আ-মরি বাংলা ভাষা

ভাষা আন্দোলনের চেতনায় ভাস্বর ফেব্রুয়ারি মাসের নবম দিন আজ। ভাষা আন্দোলনের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তৎকালীন পূর্ব বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর কাছে একটি ইংরেজি স্মারকলিপি দিয়েছিলেন। স্মারকলিপিটির সংক্ষিপ্ত ভাষ্য এমন—‘আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ৩ বছর আগে ভাষা আন্দোলনের সূচনা করেছি এবং যখন তোমরা করাচিতে আমাদের ন্যায়সঙ্গত দাবিকে দমিয়ে রাখতে একত্রিত হয়েছো তখন আমরা বাংলাকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। ......উর্দুকে ইসলামী ভাষা হিসেবে দাবি করা হচ্ছে। আমরা বিশ্বাস করতে অস্বীকার করছি স্বর্গের ভাষা ইসলামী, খ্রিস্টান বা অন্য কিছু হতে পারে। যদি উর্দু ইসলামী হয় তাহলে বাংলাও তাই। বরং বাংলা অধিকতর ইসলামী যেহেতু এদেশের অধিকাংশ মুসলমান বাংলায় কথা বলে। ...আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই- যদি পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা একটি হয় তবে সেটা হবে বাংলা; যদি একের অধিক হয় তবে অবশ্যই বাংলা হবে অন্যতম। ...যতদিন বাঙালির দাবি সম্পূর্ণরূপে বাস্তবায়ন করা না হবে, ততদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শান্ত হবে না।’

বাংলা রাষ্ট্রভাষা হয়েছে, সার্বভৌম দেশ পেয়েছে জাতি। কিন্তু অবহেলায় বিলুপ্তি ঘটেছে আমাদের অনেক ঐতিহাসিক নিদর্শন। একইভাবে সময়ের পরিবর্তনে উদ্যোগের অভাবে ভাষা আন্দোলনের স্মৃতিবিজড়িত ঢাকা মেডিকেল কলেজের জরুরি গেট সংলগ্ন ঐতিহাসিক আমতলা নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে।

ভাষা আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদের অন্যতম মোহাম্মদ তোহা। প্রথম সারির এ ভাষা সংগ্রামী তমদ্দুন মজলিশ প্রতিষ্ঠার অল্প কিছুদিন পর এ সংগঠনের সঙ্গে ভাষা আন্দোলনে যোগদান করেন। তিনি ছিলেন তমদ্দুন মজলিশের রাষ্ট্রভাষা উপকমিটি নামে গঠিত প্রথম রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের সদস্য। এ ভাষা সংগ্রামী রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের কার্যালয় রশিদ ভবন থেকে ফজলুল হক হলে স্থানান্তরের অন্যতম উদ্যোক্তা। এ সাহসী সংগ্রামী রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ আহ্বান করা প্রথম হরতাল কর্মসূচিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ছিলেন সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের সদস্য। ভাষা আন্দোলনের অপরাধে ১৯৫২ সালের ৭ মার্চ তাকে গ্রেফতার করা হয় এবং প্রায় ২ বছর কারারুদ্ধ থাকেন তিনি।

image
আরও খবর
৩৬ কোটি পাঠ্যপুস্তক সংরক্ষণের জায়গা নেই
যুব বিশ্বকাপের ফাইনালে আজ বাংলাদেশের সামনে ভারত
চীনে বাংলাদেশিদের খাবার ও পানি দেয়া হচ্ছে
সংক্রমণ রোধে বিমানবন্দর ও স্থল বন্দরে পরীক্ষা জোরদার
চীন ফেরত শিক্ষার্থীকে করোনাভাইরাস সন্দেহে রংপুর হাসপাতালে ভর্তি
ক্যান্টিনের খাবারে বিষ
ছাত্রী ও পার্লার কর্মী ধর্ষণের শিকার
সরকারকে বাধ্য করা হবে খালেদাকে মুক্তি দিতে
সভা নয় ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন চাই ড. কামাল
আন্দোলনের নামে সন্ত্রাস করলে দাঁতভাঙা জবাব : কাদের
উন্মত্ত সৈন্যের গুলিতে ১২ জন নিহত
কেজরিওয়ালই থাকছেন দিল্লিতে
নিঃস্ব বস্তিবাসীর চোখে শুধু অন্ধকার
ক্ষণগণনা : আর ৩৬ দিন

রবিবার, ০৯ ফেব্রুয়ারী ২০২০ , ২৬ মাঘ ১৪২৬, ১৪ জমাদিউল সানি ১৪৪১

আ-মরি বাংলা ভাষা

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |

image

ভাষা আন্দোলনের চেতনায় ভাস্বর ফেব্রুয়ারি মাসের নবম দিন আজ। ভাষা আন্দোলনের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তৎকালীন পূর্ব বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর কাছে একটি ইংরেজি স্মারকলিপি দিয়েছিলেন। স্মারকলিপিটির সংক্ষিপ্ত ভাষ্য এমন—‘আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ৩ বছর আগে ভাষা আন্দোলনের সূচনা করেছি এবং যখন তোমরা করাচিতে আমাদের ন্যায়সঙ্গত দাবিকে দমিয়ে রাখতে একত্রিত হয়েছো তখন আমরা বাংলাকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। ......উর্দুকে ইসলামী ভাষা হিসেবে দাবি করা হচ্ছে। আমরা বিশ্বাস করতে অস্বীকার করছি স্বর্গের ভাষা ইসলামী, খ্রিস্টান বা অন্য কিছু হতে পারে। যদি উর্দু ইসলামী হয় তাহলে বাংলাও তাই। বরং বাংলা অধিকতর ইসলামী যেহেতু এদেশের অধিকাংশ মুসলমান বাংলায় কথা বলে। ...আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই- যদি পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা একটি হয় তবে সেটা হবে বাংলা; যদি একের অধিক হয় তবে অবশ্যই বাংলা হবে অন্যতম। ...যতদিন বাঙালির দাবি সম্পূর্ণরূপে বাস্তবায়ন করা না হবে, ততদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শান্ত হবে না।’

বাংলা রাষ্ট্রভাষা হয়েছে, সার্বভৌম দেশ পেয়েছে জাতি। কিন্তু অবহেলায় বিলুপ্তি ঘটেছে আমাদের অনেক ঐতিহাসিক নিদর্শন। একইভাবে সময়ের পরিবর্তনে উদ্যোগের অভাবে ভাষা আন্দোলনের স্মৃতিবিজড়িত ঢাকা মেডিকেল কলেজের জরুরি গেট সংলগ্ন ঐতিহাসিক আমতলা নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে।

ভাষা আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদের অন্যতম মোহাম্মদ তোহা। প্রথম সারির এ ভাষা সংগ্রামী তমদ্দুন মজলিশ প্রতিষ্ঠার অল্প কিছুদিন পর এ সংগঠনের সঙ্গে ভাষা আন্দোলনে যোগদান করেন। তিনি ছিলেন তমদ্দুন মজলিশের রাষ্ট্রভাষা উপকমিটি নামে গঠিত প্রথম রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের সদস্য। এ ভাষা সংগ্রামী রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের কার্যালয় রশিদ ভবন থেকে ফজলুল হক হলে স্থানান্তরের অন্যতম উদ্যোক্তা। এ সাহসী সংগ্রামী রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ আহ্বান করা প্রথম হরতাল কর্মসূচিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ছিলেন সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের সদস্য। ভাষা আন্দোলনের অপরাধে ১৯৫২ সালের ৭ মার্চ তাকে গ্রেফতার করা হয় এবং প্রায় ২ বছর কারারুদ্ধ থাকেন তিনি।