আমিনবাজারে ছয় ছাত্রকে পিটিয়ে হত্যা, রায় ২ ডিসেম্বর

দশ বছর আগে রাজধানী সংলগ্ন আমিনবাজারে শবে বরাতের রাতে ডাকাত সন্দেহে ছয় ছাত্রকে পিটিয়ে হত্যা মামলায় শুনানি শেষ হয়েছে। আগামী ২ ডিসেম্বর রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেছে আদালত। গতকাল ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ইসমত জাহান রায়ের এ তারিখ নির্ধারণ করেছে।

আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) শাকিলা জিয়াসমিন বলেন, এ মামলায় দুই পক্ষের যুক্তিতর্ক শুনানি শেষ হয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদ- চাওয়া হয়েছে। এ মামলার মোট আসামির সংখ্যা ৬০ জন। তাদের মধ্যে ২ জন মারা গেছেন আর ১৬ জন পলাতক রয়েছেন। আর জামিনে থাকা ৪২ জন আসামির জামিন বাতিল করে আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছে।

২০১১ সালের ১৭ জুলাই শবে বরাতের রাতে আমিনবাজারের বড়দেশী গ্রামের কেবলার চরে ডাকাত সন্দেহে ছয় ছাত্রকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। ওই ঘটনা পুরো দেশকে স্তম্ভিত করেছিল। হামলায় নিহত ছাত্ররা হলেন ধানমন্ডির ম্যাপললিফ স্কুলের ‘এ’ লেভেলের ছাত্র শামস রহিম শাম্মাম, মিরপুর সরকারি বাঙলা কলেজের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ইব্রাহিম খলিল, বাঙলা কলেজের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র তৌহিদুর রহমান পলাশ, তেজগাঁও কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র টিপু সুলতান, মিরপুরে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজির (বিইউবিটি) বিবিএ দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র সিতাব জাবীর মুনিব এবং বাঙলা কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র কামরুজ্জামান।

নিহতদের সঙ্গে থাকা বন্ধু আল-আমিন গুরুতর আহত হলেও প্রাণে বেঁচে যান। ওই ঘটনার পর আল-আমিনসহ নিহতদের বিরুদ্ধে সাভার মডেল থানায় একটি ডাকাতি মামলা করেন আবদুল মালেক নামে স্থানীয় এক বালু ব্যবসায়ী। এরপর ছাত্র অভিভাবক ও সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিরোধিতার মুখে পুলিশ বাদী হয়ে অজ্ঞাত গ্রামবাসীকে আসামি করে সাভার মডেল থানায় আরেকটি মামলা করে। পরে মামলাটি তদন্ত শেষে ২০১৩ সালের ৭ জানুয়ারি র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরীফ উদ্দিন আহমেদ ঢাকার মুখ্য বিচারিক হাকিমের আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়।

অভিযোগপত্রে বলা হয়, নিরীহ ছাত্রদের হত্যার উদ্দেশ্যে আসামিরা মারধর করে। পরে হত্যার ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার জন্য মসজিদের মাইকে সবাইকে ডাকাত ঘোষণা দিয়ে। বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র দ্বারা আঘাত করে তাদের হত্যা করা হয়।

এরপর মামলাটি বিচারের জন্য ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ইসমত জাহানের আদালতে আসে। ২০১৩ সালের ৮ জুলাই ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ৬০ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে আদালত। এ ছাড়া ওই ঘটনায় বেঁচে যাওয়া একমাত্র ভিকটিম আল-আমিনকে একই ঘটনায় করা ডাকাতি মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়।

আরও খবর
করোনার ক্ষতি পোষাতে কাজের গতি বাড়ানোর নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
২৩ হাজার কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে জাপান
হাতি হত্যা বন্ধে অবিলম্বে পদক্ষেপ নিতে হাইকোর্টের নির্দেশ
বাসে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধ হয়নি
নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান অস্ত্রসহ আটক
৫৩টি ফেরির মধ্যে ৫০টিরই ফিটনেস সনদ নেই
দুই বিচারপতির যশোরে বদলি ঠেকাতে মাঠে নেমেছেন আইনজীবীরা
সেই অজ্ঞাত বৃদ্ধের চিকিৎসার ব্যবস্থা করলো র‌্যাব
অদম্য মেধাবী মোবারক
ড্যান্স ক্লাবে চাকরির কথা বলে শতাধিক তরুণীকে দুবাই পাচার
স্বতন্ত্র প্রার্থীদের প্রচারণায় এমপি টুকু বাধা দিচ্ছেন কিনা, জানতে চায় হাইকোর্ট
বিএনপির সাবেক এমপি মোমিন তালুকদারের রায় কাল

মঙ্গলবার, ২৩ নভেম্বর ২০২১ , ৮ অগ্রহায়ণ ১৪২৮ ১৭ রবিউস সানি ১৪৪৩

আমিনবাজারে ছয় ছাত্রকে পিটিয়ে হত্যা, রায় ২ ডিসেম্বর

আদালত বার্তা পরিবেশক

দশ বছর আগে রাজধানী সংলগ্ন আমিনবাজারে শবে বরাতের রাতে ডাকাত সন্দেহে ছয় ছাত্রকে পিটিয়ে হত্যা মামলায় শুনানি শেষ হয়েছে। আগামী ২ ডিসেম্বর রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেছে আদালত। গতকাল ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ইসমত জাহান রায়ের এ তারিখ নির্ধারণ করেছে।

আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) শাকিলা জিয়াসমিন বলেন, এ মামলায় দুই পক্ষের যুক্তিতর্ক শুনানি শেষ হয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদ- চাওয়া হয়েছে। এ মামলার মোট আসামির সংখ্যা ৬০ জন। তাদের মধ্যে ২ জন মারা গেছেন আর ১৬ জন পলাতক রয়েছেন। আর জামিনে থাকা ৪২ জন আসামির জামিন বাতিল করে আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছে।

২০১১ সালের ১৭ জুলাই শবে বরাতের রাতে আমিনবাজারের বড়দেশী গ্রামের কেবলার চরে ডাকাত সন্দেহে ছয় ছাত্রকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। ওই ঘটনা পুরো দেশকে স্তম্ভিত করেছিল। হামলায় নিহত ছাত্ররা হলেন ধানমন্ডির ম্যাপললিফ স্কুলের ‘এ’ লেভেলের ছাত্র শামস রহিম শাম্মাম, মিরপুর সরকারি বাঙলা কলেজের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ইব্রাহিম খলিল, বাঙলা কলেজের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র তৌহিদুর রহমান পলাশ, তেজগাঁও কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র টিপু সুলতান, মিরপুরে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজির (বিইউবিটি) বিবিএ দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র সিতাব জাবীর মুনিব এবং বাঙলা কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র কামরুজ্জামান।

নিহতদের সঙ্গে থাকা বন্ধু আল-আমিন গুরুতর আহত হলেও প্রাণে বেঁচে যান। ওই ঘটনার পর আল-আমিনসহ নিহতদের বিরুদ্ধে সাভার মডেল থানায় একটি ডাকাতি মামলা করেন আবদুল মালেক নামে স্থানীয় এক বালু ব্যবসায়ী। এরপর ছাত্র অভিভাবক ও সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিরোধিতার মুখে পুলিশ বাদী হয়ে অজ্ঞাত গ্রামবাসীকে আসামি করে সাভার মডেল থানায় আরেকটি মামলা করে। পরে মামলাটি তদন্ত শেষে ২০১৩ সালের ৭ জানুয়ারি র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরীফ উদ্দিন আহমেদ ঢাকার মুখ্য বিচারিক হাকিমের আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়।

অভিযোগপত্রে বলা হয়, নিরীহ ছাত্রদের হত্যার উদ্দেশ্যে আসামিরা মারধর করে। পরে হত্যার ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার জন্য মসজিদের মাইকে সবাইকে ডাকাত ঘোষণা দিয়ে। বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র দ্বারা আঘাত করে তাদের হত্যা করা হয়।

এরপর মামলাটি বিচারের জন্য ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ইসমত জাহানের আদালতে আসে। ২০১৩ সালের ৮ জুলাই ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ৬০ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে আদালত। এ ছাড়া ওই ঘটনায় বেঁচে যাওয়া একমাত্র ভিকটিম আল-আমিনকে একই ঘটনায় করা ডাকাতি মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়।