ঢাবির ৮৭ শিক্ষার্থীসহ ১২৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় বহিষ্কৃত ৮৭ জন শিক্ষার্থীসহ ১২৬ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। গতকাল ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম হাসিবুল হক অভিযোগ গঠন করেন। একই সঙ্গে আগামী ৩০ মার্চ সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করেন তিনি।

অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে ২০১৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে শাহবাগ থানায় দায়ের করা মামলার আনুষ্ঠানিকভাবে বিচার শুরু হলো বলে জানান আইনজীবীরা।

যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেনÑ মহিউদ্দিন রানা, আবদুল্লাহ আল মামুন, মোহাম্মদ ইব্রাহিম, মো. রিমন হোসেন, ইশরাক হোসেন রাফি, নাভিদ আনজুম তনয়, এনামুল হক আকাশ, ফারজাদ সোবহান নাফি, তানভির আহমেদ মল্লিক, মো. বায়জিদ, এস এম রিফাত হোসেন, ফারদিন আহমেদ সাব্বির, প্রসেনজিৎ দাস, আজিজুল হাকিম, নাহিদ ইফতেখার, রফিকুল হাসান এছামি, বনি ইসরাইল, মারুফ হোসেন, সাইফুল ইসলাম, খান বাহাদুর, মো. আইয়ুব আলী বাঁধন, মোস্তফা কামাল, হাফিজুর রহমান হাফিজ, অলিপ কুমার বিশ্বাস, মাসুদ রহমান তাজুল, অসীম বিশ্বাস, জাহাঙ্গীর আলম, সাইদুর রহমান, হাসমত আলী, আনোয়ার হোসেন, নুরুল ইসলাম, হোসনে আরা, কাজী মিনহাজুল ইসলাম, রাফসান করিম, আখিনুর রহমান অনিক, নাজমুল হাসান নাঈম, শিহাব হাসান খান, সালমান এফ রহমান, মুহায়মেনুল ইসলাম, সজিব আহমেদ, আবদুর রহমান রমিজ, মাহবুব মামুন ও অন্যান্য। আসামিদের মধ্যে ৮৭ জন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বহিষ্কৃত ছাত্র। অন্যরা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভিন্ন কোচিং সেন্টারের মালিক ও শিক্ষক রয়েছেন।

অভিযুক্তদের মধ্যে ১০০ জন বর্তমানে জামিনে মুক্ত আছেন। অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন আদালতের বিচারক হাসিবুল হক তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ পড়ে শোনালে তারা নিজেদের নিরপরাধ দাবি করেন এবং ন্যায়বিচারের দাবি জানান। এ সময় আদালতে অনুপস্থিত ২৬ জনের বিরুদ্ধেও অভিযোগ গঠন ও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির নির্দেশ দেয় আদালত।

২০১৭ সালে দেশব্যাপী ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা বেড়ে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে ওই বছরের ১৯ অক্টোবর মধ্যরাতে গণমাধ্যম কর্মীদের দেয়া কিছু তথ্যের সূত্র ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ হল ও অমর একুশে হলে অভিযান চালায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

এ সময় গ্রেপ্তার হন আবদুল্লাহ আল মামুন ও মহিউদ্দিন রানা নামের দুই শিক্ষার্থী। তাদের দেয়া তথ্যে পরদিন পরীক্ষার হল থেকে গ্রেপ্তার হয় ভর্তি ইচ্ছুক পরীক্ষার্থী ইশরাক হোসেন রাফি। গ্রেপ্তারকৃতদের তথ্য ও হলের অন্যদের জিজ্ঞাসাবাদে সিআইডি জানতে পারে, প্রশ্নফাঁসের এই ঘটনার সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সমীর, মিজান, আজাদ, ওমেগা কোচিংয়ের তন্ময়, মাইলস্টোন স্কুলের সাবেক ছাত্র সুব্রত জড়িত। এটাও সিআইডি জানতে পারে যে, এরা একটি সংঘবদ্ধ চক্র। দেশব্যাপী এদের নেটওয়ার্ক বিস্তৃত।

এ ঘটনায় ২০১৭ সালের ২০ অক্টোবর শাহবাগ থানায় সিআইডির অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মিনহাজুল ইসলাম মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করেন পুলিশের সাইবার তদন্ত ইউনিটের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার সুমন কুমার দাস। তদন্তকালে আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের পর অন্য আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর তারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে প্রশ্নপত্র ফাঁসের দায় স্বীকার করেন। ওই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে ১২৬ আসামির জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়।

অভিযোগ গঠন হওয়া ১২৬ জনের মধ্যে ১০৪ জনের বিরুদ্ধে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। ওই আসামিরাসহ ১২৬ জনের বিরুদ্ধে পাবলিক পরীক্ষা (অপরাধ) আইনে পৃথক অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। ২০১৯ সালের ২৩ জুন এই অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।

আরও খবর
ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা : অর্থনীতিবিদরা বলছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উদারনীতির ফল
ইসি নিয়োগে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে কাউন্সিল গঠনের প্রস্তাব গণতন্ত্রী পার্টির
লাকীর বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে নেমে দুর্নীতির ‘প্রমাণ’ পেয়েছে দুদক
ব্যাংক কর্মকর্তা ও ডাক্তারকে পুলিশে দিল হাইকোর্ট
অভ্যন্তরীণ অসন্তোষ আর অসঙ্গতিতে ৭৪ বছরে পদার্পণ ছাত্রলীগের
ইসি নিয়োগে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে কাউন্সিল গঠনের প্রস্তাব গণতন্ত্রী পার্টির
মিথ্যা প্রতিশ্রুতি কখনও দেইনি আইভী
আমিই বিএনপি, আমিই নারায়ণগঞ্জ তৈমুর
এবার বিএনপির উপদেষ্টার পদও হারালেন তৈমুর
প্রতিবেদন জমা, ইঞ্জিনে ত্রুটির কারণে লঞ্চে আগুনের সূত্রপাত

মঙ্গলবার, ০৪ জানুয়ারী ২০২২ , ২০ পৌষ ১৪২৮ ৩০ জমাদিউল আউয়াল

প্রশ্নফাঁসের মামলায়

ঢাবির ৮৭ শিক্ষার্থীসহ ১২৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন

আদালত বার্তা পরিবেশক

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় বহিষ্কৃত ৮৭ জন শিক্ষার্থীসহ ১২৬ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। গতকাল ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম হাসিবুল হক অভিযোগ গঠন করেন। একই সঙ্গে আগামী ৩০ মার্চ সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করেন তিনি।

অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে ২০১৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে শাহবাগ থানায় দায়ের করা মামলার আনুষ্ঠানিকভাবে বিচার শুরু হলো বলে জানান আইনজীবীরা।

যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেনÑ মহিউদ্দিন রানা, আবদুল্লাহ আল মামুন, মোহাম্মদ ইব্রাহিম, মো. রিমন হোসেন, ইশরাক হোসেন রাফি, নাভিদ আনজুম তনয়, এনামুল হক আকাশ, ফারজাদ সোবহান নাফি, তানভির আহমেদ মল্লিক, মো. বায়জিদ, এস এম রিফাত হোসেন, ফারদিন আহমেদ সাব্বির, প্রসেনজিৎ দাস, আজিজুল হাকিম, নাহিদ ইফতেখার, রফিকুল হাসান এছামি, বনি ইসরাইল, মারুফ হোসেন, সাইফুল ইসলাম, খান বাহাদুর, মো. আইয়ুব আলী বাঁধন, মোস্তফা কামাল, হাফিজুর রহমান হাফিজ, অলিপ কুমার বিশ্বাস, মাসুদ রহমান তাজুল, অসীম বিশ্বাস, জাহাঙ্গীর আলম, সাইদুর রহমান, হাসমত আলী, আনোয়ার হোসেন, নুরুল ইসলাম, হোসনে আরা, কাজী মিনহাজুল ইসলাম, রাফসান করিম, আখিনুর রহমান অনিক, নাজমুল হাসান নাঈম, শিহাব হাসান খান, সালমান এফ রহমান, মুহায়মেনুল ইসলাম, সজিব আহমেদ, আবদুর রহমান রমিজ, মাহবুব মামুন ও অন্যান্য। আসামিদের মধ্যে ৮৭ জন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বহিষ্কৃত ছাত্র। অন্যরা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভিন্ন কোচিং সেন্টারের মালিক ও শিক্ষক রয়েছেন।

অভিযুক্তদের মধ্যে ১০০ জন বর্তমানে জামিনে মুক্ত আছেন। অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন আদালতের বিচারক হাসিবুল হক তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ পড়ে শোনালে তারা নিজেদের নিরপরাধ দাবি করেন এবং ন্যায়বিচারের দাবি জানান। এ সময় আদালতে অনুপস্থিত ২৬ জনের বিরুদ্ধেও অভিযোগ গঠন ও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির নির্দেশ দেয় আদালত।

২০১৭ সালে দেশব্যাপী ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা বেড়ে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে ওই বছরের ১৯ অক্টোবর মধ্যরাতে গণমাধ্যম কর্মীদের দেয়া কিছু তথ্যের সূত্র ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ হল ও অমর একুশে হলে অভিযান চালায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

এ সময় গ্রেপ্তার হন আবদুল্লাহ আল মামুন ও মহিউদ্দিন রানা নামের দুই শিক্ষার্থী। তাদের দেয়া তথ্যে পরদিন পরীক্ষার হল থেকে গ্রেপ্তার হয় ভর্তি ইচ্ছুক পরীক্ষার্থী ইশরাক হোসেন রাফি। গ্রেপ্তারকৃতদের তথ্য ও হলের অন্যদের জিজ্ঞাসাবাদে সিআইডি জানতে পারে, প্রশ্নফাঁসের এই ঘটনার সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সমীর, মিজান, আজাদ, ওমেগা কোচিংয়ের তন্ময়, মাইলস্টোন স্কুলের সাবেক ছাত্র সুব্রত জড়িত। এটাও সিআইডি জানতে পারে যে, এরা একটি সংঘবদ্ধ চক্র। দেশব্যাপী এদের নেটওয়ার্ক বিস্তৃত।

এ ঘটনায় ২০১৭ সালের ২০ অক্টোবর শাহবাগ থানায় সিআইডির অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মিনহাজুল ইসলাম মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করেন পুলিশের সাইবার তদন্ত ইউনিটের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার সুমন কুমার দাস। তদন্তকালে আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের পর অন্য আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর তারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে প্রশ্নপত্র ফাঁসের দায় স্বীকার করেন। ওই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে ১২৬ আসামির জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়।

অভিযোগ গঠন হওয়া ১২৬ জনের মধ্যে ১০৪ জনের বিরুদ্ধে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। ওই আসামিরাসহ ১২৬ জনের বিরুদ্ধে পাবলিক পরীক্ষা (অপরাধ) আইনে পৃথক অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। ২০১৯ সালের ২৩ জুন এই অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।