পাচার হওয়া টাকা ফেরত আনার সুযোগ কালো টাকার মালিকদের নয় এনবিআর চেয়ারম্যান

বাজেটে পাচারের টাকা ফেরত আনার যে সুযোগ দেয়া হয়েছে, তা শুধুই বৈধ উপার্জনকারীদের জন্য। প্রকৃত অর্থে কালো টাকার মালিকদের এই সুযোগ দেয়া হয়নি। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম এসব কথা বলেছেন। গতকাল সেগুনবাগিচায় রাজস্ব ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে পাচারের অর্থ ফেরত আনার সুযোগ দেয়ার বিষয়ে ব্যাখ্যা দেন এনবিআর চেয়ারম্যান। একইসঙ্গে গত অর্থবছরের রাজস্ব পরিস্থিতি এবং চলতি বছরের আদায় বাড়ানোর কার্যক্রম তুলে ধরেন তিনি। এ সময় রাজস্ব বোর্ডের সিনিয়র সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম বলেন, ‘বাজেটে পাচারের টাকা ফেরত আনার সুযোগ দেয়া নিয়ে পত্রপত্রিকায় অনেক সমালোচনা হয়েছে। সেজন্য এর একটা ব্যাখ্যা দেয়া প্রয়োজন। কেউ যদি বিদেশে টাকা জমা রাখেন বা কোন বৈধ আয় থাকে তাহলে সেই টাকা তিনি দেশে আনলে লাভবান হবেন। আমরা তাদের জন্য এ সুযোগ রেখেছি। এজন্য তাদের কোন প্রশ্ন করা হবে না। কেউ তার আয়ের উৎসব সম্পর্কে জানতে চাইবে না। এই টাকা দেশে এলে অর্থনীতির মূল স্রোতের সঙ্গে যুক্ত হবে। ফলে দেশে বিনিয়োগ বাড়বে এবং রাজস্ব আদায়ে গতি বাড়বে। অর্থনীতিও গতিশীল হবে।’

এই সুযোগের আওতায় কত টাকা আসতে পারে বলে মনে করেন, এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আগাম কিছু বলা যাচ্ছে না। তবে আমরা ভালো কিছু প্রত্যাশা করছি। এমন সুযোগ দিয়ে পৃথিবীর অনেক দেশ ভালো ফল পেয়েছে। আমাদের উদ্দেশ্য ভালো। কিন্তু মিডিয়া যেভাবে সমালোচনা করছে তাতে অনেকে এগিয়ে আসতে ভয় পাচ্ছে। এ বিষয়ে ইতিবাচক প্রচারের জন্য আমরা মিডিয়াকে অনুরোধ করছি।’

এক প্রশ্নের জবাবে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেয়া হয়নি। যারা বৈধ উপায়ে উপার্জন করেছেন কিন্তু কোন কারণে প্রদর্শন করা হয়নি তাদের জন্য সুযোগটি দেয়া হয়েছে। কালো টাকার মালিকের সংখ্যা কম। যারা বৈধভাবে আয় করে তাদের সংখ্যাই বেশি। সেজন্য বৈধভাবে উপার্জনকারীদের জন্য বাজেটে এ সুযোগ রাখা হয়েছে।’ এ প্রসঙ্গে রাজস্ব বোর্ডের সদস্য (আয়কর নীতি) সামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আসলে এটাকে ব্ল্যাক মানি বা কালো টাকা বলা যায় না। অনেকের অপ্রদর্শিত আয় আছে। তিনি দেশের বাইরে টাকা রেখেছেন। কিন্তু কোন কারণে আয়কর রিটার্নে তা দেখাতে পারেননি। তাদের জন্য বাজেটে সুযোগ দেয়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে অর্থ পাচারকারীদের জন্য সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করা হয়েছে। ইন্দোনেশিয়া এই সুযোগ দেয়ায় প্রায় ৬৪ ট্রিলিয়ন ডলার দেশে এসেছে। আমরা আশা করছি, ভালো কিছু পাব। অর্থ পাচারকারীদের জন্য দেয়া এ সুযোগ সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দেশে যে টাকা আসবে তা অর্থনীতির মূল ধারায় যুক্ত হবে। ফলে দেশের অর্থনৈতিক কর্মকা- আরও গতিশীল হবে।

সোমবার, ০৮ আগস্ট ২০২২ , ২৪ শ্রাবণ ১৪২৯ ৯ মহররম ১৪৪৪

পাচার হওয়া টাকা ফেরত আনার সুযোগ কালো টাকার মালিকদের নয় এনবিআর চেয়ারম্যান

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

বাজেটে পাচারের টাকা ফেরত আনার যে সুযোগ দেয়া হয়েছে, তা শুধুই বৈধ উপার্জনকারীদের জন্য। প্রকৃত অর্থে কালো টাকার মালিকদের এই সুযোগ দেয়া হয়নি। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম এসব কথা বলেছেন। গতকাল সেগুনবাগিচায় রাজস্ব ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে পাচারের অর্থ ফেরত আনার সুযোগ দেয়ার বিষয়ে ব্যাখ্যা দেন এনবিআর চেয়ারম্যান। একইসঙ্গে গত অর্থবছরের রাজস্ব পরিস্থিতি এবং চলতি বছরের আদায় বাড়ানোর কার্যক্রম তুলে ধরেন তিনি। এ সময় রাজস্ব বোর্ডের সিনিয়র সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম বলেন, ‘বাজেটে পাচারের টাকা ফেরত আনার সুযোগ দেয়া নিয়ে পত্রপত্রিকায় অনেক সমালোচনা হয়েছে। সেজন্য এর একটা ব্যাখ্যা দেয়া প্রয়োজন। কেউ যদি বিদেশে টাকা জমা রাখেন বা কোন বৈধ আয় থাকে তাহলে সেই টাকা তিনি দেশে আনলে লাভবান হবেন। আমরা তাদের জন্য এ সুযোগ রেখেছি। এজন্য তাদের কোন প্রশ্ন করা হবে না। কেউ তার আয়ের উৎসব সম্পর্কে জানতে চাইবে না। এই টাকা দেশে এলে অর্থনীতির মূল স্রোতের সঙ্গে যুক্ত হবে। ফলে দেশে বিনিয়োগ বাড়বে এবং রাজস্ব আদায়ে গতি বাড়বে। অর্থনীতিও গতিশীল হবে।’

এই সুযোগের আওতায় কত টাকা আসতে পারে বলে মনে করেন, এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আগাম কিছু বলা যাচ্ছে না। তবে আমরা ভালো কিছু প্রত্যাশা করছি। এমন সুযোগ দিয়ে পৃথিবীর অনেক দেশ ভালো ফল পেয়েছে। আমাদের উদ্দেশ্য ভালো। কিন্তু মিডিয়া যেভাবে সমালোচনা করছে তাতে অনেকে এগিয়ে আসতে ভয় পাচ্ছে। এ বিষয়ে ইতিবাচক প্রচারের জন্য আমরা মিডিয়াকে অনুরোধ করছি।’

এক প্রশ্নের জবাবে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেয়া হয়নি। যারা বৈধ উপায়ে উপার্জন করেছেন কিন্তু কোন কারণে প্রদর্শন করা হয়নি তাদের জন্য সুযোগটি দেয়া হয়েছে। কালো টাকার মালিকের সংখ্যা কম। যারা বৈধভাবে আয় করে তাদের সংখ্যাই বেশি। সেজন্য বৈধভাবে উপার্জনকারীদের জন্য বাজেটে এ সুযোগ রাখা হয়েছে।’ এ প্রসঙ্গে রাজস্ব বোর্ডের সদস্য (আয়কর নীতি) সামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আসলে এটাকে ব্ল্যাক মানি বা কালো টাকা বলা যায় না। অনেকের অপ্রদর্শিত আয় আছে। তিনি দেশের বাইরে টাকা রেখেছেন। কিন্তু কোন কারণে আয়কর রিটার্নে তা দেখাতে পারেননি। তাদের জন্য বাজেটে সুযোগ দেয়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে অর্থ পাচারকারীদের জন্য সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করা হয়েছে। ইন্দোনেশিয়া এই সুযোগ দেয়ায় প্রায় ৬৪ ট্রিলিয়ন ডলার দেশে এসেছে। আমরা আশা করছি, ভালো কিছু পাব। অর্থ পাচারকারীদের জন্য দেয়া এ সুযোগ সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দেশে যে টাকা আসবে তা অর্থনীতির মূল ধারায় যুক্ত হবে। ফলে দেশের অর্থনৈতিক কর্মকা- আরও গতিশীল হবে।