বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী

স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন করছে দেশ। স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস স্থান-কাল পাত্রভেদে ভিন্ন হয়। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ঘোষণার মধ্য দিয়ে যে আন্দোলন শুরু হয়েছিল ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর মাত্র ৯ মাসেই তা পূর্ণতা পায়। স্বাধীনতার স্বাদ গ্রহণ করে বীর বাঙালি। একটি স্বাধীন জাতি হিসেবে স্বাধীন দেশের একটি স্বাধীন ভূখণ্ড লাভ করে আজকের বাংলাদেশ।

৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের প্রিয় এ দেশ। এ দেশের স্বাধীনতার ইতিহাস ঘাঁটলে আমরা দেখি বুদ্ধিজীবীসহ অসংখ্য শ্রেণী-পেশার সাধারণ মানুষের রক্তে অর্জিত এই দেশ।

স্বাধীনতাকে অর্থবহ করে তোলার বিষয়ে নানা মহলের প্রশ্ন থাকলেও ৫০ বছরে দেশের অর্জন কম নয়। ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ আজ পূর্ণতার পথে। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার পূর্ণ যোগ্যতা অর্জন করেছে বাংলাদেশ।

ডিসেম্বর মাস, বাঙালি তথা বাংলাদেশির স্বাধীনতা অর্জনের মাস।

১৯৭১ সালের ১ ডিসেম্বর বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে বিজয়ের সূচনা হয়। পাকিস্তানের সামরিক কমান্ডাররা অস্ত্র ফেলে মাথা নত করে আত্মসমর্পণের দলিলে সই দিয়ে ইতিহাসের এক কলঙ্কজনক অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি ঘটায় এ ডিসেম্বরেই। বছর ঘুরে প্রতিবারই এ মাস এলেই বাঙালি জাতি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে ইতিহাসের বীর সন্তান অকুতোভয় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের।

১ ডিসেম্বর ১৯৭১

মুক্তিবাহিনী সিলেটের শমসেরনগরে আক্রমণ চালিয়ে টেংরাটিলা ও দুয়ারাবাজার শত্রুমুক্ত করে। একাত্তরের ডিসেম্বর মাস থেকেই মুক্তিপাগল বাঙালি বুঝে নেয় তাদের বিজয় সুনিশ্চিত।

ডিসেম্বরের শুরুতেই মুক্তিযুদ্ধ সারাদেশে সর্বাত্মক রূপ নেয়। ডিসেম্বরের শুরুতেও চলতে থাকে মুক্তিবাহিনীর গেরিলা হামলা। একে একে মুক্ত হতে থাকে দেশের বিভিন্ন জায়গা। মুক্তিযোদ্ধাদের প্রবল আক্রমণের মুখে পাকিস্তানি বাহিনী পিছু হটতে বাধ্য হয়। শত্রুমুক্ত ঘোষণার পরও মুক্তিবাহিনীর অপারেশন চলতে থাকায় পাকি সেনারা সিলেটের গারা, আলীরগাঁও এবং পিরিজপুর থেকে ব্যারাক গুটিয়ে নেয়। তবে রাওয়ালপিন্ডিতে এক মুখপাত্র শেখ মুজিবুর রহমানের বিচার শেষ হয়নি বলে বিবৃতি দেয়।

এই দিনে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী পার্লামেন্টের বক্তৃতায় উপমহাদেশে শান্তি প্রতিষ্ঠার স্বার্থে বাংলাদেশ থেকে পাকিস্তানি সৈন্য অপসারণের জন্য ইয়াহিয়া খানের প্রতি আহ্বান জানান।

এ সময়ও তৎপর ছিল স্বাধীনতাবিরোধীরা।

মহান এ বিজয়ের মাস উদযাপনে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠনের পক্ষ থেকে বিস্তারিত কর্মসূচি নেয়া হয়েছে। বিজয়ের মাসের প্রথম দিনেই বিভিন্ন সংগঠন বিস্তারিত কর্মসূচি পালন করবে। এসব কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে বিজয়ের মাসকে স্বাগত জানিয়ে সমাবেশ, মানববন্ধন, মোমবাতি প্রজ্বলন, বিজয় র‌্যালি, মুক্তিযোদ্ধা কবরস্থানে শ্রদ্ধা নিবেদন ইত্যাদি।

বুধবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২১ , ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪২৮ ২৫ রবিউস সানি ১৪৪৩

বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন করছে দেশ। স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস স্থান-কাল পাত্রভেদে ভিন্ন হয়। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ঘোষণার মধ্য দিয়ে যে আন্দোলন শুরু হয়েছিল ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর মাত্র ৯ মাসেই তা পূর্ণতা পায়। স্বাধীনতার স্বাদ গ্রহণ করে বীর বাঙালি। একটি স্বাধীন জাতি হিসেবে স্বাধীন দেশের একটি স্বাধীন ভূখণ্ড লাভ করে আজকের বাংলাদেশ।

৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের প্রিয় এ দেশ। এ দেশের স্বাধীনতার ইতিহাস ঘাঁটলে আমরা দেখি বুদ্ধিজীবীসহ অসংখ্য শ্রেণী-পেশার সাধারণ মানুষের রক্তে অর্জিত এই দেশ।

স্বাধীনতাকে অর্থবহ করে তোলার বিষয়ে নানা মহলের প্রশ্ন থাকলেও ৫০ বছরে দেশের অর্জন কম নয়। ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ আজ পূর্ণতার পথে। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার পূর্ণ যোগ্যতা অর্জন করেছে বাংলাদেশ।

ডিসেম্বর মাস, বাঙালি তথা বাংলাদেশির স্বাধীনতা অর্জনের মাস।

১৯৭১ সালের ১ ডিসেম্বর বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে বিজয়ের সূচনা হয়। পাকিস্তানের সামরিক কমান্ডাররা অস্ত্র ফেলে মাথা নত করে আত্মসমর্পণের দলিলে সই দিয়ে ইতিহাসের এক কলঙ্কজনক অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি ঘটায় এ ডিসেম্বরেই। বছর ঘুরে প্রতিবারই এ মাস এলেই বাঙালি জাতি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে ইতিহাসের বীর সন্তান অকুতোভয় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের।

১ ডিসেম্বর ১৯৭১

মুক্তিবাহিনী সিলেটের শমসেরনগরে আক্রমণ চালিয়ে টেংরাটিলা ও দুয়ারাবাজার শত্রুমুক্ত করে। একাত্তরের ডিসেম্বর মাস থেকেই মুক্তিপাগল বাঙালি বুঝে নেয় তাদের বিজয় সুনিশ্চিত।

ডিসেম্বরের শুরুতেই মুক্তিযুদ্ধ সারাদেশে সর্বাত্মক রূপ নেয়। ডিসেম্বরের শুরুতেও চলতে থাকে মুক্তিবাহিনীর গেরিলা হামলা। একে একে মুক্ত হতে থাকে দেশের বিভিন্ন জায়গা। মুক্তিযোদ্ধাদের প্রবল আক্রমণের মুখে পাকিস্তানি বাহিনী পিছু হটতে বাধ্য হয়। শত্রুমুক্ত ঘোষণার পরও মুক্তিবাহিনীর অপারেশন চলতে থাকায় পাকি সেনারা সিলেটের গারা, আলীরগাঁও এবং পিরিজপুর থেকে ব্যারাক গুটিয়ে নেয়। তবে রাওয়ালপিন্ডিতে এক মুখপাত্র শেখ মুজিবুর রহমানের বিচার শেষ হয়নি বলে বিবৃতি দেয়।

এই দিনে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী পার্লামেন্টের বক্তৃতায় উপমহাদেশে শান্তি প্রতিষ্ঠার স্বার্থে বাংলাদেশ থেকে পাকিস্তানি সৈন্য অপসারণের জন্য ইয়াহিয়া খানের প্রতি আহ্বান জানান।

এ সময়ও তৎপর ছিল স্বাধীনতাবিরোধীরা।

মহান এ বিজয়ের মাস উদযাপনে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠনের পক্ষ থেকে বিস্তারিত কর্মসূচি নেয়া হয়েছে। বিজয়ের মাসের প্রথম দিনেই বিভিন্ন সংগঠন বিস্তারিত কর্মসূচি পালন করবে। এসব কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে বিজয়ের মাসকে স্বাগত জানিয়ে সমাবেশ, মানববন্ধন, মোমবাতি প্রজ্বলন, বিজয় র‌্যালি, মুক্তিযোদ্ধা কবরস্থানে শ্রদ্ধা নিবেদন ইত্যাদি।