ইরানের জালে ইংল্যান্ডের গোল উৎসব

বিশ্বকাপ ফুটবলে উড়ন্ত সূচনা করেছে অন্যতম ফেবারিট ইংল্যান্ড। গতকাল প্রতিযোগিতার দ্বিতীয় দিনের প্রথম ম্যাচে ইংল্যান্ড ৬-২ গোলে হারিয়ে দেয় এশিয়ার দেশ ইরানকে। ম্যাচের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দাপটের সঙ্গে খেলে বড় ব্যবধানে জয়ী হয় ইংলিশরা। ইংলিশরা কৌশলগতভাবে অনেক ভালো খেলেই ম্যাচ জিতে নেয়। নিজেদের প্রথম ম্যাচে বড় ব্যবধানে জয়ী হওয়ায় ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় রাউন্ডে যাওয়ার রাস্তা অনেকটাই সহজ হয়ে গেছে।

প্রথম ম্যাচ বলেই হয়তো ইংলিশ কোচ সাউদগেট অপেক্ষাকৃত রক্ষণাত্মক কৌশলে একাদশ গঠন করেন। তিনি ৫ জন ডিফেন্ডার নেন একাদশে। একমাত্র স্ট্রাইকার হিসেবে ছিলেন হ্যারি কেইন। উইঙ্গার হিসেবে ছিলেন সাকা এবং রাহিম স্টার্লিং। ইরান স্বাভাবিকভাবেই দল গড়ে রক্ষণকে প্রাধান্য দিয়ে। দল বড় ব্যবধানে জিতলেও কোন গোল করতে পারেননি কেইন। ইংল্যান্ড সহজে বড় ব্যবধানে জিতে বুঝিয়ে দিয়েছে শক্তির বিচারে তারা কতটা এগিয়ে আছে। ফিফা র‌্যাংকিং এবং শক্তির বিচারে বেশ এগিয়ে থাকা ইংল্যান্ড শুরু থেকেই ইরানের ওপর প্রভাব বিস্তার করে। ইংল্যান্ড তৃতীয় মিনিটে কর্নার কিক আদায় করে নেয়। কর্নার কিক থেকে পেনাল্টি বক্সের মধ্যে সৃষ্ট জটলায় হ্যারি ম্যাগুইর পড়ে গিয়ে পেনাল্টির দাবি জানান। যদিও রেফারি সে দাবি নাকচ করে দেন। ৯ মিনিটে কেইনের ক্রস প্রতিহত করতে গিয়ে গোলরক্ষক আলীরেজার সঙ্গে সংঘর্ষ হয় ডিফেন্ডার মাজিদ হোসেইনির। এতে আঘাত পান গোলরক্ষক। প্রায় ছয় মিনিট চিকিৎসা নিয়ে তিনি আবার খেলায় ফেরেন। তবে তিনি বেশিক্ষণ খেলা চালিয়ে যেতে পারেননি। দুই মিনিটের মধ্যেই মাঠে শুয়ে পড়েন এবং গোলরক্ষক বদল করার সংকেত দেন। তার জায়গায় বদলি গোলরক্ষক হিসেবে মাঠে নামানো হয় হোসেইন হোসেইনিকে। ইংল্যান্ড ঠিক ৩০ মিনিটে দারুন একটি সুযোগ সৃষ্টি করে। সাকার ক্রস থেকে মাউন্টের মারা ভলি সাইড নেটে লাগলে সুযোগের অপচয় ঘটে তাদের। ৩২ মিনিটে কর্নার কিক থেকে জন ম্যাগুইরের হেড ক্রস বারে লেগে প্রতিহত হয়। ৩৫ মিনিটে এগিয়ে যায় ইংল্যান্ড। বাম দিক থেকে লুক শ’র ক্রসে মাথা লাগিয়ে ইংল্যান্ডকে এগিয়ে দেন জুড বেলিংহ্যাম। ৪৩ মিনিটে কর্নার কিক থেকে উড়ে আসা বল ম্যাগুইর হেডে গোলমুখে ফেললে সেটি ভলির সাহায্যে জালে পাঠিয়ে ইংল্যান্ডকে ২-০ গোলে এগিয়ে দেন বুকায়ো সাকা। প্রথমার্ধের ইনজুরি টাইমের প্রথম মিনিটে ইংল্যান্ডকে ৩-০ গোলে এগিয়ে দেন স্টার্লিং। কেইনের ক্রস থেকে ভলির সাহায্যে তৃতীয় গোলটি করেন স্টার্লিং।

দ্বিতীয়ার্ধেও ইংল্যান্ডের প্রাধান্য অব্যাহত থাকে এবং ৬২ মিনিটে সাকা গোলের হালি পূর্ণ করেন। স্টার্লিংয়ের পাস নিয়ন্ত্রণে নিয়ে দুই জন ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে প্লেসিং শটে গোল করেন সাকা। অবশ্য এ গোলের চার মিনিটের মধ্যে ইরান একটি গোল পরিশোধ করে। একটি পরিকল্পিত আক্রমণ থেকে গোলটি পরিশোধ করেন মেহেদী তারেমি। ৭০ মিনিটে ইংল্যান্ড একসঙ্গে চার জন খেলোয়াড় পরিবর্তন করে। ম্যাগুইর, সাকা, ম্যাসন ও স্টার্লিংয়ের বদলে মাঠে নামানো হয় এরিক ডায়ার, জ্যাক গ্রেলিস, ফিল ফোডেন এবং মার্কাস র‌্যাসফোর্ডকে। মাঠে নামার এক মিনিটের মধ্যেই গোল করেন র‌্যাসফোর্ড। নির্ধারিত ৯০ মিনিটের ১৫ মিনিট বাকি থাকতে কেইনকে তুলে নামানো হয় উইলসনকে। জয় নিশ্চিত হয়ে যাওয়ায় কেইনকে মাঠে রেখে ইনজুরির কোন ঝুঁকি নেননি কোচ। ৯০তম মিনিটে র‌্যাসফোর্ডের কাটব্যাক থেকে ষষ্ঠ গোল করেন গ্রেলিস। ইনজুরি টাইমে পেনাল্টি পায় ইরান এবং সেটি থেকে গোল করেন তারেমি।

মঙ্গলবার, ২২ নভেম্বর ২০২২ , ০৭ অগ্রহায়ণ ১৪২৯, ২৬ রবিউস সানি ১৪৪৪

ইরানের জালে ইংল্যান্ডের গোল উৎসব

ক্রীড়া বার্তা পরিবেশক

image

ম্যাসনকে নিয়ে জুডির গোল উদযাপন

বিশ্বকাপ ফুটবলে উড়ন্ত সূচনা করেছে অন্যতম ফেবারিট ইংল্যান্ড। গতকাল প্রতিযোগিতার দ্বিতীয় দিনের প্রথম ম্যাচে ইংল্যান্ড ৬-২ গোলে হারিয়ে দেয় এশিয়ার দেশ ইরানকে। ম্যাচের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দাপটের সঙ্গে খেলে বড় ব্যবধানে জয়ী হয় ইংলিশরা। ইংলিশরা কৌশলগতভাবে অনেক ভালো খেলেই ম্যাচ জিতে নেয়। নিজেদের প্রথম ম্যাচে বড় ব্যবধানে জয়ী হওয়ায় ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় রাউন্ডে যাওয়ার রাস্তা অনেকটাই সহজ হয়ে গেছে।

প্রথম ম্যাচ বলেই হয়তো ইংলিশ কোচ সাউদগেট অপেক্ষাকৃত রক্ষণাত্মক কৌশলে একাদশ গঠন করেন। তিনি ৫ জন ডিফেন্ডার নেন একাদশে। একমাত্র স্ট্রাইকার হিসেবে ছিলেন হ্যারি কেইন। উইঙ্গার হিসেবে ছিলেন সাকা এবং রাহিম স্টার্লিং। ইরান স্বাভাবিকভাবেই দল গড়ে রক্ষণকে প্রাধান্য দিয়ে। দল বড় ব্যবধানে জিতলেও কোন গোল করতে পারেননি কেইন। ইংল্যান্ড সহজে বড় ব্যবধানে জিতে বুঝিয়ে দিয়েছে শক্তির বিচারে তারা কতটা এগিয়ে আছে। ফিফা র‌্যাংকিং এবং শক্তির বিচারে বেশ এগিয়ে থাকা ইংল্যান্ড শুরু থেকেই ইরানের ওপর প্রভাব বিস্তার করে। ইংল্যান্ড তৃতীয় মিনিটে কর্নার কিক আদায় করে নেয়। কর্নার কিক থেকে পেনাল্টি বক্সের মধ্যে সৃষ্ট জটলায় হ্যারি ম্যাগুইর পড়ে গিয়ে পেনাল্টির দাবি জানান। যদিও রেফারি সে দাবি নাকচ করে দেন। ৯ মিনিটে কেইনের ক্রস প্রতিহত করতে গিয়ে গোলরক্ষক আলীরেজার সঙ্গে সংঘর্ষ হয় ডিফেন্ডার মাজিদ হোসেইনির। এতে আঘাত পান গোলরক্ষক। প্রায় ছয় মিনিট চিকিৎসা নিয়ে তিনি আবার খেলায় ফেরেন। তবে তিনি বেশিক্ষণ খেলা চালিয়ে যেতে পারেননি। দুই মিনিটের মধ্যেই মাঠে শুয়ে পড়েন এবং গোলরক্ষক বদল করার সংকেত দেন। তার জায়গায় বদলি গোলরক্ষক হিসেবে মাঠে নামানো হয় হোসেইন হোসেইনিকে। ইংল্যান্ড ঠিক ৩০ মিনিটে দারুন একটি সুযোগ সৃষ্টি করে। সাকার ক্রস থেকে মাউন্টের মারা ভলি সাইড নেটে লাগলে সুযোগের অপচয় ঘটে তাদের। ৩২ মিনিটে কর্নার কিক থেকে জন ম্যাগুইরের হেড ক্রস বারে লেগে প্রতিহত হয়। ৩৫ মিনিটে এগিয়ে যায় ইংল্যান্ড। বাম দিক থেকে লুক শ’র ক্রসে মাথা লাগিয়ে ইংল্যান্ডকে এগিয়ে দেন জুড বেলিংহ্যাম। ৪৩ মিনিটে কর্নার কিক থেকে উড়ে আসা বল ম্যাগুইর হেডে গোলমুখে ফেললে সেটি ভলির সাহায্যে জালে পাঠিয়ে ইংল্যান্ডকে ২-০ গোলে এগিয়ে দেন বুকায়ো সাকা। প্রথমার্ধের ইনজুরি টাইমের প্রথম মিনিটে ইংল্যান্ডকে ৩-০ গোলে এগিয়ে দেন স্টার্লিং। কেইনের ক্রস থেকে ভলির সাহায্যে তৃতীয় গোলটি করেন স্টার্লিং।

দ্বিতীয়ার্ধেও ইংল্যান্ডের প্রাধান্য অব্যাহত থাকে এবং ৬২ মিনিটে সাকা গোলের হালি পূর্ণ করেন। স্টার্লিংয়ের পাস নিয়ন্ত্রণে নিয়ে দুই জন ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে প্লেসিং শটে গোল করেন সাকা। অবশ্য এ গোলের চার মিনিটের মধ্যে ইরান একটি গোল পরিশোধ করে। একটি পরিকল্পিত আক্রমণ থেকে গোলটি পরিশোধ করেন মেহেদী তারেমি। ৭০ মিনিটে ইংল্যান্ড একসঙ্গে চার জন খেলোয়াড় পরিবর্তন করে। ম্যাগুইর, সাকা, ম্যাসন ও স্টার্লিংয়ের বদলে মাঠে নামানো হয় এরিক ডায়ার, জ্যাক গ্রেলিস, ফিল ফোডেন এবং মার্কাস র‌্যাসফোর্ডকে। মাঠে নামার এক মিনিটের মধ্যেই গোল করেন র‌্যাসফোর্ড। নির্ধারিত ৯০ মিনিটের ১৫ মিনিট বাকি থাকতে কেইনকে তুলে নামানো হয় উইলসনকে। জয় নিশ্চিত হয়ে যাওয়ায় কেইনকে মাঠে রেখে ইনজুরির কোন ঝুঁকি নেননি কোচ। ৯০তম মিনিটে র‌্যাসফোর্ডের কাটব্যাক থেকে ষষ্ঠ গোল করেন গ্রেলিস। ইনজুরি টাইমে পেনাল্টি পায় ইরান এবং সেটি থেকে গোল করেন তারেমি।