বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এবং ভারতের বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের (বিএসএফ) মধ্যে মহাপরিচালক পর্যায়ের ৫১তম সীমান্ত সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক বৈঠক গতকাল ভারতের গৌহাটিতে শুরু হয়েছে। বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. সাফিনুল ইসলামের নেতৃত্বে ১১ সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল সম্মেলনে অংশগ্রহণ করছেন। এবারের সম্মেলনেও সীমান্তের নিরস্ত্র বাংলাদেশিদের হত্যা ও আহত না করার বিষয়টি প্রাধান্য পাচ্ছে।
গতকাল সকাল ১০টায় বিজিবি মহাপরিচালকসহ প্রতিনিধিদল সিলেটের তামাবিল-ডাউকি আইসিপি দিয়ে ভারতে প্রবেশ করে। প্রতিনিধিদলটি চেকপোস্ট নো-ম্যান্স ল্যান্ডে পৌঁছলে বিএসএফ মেঘালয় ফ্রন্টিয়ার হেডকোর্য়ার্টারের আইজি হারদীপ সিং বিজিবি মহাপরিচালককে ফুলেল শুভেচ্ছা ও গার্ড অব অনার দেন। এরপর বিজিবি মহাপরিচালকসহ বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল বিএসএফের হেলিকপ্টারে করে ভারতের গৌহাটিতে পৌঁছান। সেখানে বিএসএফ মহাপরিচালক রাকেশ আস্থানা বিজিবি মহাপরিচালককে অভ্যর্থনা জানান এবং ফুল দিয়ে বরণ করে নেন। সম্মেলন চলবে আগামী ২৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
এবারের সম্মেলনেও সীমান্তে নিরস্ত্র বাংলাদেশি নাগরিকদের গুলি, হত্যা ও আহত না করার বিষয়টি প্রাধান্য পাচ্ছে। এছাড়া সীমান্ত পথে ভারত থেকে বাংলাদেশে ইয়াবা, ফেনসিডিল, মদ, গাঁজা, হেরোইন এবং ভায়াগ্রা/সেনেগ্রাসহ বিভিন্ন প্রকার অবৈধ মাদকদ্রব্যের চোরাচালান রোধ, ভারতের অভ্যন্তরে ফেনসিডিলসহ বিভিন্ন নেশাজাতীয় দ্রব্য/মাদকদ্রব্যের কারখানা/গুদাম এবং মাদকের চোরাচালান রোধ, মাদক পাচারকারীদের সম্পর্কিত তথ্য বিনিময়, ভারত থেকে বাংলাদেশে অস্ত্র ও গোলাবারুদ চোরাচালান রোধ এবং অস্ত্র চোরাচালান রোধে অস্ত্র ব্যবসায়ীদের সম্পর্কে তথ্য বিনিময়, বিএসএফ এবং ভারতীয় নাগরিক কর্তৃক সীমানা লঙ্ঘন/অবৈধ পারাপার/অনুপ্রবেশ রোধ, সীমান্তের ১৫০ গজের মধ্যে ভারত কর্তৃক অনুমোদনহীন উন্নয়নমূলক নির্মাণ কাজ না করা এবং বন্ধ থাকা বাংলাদেশের অন্য উন্নয়নমূলক কাজ যত দ্রুত সম্ভব সমাধান করা, উভয় দেশের সীমান্ত এলাকায় নদীর তীর সংরক্ষণ কাজ বাস্তবায়ন।
রাজশাহী সীমান্তের চর মাজারদিয়া ও চর খানপুর এলাকার স্থানীয় জনসাধারণের চলাচলের সুবিধার্থে পদ্মা নদীর ভারতীয় অংশ ব্যবহারের অনুমতি নেয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করা, ভারতীয় সীমান্তের অভ্যন্তরে সশস্ত্র সন্ত্রাসী ও আঞ্চলিক বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীর সম্ভাব্য অবস্থান ও তাদের কর্মকা- পরিচালনা সম্পর্কিত তথ্য বিনিময়, সীমান্ত ব্যবস্থাপনা এবং সীমান্ত সম্পর্কিত সমস্যা দ্রুত সমাধানের জন্য ‘কার্যকর সমন্বিত সীমান্ত ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা’ কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন ও পারস্পরিক আস্থা ও সৌহার্দ্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলে বিজিবির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা প্রতিনিধিত্ব করেছেন। অপরদিকে বিএসএফ মহাপরিচালক রাকেশ আস্থানার নেতৃত্বে ১২ সদস্যের ভারতীয় প্রতিনিধিদল ওই সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেছেন। ভারতীয় প্রতিনিধিদলে বিএসএফ সদর দফতরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, ফ্রন্টিয়ার আইজি এবং ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা প্রতিনিধিত্ব করেছেন। আগামী ২৫ তারিখে সীমান্ত সম্মেলনের ‘যৌথ আলোচনার দলিল’ স্বাক্ষরের মধ্যদিয়ে সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি হবে। সম্মেলন শেষে ২৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল দেশে ফিরে আসবে।
বুধবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২০ , ০৭ অগ্রহায়ণ ১৪২৭, ০৭ রবিউস সানি ১৪৪২
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এবং ভারতের বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের (বিএসএফ) মধ্যে মহাপরিচালক পর্যায়ের ৫১তম সীমান্ত সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক বৈঠক গতকাল ভারতের গৌহাটিতে শুরু হয়েছে। বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. সাফিনুল ইসলামের নেতৃত্বে ১১ সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল সম্মেলনে অংশগ্রহণ করছেন। এবারের সম্মেলনেও সীমান্তের নিরস্ত্র বাংলাদেশিদের হত্যা ও আহত না করার বিষয়টি প্রাধান্য পাচ্ছে।
গতকাল সকাল ১০টায় বিজিবি মহাপরিচালকসহ প্রতিনিধিদল সিলেটের তামাবিল-ডাউকি আইসিপি দিয়ে ভারতে প্রবেশ করে। প্রতিনিধিদলটি চেকপোস্ট নো-ম্যান্স ল্যান্ডে পৌঁছলে বিএসএফ মেঘালয় ফ্রন্টিয়ার হেডকোর্য়ার্টারের আইজি হারদীপ সিং বিজিবি মহাপরিচালককে ফুলেল শুভেচ্ছা ও গার্ড অব অনার দেন। এরপর বিজিবি মহাপরিচালকসহ বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল বিএসএফের হেলিকপ্টারে করে ভারতের গৌহাটিতে পৌঁছান। সেখানে বিএসএফ মহাপরিচালক রাকেশ আস্থানা বিজিবি মহাপরিচালককে অভ্যর্থনা জানান এবং ফুল দিয়ে বরণ করে নেন। সম্মেলন চলবে আগামী ২৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
এবারের সম্মেলনেও সীমান্তে নিরস্ত্র বাংলাদেশি নাগরিকদের গুলি, হত্যা ও আহত না করার বিষয়টি প্রাধান্য পাচ্ছে। এছাড়া সীমান্ত পথে ভারত থেকে বাংলাদেশে ইয়াবা, ফেনসিডিল, মদ, গাঁজা, হেরোইন এবং ভায়াগ্রা/সেনেগ্রাসহ বিভিন্ন প্রকার অবৈধ মাদকদ্রব্যের চোরাচালান রোধ, ভারতের অভ্যন্তরে ফেনসিডিলসহ বিভিন্ন নেশাজাতীয় দ্রব্য/মাদকদ্রব্যের কারখানা/গুদাম এবং মাদকের চোরাচালান রোধ, মাদক পাচারকারীদের সম্পর্কিত তথ্য বিনিময়, ভারত থেকে বাংলাদেশে অস্ত্র ও গোলাবারুদ চোরাচালান রোধ এবং অস্ত্র চোরাচালান রোধে অস্ত্র ব্যবসায়ীদের সম্পর্কে তথ্য বিনিময়, বিএসএফ এবং ভারতীয় নাগরিক কর্তৃক সীমানা লঙ্ঘন/অবৈধ পারাপার/অনুপ্রবেশ রোধ, সীমান্তের ১৫০ গজের মধ্যে ভারত কর্তৃক অনুমোদনহীন উন্নয়নমূলক নির্মাণ কাজ না করা এবং বন্ধ থাকা বাংলাদেশের অন্য উন্নয়নমূলক কাজ যত দ্রুত সম্ভব সমাধান করা, উভয় দেশের সীমান্ত এলাকায় নদীর তীর সংরক্ষণ কাজ বাস্তবায়ন।
রাজশাহী সীমান্তের চর মাজারদিয়া ও চর খানপুর এলাকার স্থানীয় জনসাধারণের চলাচলের সুবিধার্থে পদ্মা নদীর ভারতীয় অংশ ব্যবহারের অনুমতি নেয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করা, ভারতীয় সীমান্তের অভ্যন্তরে সশস্ত্র সন্ত্রাসী ও আঞ্চলিক বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীর সম্ভাব্য অবস্থান ও তাদের কর্মকা- পরিচালনা সম্পর্কিত তথ্য বিনিময়, সীমান্ত ব্যবস্থাপনা এবং সীমান্ত সম্পর্কিত সমস্যা দ্রুত সমাধানের জন্য ‘কার্যকর সমন্বিত সীমান্ত ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা’ কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন ও পারস্পরিক আস্থা ও সৌহার্দ্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলে বিজিবির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা প্রতিনিধিত্ব করেছেন। অপরদিকে বিএসএফ মহাপরিচালক রাকেশ আস্থানার নেতৃত্বে ১২ সদস্যের ভারতীয় প্রতিনিধিদল ওই সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেছেন। ভারতীয় প্রতিনিধিদলে বিএসএফ সদর দফতরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, ফ্রন্টিয়ার আইজি এবং ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা প্রতিনিধিত্ব করেছেন। আগামী ২৫ তারিখে সীমান্ত সম্মেলনের ‘যৌথ আলোচনার দলিল’ স্বাক্ষরের মধ্যদিয়ে সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি হবে। সম্মেলন শেষে ২৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল দেশে ফিরে আসবে।