃত্যু বেড়ে গিয়েছিল। আশার কথা হলো এখন কিছু কিছু জেলায় সংক্রমণ কমেছে। খুলনাতেও মৃত্যুর হার কমেছে। অর্থাৎ লকডাউনের সুফল আমরা পেয়েছি। আমরা সব সময় মানুষকে সেবা দেয়ার চেষ্টা করছি। ঢাকা মেডিকেল কলেজে আইসিইউ মাত্র ২০টি ছিল, আমরা সেটিকে ৩০-এ উন্নীত করেছি। আমরা ১০টি আইসিইউ চালু করলাম।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এবার সংক্রমণ গ্রামগঞ্জে বেশি, শহরে কম। গ্রামের মানুষ মনে করে, সাধারণ সর্দি-কাশি, যে কারণে চিকিৎসা নিতে দেরি করে। যারা বয়স্ক আছেন তারা বেশি মারা যাচ্ছেন। আমরা ফিল্ড হাসপাতাল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

মন্ত্রী বলেন, ভ্যাকসিন গ্রহণের বয়সসীমা কমিয়ে আনার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। আমরা ছেলেমেয়েদের তাড়াতাড়ি স্কুল-কলেজে পাঠাতে চাই। শিক্ষকদের আমরা ভ্যাকসিন দিয়েছি এবং ১৮ বছর ও এর বেশি বয়সী ছেলেমেয়েদের আমরা ভ্যাকসিনের আওতায় নিয়ে আসব। তাদের স্কুল-কলেজে যাওয়ার সুযোগ করে দেব। তাদের জীবনের একটা বছর নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এটা একটা দেশের জন্য বিরাট ক্ষতি।