লক্ষ্মীপুরে ফেরি বিকল ১৭ দিন শতাধিক পণ্যবাহী ট্রাক আটকে!

লক্ষ্মীপুর-ভোলা নৌ-রুটের ফেরি কনকচাপা নষ্ট থাকায় গত ১৭ দিন ধরে যাত্রীরা চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। এছাড়া বর্তমানে ফেরি সঙ্কটের কারণে মজুচৌধুরীর হাট ফেরি ঘাট এলাকায় শতাধিক পণ্যবাহী গাড়ি আটকা পড়ে আছে। এতে পরিবহন শ্রমিকরাও আর্থিক ও মানসিক কষ্টে রয়েছে। সূত্রে জানা গেছে, দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষের যাতায়াতের কথা চিন্তা করে ২০০৬ সালের এপ্রিল মাসে সরকার লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার মজুচৌধুরীরহাট লঞ্চ ঘাটটি চালু করে। ওই সময় কামিনী, কিষাণী ও কস্তুরী নামের তিনটি ফেরি এ নৌপথে চলাচল করত। এরপর বিআইডব্লিওটিএ কামিনী ও কস্তুরী নামের ২টি ফেরি প্রত্যাহার করে নেয়। বর্তমানে কনক চাপা, কিষাণী ও কলমীলতা নামে তিনটি ফেরি এ রুটে চলাচল করছে। কিন্তু ফেরি কনক চাপার ইঞ্জিন বিকল হওয়ায় গত ১৭ দিন ধরে ঘাটে পড়ে আছে। কনকচাপা বন্ধ থাকায় বর্তমানে ওই নৌ-রুটে দেখা দিয়েছে ফেরি সংকট। এতে যাত্রী ও চালকরা চরম বিপাকে পড়েছেন। অভিযোগ রয়েছে ফেরিতে উঠতে সিরিয়াল নিতে যানবাহন চালককে দিতে হয় দ্বিগুণ অর্থ। টাকা না দিলে দিনের পর দিন পণ্যবাহী যানবাহন ঘাটে আটকে থাকতে হয় বলে অভিযোগ করেন চালকরা। ফলে ঘাটের দু-পাড়ে আটকা পড়েছে শতাধিক পণ্যবাহী ট্রাক। এতে করে চরম ভোগান্তিতে পড়েন যানবাহনের চালক ও যাত্রীরা। অপরদিকে প্রায়ই ডুবোচরে আটকে পড়ে ফেরি। এতে করে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ডুবোচরে আটকে থাকতে হয় ফেরি। এ কারণে যথা সময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারছে না যানবাহন। ফলে মানুষ যথা সময়ে তার গন্তব্যে পৌঁছাতে পারছেন না। ট্রাক চালক এরশাদ উল্যাহ বলেন, তিনি চট্টগাম থেকে পণ্য নিয়ে ভোলার উদ্দেশে যাচ্ছেন। গত ২ দিন ধরে তিনি ঘাটে সিরিয়াল পাচ্ছেন না। এরপরও বিকল হওয়ায় ফেরিটি মেরামত করা হয়নি। দিনের পর দিন ঘাটে আটকে থাকতে হয়। কবে বিকল হওয়ায় ফেরিটি চালু হবে, তাও জানা নেই কারও। প্রতিদিন এ নৌ-রুটের কয়েক জায়গায় ডুবোচর জেগে উঠায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকে ফেরি। এ কারণে ট্রাকে কাঁচামাল ও বিভিন্ন ধরনের খাদ্য সামগ্রী নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সঠিক সময়ে গন্তব্যে না পৌঁছায় সীমাহীন দুর্ভোগে পড়তে হয় বলে অভিযোগ করেন চালকরা। কয়েকজন চালক বলেন, লক্ষ্মীপুর-ভোলা নৌরুটে গাড়িপ্রতি সরকার নির্ধারিত ভাড়া ২ হাজার ৫০ টাকা থেকে ২ হাজার ২০০ টাকা। অথচ প্রতি যানবাহন থেকে আদায় করা হচ্ছে ৩ হাজার ৪০০ টাকা। এছাড়া ফেরিতে ওঠানোর জন্য যে সিরিয়াল, সেটাও মানা হয় না। টাকা দিলে সিরিয়াল পাওয়া যায়। টাকা না দিলে দিনের পর দিন ঘাটে যানবাহন নিয়ে বসে থাকতে হয়।

বিআইডাব্লিউটিসি মজু চৌধুরীর হাট-ফেরিঘাটের সহকারী প্রকৌশলী আবদুল মালেক বলেন, ফেরি কনকচাপার ইঞ্জিন বিকল হওয়ায় বর্তমানে ফেরিটি বন্ধ রয়েছে। এটি মেরামত করা হলে দুর্ভোগ থাকবে না। বিআইডাব্লিউটিসি, মজু চৌধুরীরহাট ফেরিঘাটের সহকারী পরিচালক মো. কাউছার বলেন, এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে সমস্যা সমাধান হবে বলে আশা করি। সিরিয়াল বা সরকার নির্ধারিত ভাড়া ছাড়া কোন বেশি অর্থ নেয়া হচ্ছে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

আরও খবর
যমুনার ভাঙন হুমকিতে আরিচাঘাট
মাকে বাচাতে গয়না বন্ধক ৩০ হাজার নিয়েও জেল হাজতে পাঠাল পুলিশ
চাঁদপুরে গৃহবধূ হত্যা মামলায় স্বামীসহ মৃত্যুদন্ড দুই
তালতলীতে রিফাত হত্যার বিচারে মানববন্ধন
সুনামগঞ্জে শিক্ষক নির্যাতনের প্রতিবাদে মানববন্ধন
ফরিদপুরে বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী ধর্ষণ : আটক ১
নরসুন্দর শেফালী পেল জমি-ঘর
ইউএসটিসিতে শিক্ষকের গায়ে কেরোসিন ঢেলে লাঞ্ছনা : আটক ১
সিদ্ধিরগঞ্জের চার চাঁদাবাজ গ্রেফতার
চরফ্যাশনের নিখোঁজ ৬ জেলে উদ্ধার
বগুড়া ১১৪ মামলার আসামি যুবদল নেতা মাসুদ কারাগারে
লবণ সহনশীল বিনা চিনাবাদাম-৬ আবাদে বাম্পার ফলন : খুশি চাষি
বাগেরহাটে ট্রাক চাপায় শিশু হত
মাগুরায় অটোরিকশা চালকের মরদেহ
সিরাজগঞ্জে অপহরণ মামলায় যাবজ্জীবন ১

বৃহস্পতিবার, ০৪ জুলাই ২০১৯ , ২০ আষাঢ় ১৪২৫, ৩০ শাওয়াল ১৪৪০

লক্ষ্মীপুরে ফেরি বিকল ১৭ দিন শতাধিক পণ্যবাহী ট্রাক আটকে!

জেলা বার্তা পরিবেশক, লক্ষ্মীপুর

লক্ষ্মীপুর-ভোলা নৌ-রুটের ফেরি কনকচাপা নষ্ট থাকায় গত ১৭ দিন ধরে যাত্রীরা চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। এছাড়া বর্তমানে ফেরি সঙ্কটের কারণে মজুচৌধুরীর হাট ফেরি ঘাট এলাকায় শতাধিক পণ্যবাহী গাড়ি আটকা পড়ে আছে। এতে পরিবহন শ্রমিকরাও আর্থিক ও মানসিক কষ্টে রয়েছে। সূত্রে জানা গেছে, দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষের যাতায়াতের কথা চিন্তা করে ২০০৬ সালের এপ্রিল মাসে সরকার লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার মজুচৌধুরীরহাট লঞ্চ ঘাটটি চালু করে। ওই সময় কামিনী, কিষাণী ও কস্তুরী নামের তিনটি ফেরি এ নৌপথে চলাচল করত। এরপর বিআইডব্লিওটিএ কামিনী ও কস্তুরী নামের ২টি ফেরি প্রত্যাহার করে নেয়। বর্তমানে কনক চাপা, কিষাণী ও কলমীলতা নামে তিনটি ফেরি এ রুটে চলাচল করছে। কিন্তু ফেরি কনক চাপার ইঞ্জিন বিকল হওয়ায় গত ১৭ দিন ধরে ঘাটে পড়ে আছে। কনকচাপা বন্ধ থাকায় বর্তমানে ওই নৌ-রুটে দেখা দিয়েছে ফেরি সংকট। এতে যাত্রী ও চালকরা চরম বিপাকে পড়েছেন। অভিযোগ রয়েছে ফেরিতে উঠতে সিরিয়াল নিতে যানবাহন চালককে দিতে হয় দ্বিগুণ অর্থ। টাকা না দিলে দিনের পর দিন পণ্যবাহী যানবাহন ঘাটে আটকে থাকতে হয় বলে অভিযোগ করেন চালকরা। ফলে ঘাটের দু-পাড়ে আটকা পড়েছে শতাধিক পণ্যবাহী ট্রাক। এতে করে চরম ভোগান্তিতে পড়েন যানবাহনের চালক ও যাত্রীরা। অপরদিকে প্রায়ই ডুবোচরে আটকে পড়ে ফেরি। এতে করে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ডুবোচরে আটকে থাকতে হয় ফেরি। এ কারণে যথা সময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারছে না যানবাহন। ফলে মানুষ যথা সময়ে তার গন্তব্যে পৌঁছাতে পারছেন না। ট্রাক চালক এরশাদ উল্যাহ বলেন, তিনি চট্টগাম থেকে পণ্য নিয়ে ভোলার উদ্দেশে যাচ্ছেন। গত ২ দিন ধরে তিনি ঘাটে সিরিয়াল পাচ্ছেন না। এরপরও বিকল হওয়ায় ফেরিটি মেরামত করা হয়নি। দিনের পর দিন ঘাটে আটকে থাকতে হয়। কবে বিকল হওয়ায় ফেরিটি চালু হবে, তাও জানা নেই কারও। প্রতিদিন এ নৌ-রুটের কয়েক জায়গায় ডুবোচর জেগে উঠায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকে ফেরি। এ কারণে ট্রাকে কাঁচামাল ও বিভিন্ন ধরনের খাদ্য সামগ্রী নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সঠিক সময়ে গন্তব্যে না পৌঁছায় সীমাহীন দুর্ভোগে পড়তে হয় বলে অভিযোগ করেন চালকরা। কয়েকজন চালক বলেন, লক্ষ্মীপুর-ভোলা নৌরুটে গাড়িপ্রতি সরকার নির্ধারিত ভাড়া ২ হাজার ৫০ টাকা থেকে ২ হাজার ২০০ টাকা। অথচ প্রতি যানবাহন থেকে আদায় করা হচ্ছে ৩ হাজার ৪০০ টাকা। এছাড়া ফেরিতে ওঠানোর জন্য যে সিরিয়াল, সেটাও মানা হয় না। টাকা দিলে সিরিয়াল পাওয়া যায়। টাকা না দিলে দিনের পর দিন ঘাটে যানবাহন নিয়ে বসে থাকতে হয়।

বিআইডাব্লিউটিসি মজু চৌধুরীর হাট-ফেরিঘাটের সহকারী প্রকৌশলী আবদুল মালেক বলেন, ফেরি কনকচাপার ইঞ্জিন বিকল হওয়ায় বর্তমানে ফেরিটি বন্ধ রয়েছে। এটি মেরামত করা হলে দুর্ভোগ থাকবে না। বিআইডাব্লিউটিসি, মজু চৌধুরীরহাট ফেরিঘাটের সহকারী পরিচালক মো. কাউছার বলেন, এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে সমস্যা সমাধান হবে বলে আশা করি। সিরিয়াল বা সরকার নির্ধারিত ভাড়া ছাড়া কোন বেশি অর্থ নেয়া হচ্ছে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।