বড়পুকুরিয়ার সাত সাবেক এমডির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র

বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি থেকে কোন কয়লা চুরি হয়নি; ‘সিস্টেম লসের’ কারণে কয়লার ঘাটতির দাবি বড় পুকুরিয়া কয়লাখনি কোম্পানি লিমিটেডের (বিসিএমসিএল) কর্মকর্তাদের থাকলেও সেই দাবি প্রমাণিত হয়নি দুর্নীতি দমন কমিশনের তদন্তে। কয়লা চুরির মাধ্যমে পরস্পর যোগসাজশে ১ লাখ ৪৩ হাজার ৭২৭ দশমিক ৯২ মেট্রিক টন কয়লা আত্মসাৎ করা হয়েছে, যার বাজারমূল্য ২৪৩ কোটি ২৮ লাখ ৮২ হাজার টাকা। এই অভিযোগে বিসিএমসিএলের সাবেক ৭ ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ (এমডি) ২৩ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দিয়েছে দুদক। গতকাল এ অভিযোগপত্র জমা দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও দুদকের উপপরিচালক সামছুল আলম।

বিসিএমসিএলের কয়লা ঘাটতির বিষয়টি নজরে এলে গত বছরের ২৪ জুলাই ১৯ জনকে আসামি করে দিনাজপুরের পার্বতীপুর মডেল থানায় মামলা করেন বিসিএমসিএলের ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) মোহাম্মদ আনিছুর রহমান। মামলার তদন্তের দায়িত্ব পায় দুর্নীতি দমন কমিশন দুদক। দীর্ঘ তদন্ত শেষে প্রতিবেদন পাওয়ার পর কমিশন অভিযোগপত্র অনুমোদন দেয়। অভিযোগপত্রে এজাহারে থাকা ৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের আসামি করা হয়নি। আবার তদন্তে আরও ৯ জনের সম্পৃক্ততা পাওয়ায় তাদের আসামি করা হয়েছে।

যাদের আসামি করা হয়েছে তারা হলেন প্রতিষ্ঠানটির সাবেক ৭ এমডি মো. মাহবুবুর রহমান, মো. আবদুল আজিজ খান, প্রকৌশলী খুরশীদুল হাসান, প্রকৌশলী কামরুজ্জামান, মো. আমিনুজ্জামান, প্রকৌশলী এস এম নুরুল আওরঙ্গজেব ও প্রকৌশলী হাবিব উদ্দিন আহাম্মদ; সাবেক জিএম (প্রশাসন) মো. শরিফুল আলম ও আবুল কাসেম প্রধানীয়া, সাবেক জিএম (মাইন অপারেশন) আবু তাহের মো. নুর-উজ-জামান চৌধুরী, ব্যবস্থাপক (নিরাপত্তা) মাসুদুর রহমান হাওলাদার, ব্যবস্থাপক (মেনটেন্যান্স) মো. আরিফুর রহমান, ব্যবস্থাপক (নিরাপত্তা) সৈয়দ ইমান হাসান, উপব্যবস্থাপক (কোল হ্যান্ডলিং ম্যানেজমেন্ট) মুহাম্মদ খলিলুর রহমান, উপব্যবস্থাপক (মেনটেন্যান্স অ্যান্ড অপারেশন) মো. মোর্শেদুজ্জামান, উপব্যবস্থাপক প্রোডাকশন ম্যানেজমেন্ট মো. হাবিবুর রহমান, উপব্যবস্থাপক (মাইন ডেভেলপমেন্ট) মো. জাহেদুর রহমান, সহকারী ব্যবস্থাপক (ভেন্টিলেশন ম্যানেজমেন্ট) সত্যেন্দ্র নাথ বর্মন, সহকারী ব্যবস্থাপক (পিএম) মো. মনিরুজ্জামান, ব্যবস্থাপক (কোল হ্যান্ডলিং ম্যানেজমেন্ট ) মো. শোয়েবুর রহমান, উপমহাব্যবস্থাপক (স্টোর ডিপার্টমেন্ট) এ কে এম খালেদুল ইসলাম, ব্যবস্থাপক (প্রোডাকশন ম্যানেজমেন্ট) অশোক কুমার হালদার এবং উপমহাব্যবস্থাপক (মাইন প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট) মো. জোবায়ের আলী।

এজাহারে আসামি করা হলেও তদন্তে অব্যাহতি পেয়েছেন ব্যবস্থাপক (এক্সপ্লোরেশন) মো. মোশারফ হোসেন সরকার, ব্যবস্থাপক (ডিজাইন, কনস্ট্রাকশন অ্যান্ড মেনইটেন্যান্স) জাহিদুল ইসলাম, উপব্যবস্থাপক (সেফটি ম্যানেজমেন্ট) মো. একরামুল হক, সাবেক মহাব্যবস্থাপক (অর্থ ও হিসাব) মো. আবদুল মান্নান পাটওয়ারী ও মহাব্যবস্থাপক (অর্থ ও হিসাব, চলতি দায়িত্ব) গোপাল চন্দ্র সাহা।

মামলার তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মামলা তদন্তের সময় ঘটনাস্থল পরিদর্শন, জব্দকৃত ও সংগৃহীত রেকর্ডপত্র এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বক্তব্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, খনি থেকে কয়লা উত্তোলনের জন্য একটি কনসোর্টিয়ামের সঙ্গে চুক্তি আছে। খনি থেকে উত্তোলিত কয়লাখনি কর্তৃপক্ষের যৌথ তত্ত্বাবধানে থাকা স্কেলে পরিমাপের জন্য কোল মাইনিং কোম্পানির কাছে সরবরাহ করা হয়। গৃহীত কয়লার প্রতিদিনের নমুনা সংগ্রহ করে ল্যাব পরীক্ষার মাধ্যমে কয়লার আর্দ্রতার পরিমাণ নিরূপণ করা হয়। আর্দ্রতা (আনুমানিক ৪.৯ শতাংশ) বাদ দিয়ে কনসোর্টিয়ামের সরবরাহ করা কয়লার পরিমাণ নির্ধারিত হয়। অর্থাৎ ১০০ মেট্রিক টন কয়লা সরবরাহ করা হলে তা থেকে আর্দ্রতার পরিমাণ ৪ দশমিক ৯ শতাংশ বাদ দিয়ে ৯৫ দশমিক ১ শতাংশ কয়লা পাওয়ার বিষয়টি নথিভুক্ত করা হয়। সে অনুসারে কনসোর্টিয়ামকে উত্তোলনের টাকা পরিশোধ করা হয়। এ ছাড়া বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানির ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট থেকে পাওয়া কয়লাকেও উৎপাদিত কয়লা হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে।

এসব কয়লা বিসিএমসিএলের সারফেস সাইলো বা কোল ইয়ার্ডে সংরক্ষণ করা হয়। সেখান থেকে পরিমাপ করে সরাসরি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে সরবরাহ করা হয়। এছাড়া স্থানীয় ক্রেতাদের কাছেও বিক্রি করা হয়। স্থানীয় ক্রেতাদের কাছে বিক্রির সময় বিসিএমসিএলের একক তত্ত্বাবধানে থাকা ওজন স্কেলে পরিমাপের মাধ্যমে বিক্রি করা হয়।

বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের কয়লা উপাদান, বিক্রি, কোম্পানির নিজস্ব ব্যবহার এবং মজুদের মাসওয়ারি বিবরণ পর্যালোচনা করে দুদক দেখেছে, উৎপাদনের শুরুতে অল্প পরিসরে কয়লা স্থানীয় ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করা হয়েছে। তবে ২০০৬ সালের জানুয়ারি থেকে নিয়মিতভাবে স্থানীয় ক্রেতাদের কাছে বিক্রি শুরু হয়। দুদক বলছে, বিসিএমসিএলের কোল ইয়ার্ড ও সারফেস সাইলো সীমানাপ্রাচীর দ্বারা সুরক্ষিত। বিদ্যুৎকেন্দ্র সরবরাহের সময় সারফেস সাইলোর কনভেয়ার বেল্টের মাধ্যমে সরবরাহ করা হয়। সেখানে কয়লা কম-বেশি হওয়ার সুযোগ নেই।

অপর দিকে স্থানীয়ভাবে বিক্রির ক্ষেত্রে কোল ইয়ার্ড থেকে কয়লা সরবরাহ করা হয়। স্থানীয়ভাবে বিক্রির ক্ষেত্রে অর্থ ও হিসাব বিভাগ কর্তৃক ইস্যুকৃত ডেলিভারি অর্ডারের (ডিও) আলোকে ক্রেতারা ট্রাক নিয়ে গেট হয়ে কোল ইয়ার্ডে প্রবেশ করেন এবং কয়লা বোঝাই করে বের হয়ে যান। এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রগুলোতে দায়িত্বরত লোকজনের যোগসাজশে পরিমাণের চেয়ে বেশি কয়লা সরবরাহের মাধ্যমে আত্মসাতের সুযোগ রয়েছে। তদন্তে দুদক দেখেছে, উৎপাদিত কয়লা স্থানীয় ক্রেতাদের কাছে বিক্রির শুরু থেকে এই আত্মসাতের ঘটনা শুরু হয়। সব তথ্যপ্রমাণে তারা দেখেছে, ২০০৬ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যেই এই আত্মসাতের ঘটনা ঘটেছে।

সোমবার, ২২ জুলাই ২০১৯ , ৭ শ্রাবন ১৪২৫, ১৮ জিলকদ ১৪৪০

কয়লাখনি দুর্নীতি

বড়পুকুরিয়ার সাত সাবেক এমডির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি থেকে কোন কয়লা চুরি হয়নি; ‘সিস্টেম লসের’ কারণে কয়লার ঘাটতির দাবি বড় পুকুরিয়া কয়লাখনি কোম্পানি লিমিটেডের (বিসিএমসিএল) কর্মকর্তাদের থাকলেও সেই দাবি প্রমাণিত হয়নি দুর্নীতি দমন কমিশনের তদন্তে। কয়লা চুরির মাধ্যমে পরস্পর যোগসাজশে ১ লাখ ৪৩ হাজার ৭২৭ দশমিক ৯২ মেট্রিক টন কয়লা আত্মসাৎ করা হয়েছে, যার বাজারমূল্য ২৪৩ কোটি ২৮ লাখ ৮২ হাজার টাকা। এই অভিযোগে বিসিএমসিএলের সাবেক ৭ ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ (এমডি) ২৩ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দিয়েছে দুদক। গতকাল এ অভিযোগপত্র জমা দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও দুদকের উপপরিচালক সামছুল আলম।

বিসিএমসিএলের কয়লা ঘাটতির বিষয়টি নজরে এলে গত বছরের ২৪ জুলাই ১৯ জনকে আসামি করে দিনাজপুরের পার্বতীপুর মডেল থানায় মামলা করেন বিসিএমসিএলের ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) মোহাম্মদ আনিছুর রহমান। মামলার তদন্তের দায়িত্ব পায় দুর্নীতি দমন কমিশন দুদক। দীর্ঘ তদন্ত শেষে প্রতিবেদন পাওয়ার পর কমিশন অভিযোগপত্র অনুমোদন দেয়। অভিযোগপত্রে এজাহারে থাকা ৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের আসামি করা হয়নি। আবার তদন্তে আরও ৯ জনের সম্পৃক্ততা পাওয়ায় তাদের আসামি করা হয়েছে।

যাদের আসামি করা হয়েছে তারা হলেন প্রতিষ্ঠানটির সাবেক ৭ এমডি মো. মাহবুবুর রহমান, মো. আবদুল আজিজ খান, প্রকৌশলী খুরশীদুল হাসান, প্রকৌশলী কামরুজ্জামান, মো. আমিনুজ্জামান, প্রকৌশলী এস এম নুরুল আওরঙ্গজেব ও প্রকৌশলী হাবিব উদ্দিন আহাম্মদ; সাবেক জিএম (প্রশাসন) মো. শরিফুল আলম ও আবুল কাসেম প্রধানীয়া, সাবেক জিএম (মাইন অপারেশন) আবু তাহের মো. নুর-উজ-জামান চৌধুরী, ব্যবস্থাপক (নিরাপত্তা) মাসুদুর রহমান হাওলাদার, ব্যবস্থাপক (মেনটেন্যান্স) মো. আরিফুর রহমান, ব্যবস্থাপক (নিরাপত্তা) সৈয়দ ইমান হাসান, উপব্যবস্থাপক (কোল হ্যান্ডলিং ম্যানেজমেন্ট) মুহাম্মদ খলিলুর রহমান, উপব্যবস্থাপক (মেনটেন্যান্স অ্যান্ড অপারেশন) মো. মোর্শেদুজ্জামান, উপব্যবস্থাপক প্রোডাকশন ম্যানেজমেন্ট মো. হাবিবুর রহমান, উপব্যবস্থাপক (মাইন ডেভেলপমেন্ট) মো. জাহেদুর রহমান, সহকারী ব্যবস্থাপক (ভেন্টিলেশন ম্যানেজমেন্ট) সত্যেন্দ্র নাথ বর্মন, সহকারী ব্যবস্থাপক (পিএম) মো. মনিরুজ্জামান, ব্যবস্থাপক (কোল হ্যান্ডলিং ম্যানেজমেন্ট ) মো. শোয়েবুর রহমান, উপমহাব্যবস্থাপক (স্টোর ডিপার্টমেন্ট) এ কে এম খালেদুল ইসলাম, ব্যবস্থাপক (প্রোডাকশন ম্যানেজমেন্ট) অশোক কুমার হালদার এবং উপমহাব্যবস্থাপক (মাইন প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট) মো. জোবায়ের আলী।

এজাহারে আসামি করা হলেও তদন্তে অব্যাহতি পেয়েছেন ব্যবস্থাপক (এক্সপ্লোরেশন) মো. মোশারফ হোসেন সরকার, ব্যবস্থাপক (ডিজাইন, কনস্ট্রাকশন অ্যান্ড মেনইটেন্যান্স) জাহিদুল ইসলাম, উপব্যবস্থাপক (সেফটি ম্যানেজমেন্ট) মো. একরামুল হক, সাবেক মহাব্যবস্থাপক (অর্থ ও হিসাব) মো. আবদুল মান্নান পাটওয়ারী ও মহাব্যবস্থাপক (অর্থ ও হিসাব, চলতি দায়িত্ব) গোপাল চন্দ্র সাহা।

মামলার তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মামলা তদন্তের সময় ঘটনাস্থল পরিদর্শন, জব্দকৃত ও সংগৃহীত রেকর্ডপত্র এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বক্তব্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, খনি থেকে কয়লা উত্তোলনের জন্য একটি কনসোর্টিয়ামের সঙ্গে চুক্তি আছে। খনি থেকে উত্তোলিত কয়লাখনি কর্তৃপক্ষের যৌথ তত্ত্বাবধানে থাকা স্কেলে পরিমাপের জন্য কোল মাইনিং কোম্পানির কাছে সরবরাহ করা হয়। গৃহীত কয়লার প্রতিদিনের নমুনা সংগ্রহ করে ল্যাব পরীক্ষার মাধ্যমে কয়লার আর্দ্রতার পরিমাণ নিরূপণ করা হয়। আর্দ্রতা (আনুমানিক ৪.৯ শতাংশ) বাদ দিয়ে কনসোর্টিয়ামের সরবরাহ করা কয়লার পরিমাণ নির্ধারিত হয়। অর্থাৎ ১০০ মেট্রিক টন কয়লা সরবরাহ করা হলে তা থেকে আর্দ্রতার পরিমাণ ৪ দশমিক ৯ শতাংশ বাদ দিয়ে ৯৫ দশমিক ১ শতাংশ কয়লা পাওয়ার বিষয়টি নথিভুক্ত করা হয়। সে অনুসারে কনসোর্টিয়ামকে উত্তোলনের টাকা পরিশোধ করা হয়। এ ছাড়া বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানির ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট থেকে পাওয়া কয়লাকেও উৎপাদিত কয়লা হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে।

এসব কয়লা বিসিএমসিএলের সারফেস সাইলো বা কোল ইয়ার্ডে সংরক্ষণ করা হয়। সেখান থেকে পরিমাপ করে সরাসরি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে সরবরাহ করা হয়। এছাড়া স্থানীয় ক্রেতাদের কাছেও বিক্রি করা হয়। স্থানীয় ক্রেতাদের কাছে বিক্রির সময় বিসিএমসিএলের একক তত্ত্বাবধানে থাকা ওজন স্কেলে পরিমাপের মাধ্যমে বিক্রি করা হয়।

বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের কয়লা উপাদান, বিক্রি, কোম্পানির নিজস্ব ব্যবহার এবং মজুদের মাসওয়ারি বিবরণ পর্যালোচনা করে দুদক দেখেছে, উৎপাদনের শুরুতে অল্প পরিসরে কয়লা স্থানীয় ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করা হয়েছে। তবে ২০০৬ সালের জানুয়ারি থেকে নিয়মিতভাবে স্থানীয় ক্রেতাদের কাছে বিক্রি শুরু হয়। দুদক বলছে, বিসিএমসিএলের কোল ইয়ার্ড ও সারফেস সাইলো সীমানাপ্রাচীর দ্বারা সুরক্ষিত। বিদ্যুৎকেন্দ্র সরবরাহের সময় সারফেস সাইলোর কনভেয়ার বেল্টের মাধ্যমে সরবরাহ করা হয়। সেখানে কয়লা কম-বেশি হওয়ার সুযোগ নেই।

অপর দিকে স্থানীয়ভাবে বিক্রির ক্ষেত্রে কোল ইয়ার্ড থেকে কয়লা সরবরাহ করা হয়। স্থানীয়ভাবে বিক্রির ক্ষেত্রে অর্থ ও হিসাব বিভাগ কর্তৃক ইস্যুকৃত ডেলিভারি অর্ডারের (ডিও) আলোকে ক্রেতারা ট্রাক নিয়ে গেট হয়ে কোল ইয়ার্ডে প্রবেশ করেন এবং কয়লা বোঝাই করে বের হয়ে যান। এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রগুলোতে দায়িত্বরত লোকজনের যোগসাজশে পরিমাণের চেয়ে বেশি কয়লা সরবরাহের মাধ্যমে আত্মসাতের সুযোগ রয়েছে। তদন্তে দুদক দেখেছে, উৎপাদিত কয়লা স্থানীয় ক্রেতাদের কাছে বিক্রির শুরু থেকে এই আত্মসাতের ঘটনা শুরু হয়। সব তথ্যপ্রমাণে তারা দেখেছে, ২০০৬ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যেই এই আত্মসাতের ঘটনা ঘটেছে।