আমদানি নির্ভরতায় বড় চ্যালেঞ্জ প্রাথমিক জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করা

এলএনজি নয়, কয়লা ও পারমাণবিকে জোর দেয়ার পরামর্শ

সহনীয় দামে প্রাথমিক জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করাই এখন দেশের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছেন জ্বালানি খাতের বিশেষজ্ঞরা।

তারা বলছেন, বিশ্ববাজারে এলএনজি, কয়লা ও তেলের দাম ওঠানামার প্রবণতা নতুন কিছু নয়। তা আগামী দিনেও অব্যাহত থাকবে। নিজস্ব জ্বালানি সম্পদ আহরণে পিছিয়ে থাকা, অনেক আগেই আমদানিনির্ভর হয়ে পড়ায় বাংলাদেশকে সাবধানে জ্বালানি আমদানি পরিকল্পনা করতে হবে। স্পট বাজারে বেশি নির্ভরতা কমিয়ে এলএনজি কেনার জন্য দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি করতে হবে। ম্যাগাজিন এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ারের আয়োজনে গতকাল ‘গ্যাস সর্টেজ, এলএনজি প্রাইস ভোলাটিলিটি : বাংলাদেশ অ্যান্ড গ্লোবাল পার্সপেক্টিভ’ শীর্ষক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।

ম্যাগাজিন সম্পাদক মোল্লাহ আমজাদ হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন জাতিসংঘ ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের বিশেষ দূত আবুল কালাম আজাদ, বুয়েটের সাবেক অধ্যাপক ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ড. ইজাজ হোসেন, পেট্রোবাংলার সাবেক পরিচালক প্রকৌশলী মো. কামরুজ্জামান, বাপেক্সের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুর্তজা আহমেদ ফারুক, মোহাম্মদী গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাভিদুল হক প্রমুখ। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ও এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ারের কন্টিবিউটিং এডিটর ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার আবদুস সালেক।

দেশের জ্বালানি সংকট এবং বিশ্ববাজারে অস্থিরতার কারণে ইতোমধ্যে বাংলাদেশ একটি কার্গো এলএনজি প্রতি এমএমবিটিউ ২৯ ডলারের বেশি দামে কিনেছে। অক্টোবর মাসের জন্য দুটি কার্গো ৩৬ ডলার দামে কিনতে যাচ্ছে। স্পট বাজার থেকে এলএনজি আমদানির অতিনির্ভরতার কারণে সম্প্রতি এই সংকট তৈরি হয়েছে উল্লেখ করে বক্তরা বলেন, এ বিষয়ে আরও সতর্ক থাকতে হবে। এজন্য এলএনজি (তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস) আমদানিতে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি করতে হবে।

আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘এনার্জি এফিশিয়েন্সি নিয়ে আমাদের কথা বলতে হবে। সাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধান নিয়ে এখনও কিছুই করা যায়নি। যদিও সমুদ্রসীমা বিরোধ নিষ্পত্তি হওয়ায় আমরা বিপুল অঞ্চলের অধিকার পেয়েছি। আমাদের বাতাসের যে গতি আছে তাতে উপকূলে ৩০ হাজার মেগাওয়াট পর্যন্ত বায়ুবিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব। সাগরের ঢেউ থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন কোথাও কোথাও হচ্ছে। বিষয়টি দেখা যেতে পারে।’

বিদ্যুৎ আমদানিতে দেশ পিছিয়ে আছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রীর সাবেক এই মুখ্য সচিব বলেন, ভারত, নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আমদানির বিষয়টি আরও অগ্রাধিকার দেয়া প্রয়োজন। কেননা ভারত, নেপাল ও ভুটান থেকে জল এবং সৌর বিদ্যুৎ আমদানি করতে পারলে তা আমাদের কার্বনমুক্ত বিদ্যুতের পরিমাণ বাড়াতে ভূমিকা রাখবে।’

অধ্যাপক ড. ইজাজ হোসেন বলেন, ‘আসলে আমরা স্পট মার্কেট বুঝি কি না তা ভেবে দেখতে হবে। তেল আর গ্যাসের বাজার এক নয়। ওপেক তেল মার্কেটের উপর নিয়ন্ত্রণ রাখে। কিন্তু এলএনজির ক্ষেত্রে তেমন কিছু নেই। গ্যাসের স্পট মার্কেট নিয়ে আমাদের মধ্যে বিভ্রান্তিও আছে। কোভিডের পরে হঠাৎ করে শিল্পখাতে ব্যাপক চাহিদা বেড়েছে। এমন সময়ে আমাদের স্পট মার্কেটই ভরসা। তবে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি না করে স্পট মার্কেটে জ্বালানি কেনা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ।’

হঠাৎ ১০টি কয়লাবিদ্যুৎ প্রকল্প বন্ধ করে দেয়া, এলএনজি দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানো- বিদ্যুৎ বিভাগের এসব সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘হুটহাট করে পরিকল্পনা বদল করা সঠিক নয়। নিজস্ব কয়লা তোলা বন্ধ রাখা হলো পরিবেশের কথা বলে, যদিও আমাদের তা করার কোন দায় নেই।’ তিনি বলেন, ‘কয়লা ও পরমাণু দিয়ে বেইজ লোড বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে হবে, এলএনজি নয়। এটা হতে পারে পিকিং পাওয়ার জ্বালানি।’

ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার আবদুস সালেক সুফী মূল প্রবন্ধে বলেন, ‘স্পট মার্কেটে এলএনজির দাম প্রতি এমএমবিটিউ ৩৬ ডলার পর্যন্ত উঠেছে। বাংলাদেশকে এলএনজি আমদানির জন্য দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি করতে হবে। যাতে ৮০ শতাংশ পর্যন্ত সরবরাহ সেখান থেকে পাওয়া যায়। আর ২০ শতাংশের জন্য স্পট বাজারের উপর নির্ভর করা যেতে পারে। সঠিক দামে এলএনজি কেনার জন্য প্রাইস গেজিং অনুসরণ করতে হবে। এছাড়া চীন, জাপান, কোরিয়া যারা বড় জ্বালানি আমদানিকারক তাদের সঙ্গে কোয়ালিশন করে আমদানি করা যেতে পারে।’

তিনি বলেন, ‘মাতারবাড়ি এলএনজি টার্মিনাল নিয়ে কাজ হচ্ছে। এছাড়া পায়রায় গভীর সাগরে এফএসআরইউ করার জন্য দুটি প্রস্তাব সরকারের বিবেচনায় আছে। আমার মনে হয় তা হবে খুব ব্যয়বহুল ও ঝুঁকিপূর্ণ। ভারত থেকে এলএনজি পাইপ লাইনে আমদানি নিয়ে দুটি এমওইউ হয়েছে। তবে এর সম্ভাবনা খুব কম।’

ইঞ্জিনিয়ার মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘দীর্ঘ মেয়াদি জ্বালানি চুক্তি না থাকায় এরই মধ্যে আমাদের স্পট মার্কেট থেকে ৩টি কার্গো কিনতে বর্তমানের দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির দামের চেয়ে অতিরিক্ত ২৫০ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করতে হয়েছে। এলএনজির দাম ভবিষ্যতে আরও বাড়বে, এটা ধরে নিয়েই পুরো ম্যানেজমেন্ট করা দরকার। জাপান, কোরিয়ার সঙ্গে জ্বালানি ক্রয় নিয়ে কোয়ালিশন সময়সাপেক্ষ বিষয়।’

মুর্তজা আহমেদ ফারুক সরকারকে একক নীতি থেকে সরে এসে স্থলভাগে গ্যাস অনুসন্ধানে আইওসিদের কাজে লাগানোর পরামর্শ দিয়ে বলেন, সরকার পার্বত্য চট্টগ্রামে তেল গ্যাস অনুসন্ধানে বাপেক্স’র সঙ্গে জয়েন ভেঞ্চার করার উদ্যোগ নিয়েছে। কিন্তু দুটি ব্লকে একাধিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জেভি করা হলে অনুসন্ধান কাজে গতি আসবে।’

নাভিদুল হক বলেন, ‘এলএনজি আমদানির পর দেশে গ্যাসের যে গড় দাম হবে তার পুরোটাই পরিশোধ করতে হলে বস্ত্রখাত কোনভাবেই আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতায় সক্ষম থাকবে না। কারণ গ্যাসের দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাবে। গ্যাস সংকটের যে তথ্য দেয়া হচ্ছে, আরও ৩-৪ বছর আমদানি করা জ্বালানি দিয়ে শিল্প চালাতে হলে ব্যাপক চাপে পড়বে। তাই বস্ত্রখাত টিকিয়ে রাখতে হলে ভর্তুকি আরও কিছু সময় পর্যন্ত অব্যাহত রাখতে হবে। এছাড়া বড় ইন্ডাস্ট্রিগুলোতে স্মার্ট মিটার বসান জরুরি। ডিস্ট্রিবিউশনের ক্ষেত্রেও এনার্জি এফিশিয়েন্ট হতে হবে।’

রবিবার, ০৩ অক্টোবর ২০২১ , ১৮ আশ্বিন ১৪২৮ ২৪ সফর ১৪৪৩

আমদানি নির্ভরতায় বড় চ্যালেঞ্জ প্রাথমিক জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করা

এলএনজি নয়, কয়লা ও পারমাণবিকে জোর দেয়ার পরামর্শ

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

সহনীয় দামে প্রাথমিক জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করাই এখন দেশের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছেন জ্বালানি খাতের বিশেষজ্ঞরা।

তারা বলছেন, বিশ্ববাজারে এলএনজি, কয়লা ও তেলের দাম ওঠানামার প্রবণতা নতুন কিছু নয়। তা আগামী দিনেও অব্যাহত থাকবে। নিজস্ব জ্বালানি সম্পদ আহরণে পিছিয়ে থাকা, অনেক আগেই আমদানিনির্ভর হয়ে পড়ায় বাংলাদেশকে সাবধানে জ্বালানি আমদানি পরিকল্পনা করতে হবে। স্পট বাজারে বেশি নির্ভরতা কমিয়ে এলএনজি কেনার জন্য দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি করতে হবে। ম্যাগাজিন এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ারের আয়োজনে গতকাল ‘গ্যাস সর্টেজ, এলএনজি প্রাইস ভোলাটিলিটি : বাংলাদেশ অ্যান্ড গ্লোবাল পার্সপেক্টিভ’ শীর্ষক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।

ম্যাগাজিন সম্পাদক মোল্লাহ আমজাদ হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন জাতিসংঘ ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের বিশেষ দূত আবুল কালাম আজাদ, বুয়েটের সাবেক অধ্যাপক ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ড. ইজাজ হোসেন, পেট্রোবাংলার সাবেক পরিচালক প্রকৌশলী মো. কামরুজ্জামান, বাপেক্সের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুর্তজা আহমেদ ফারুক, মোহাম্মদী গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাভিদুল হক প্রমুখ। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ও এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ারের কন্টিবিউটিং এডিটর ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার আবদুস সালেক।

দেশের জ্বালানি সংকট এবং বিশ্ববাজারে অস্থিরতার কারণে ইতোমধ্যে বাংলাদেশ একটি কার্গো এলএনজি প্রতি এমএমবিটিউ ২৯ ডলারের বেশি দামে কিনেছে। অক্টোবর মাসের জন্য দুটি কার্গো ৩৬ ডলার দামে কিনতে যাচ্ছে। স্পট বাজার থেকে এলএনজি আমদানির অতিনির্ভরতার কারণে সম্প্রতি এই সংকট তৈরি হয়েছে উল্লেখ করে বক্তরা বলেন, এ বিষয়ে আরও সতর্ক থাকতে হবে। এজন্য এলএনজি (তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস) আমদানিতে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি করতে হবে।

আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘এনার্জি এফিশিয়েন্সি নিয়ে আমাদের কথা বলতে হবে। সাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধান নিয়ে এখনও কিছুই করা যায়নি। যদিও সমুদ্রসীমা বিরোধ নিষ্পত্তি হওয়ায় আমরা বিপুল অঞ্চলের অধিকার পেয়েছি। আমাদের বাতাসের যে গতি আছে তাতে উপকূলে ৩০ হাজার মেগাওয়াট পর্যন্ত বায়ুবিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব। সাগরের ঢেউ থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন কোথাও কোথাও হচ্ছে। বিষয়টি দেখা যেতে পারে।’

বিদ্যুৎ আমদানিতে দেশ পিছিয়ে আছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রীর সাবেক এই মুখ্য সচিব বলেন, ভারত, নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আমদানির বিষয়টি আরও অগ্রাধিকার দেয়া প্রয়োজন। কেননা ভারত, নেপাল ও ভুটান থেকে জল এবং সৌর বিদ্যুৎ আমদানি করতে পারলে তা আমাদের কার্বনমুক্ত বিদ্যুতের পরিমাণ বাড়াতে ভূমিকা রাখবে।’

অধ্যাপক ড. ইজাজ হোসেন বলেন, ‘আসলে আমরা স্পট মার্কেট বুঝি কি না তা ভেবে দেখতে হবে। তেল আর গ্যাসের বাজার এক নয়। ওপেক তেল মার্কেটের উপর নিয়ন্ত্রণ রাখে। কিন্তু এলএনজির ক্ষেত্রে তেমন কিছু নেই। গ্যাসের স্পট মার্কেট নিয়ে আমাদের মধ্যে বিভ্রান্তিও আছে। কোভিডের পরে হঠাৎ করে শিল্পখাতে ব্যাপক চাহিদা বেড়েছে। এমন সময়ে আমাদের স্পট মার্কেটই ভরসা। তবে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি না করে স্পট মার্কেটে জ্বালানি কেনা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ।’

হঠাৎ ১০টি কয়লাবিদ্যুৎ প্রকল্প বন্ধ করে দেয়া, এলএনজি দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানো- বিদ্যুৎ বিভাগের এসব সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘হুটহাট করে পরিকল্পনা বদল করা সঠিক নয়। নিজস্ব কয়লা তোলা বন্ধ রাখা হলো পরিবেশের কথা বলে, যদিও আমাদের তা করার কোন দায় নেই।’ তিনি বলেন, ‘কয়লা ও পরমাণু দিয়ে বেইজ লোড বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে হবে, এলএনজি নয়। এটা হতে পারে পিকিং পাওয়ার জ্বালানি।’

ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার আবদুস সালেক সুফী মূল প্রবন্ধে বলেন, ‘স্পট মার্কেটে এলএনজির দাম প্রতি এমএমবিটিউ ৩৬ ডলার পর্যন্ত উঠেছে। বাংলাদেশকে এলএনজি আমদানির জন্য দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি করতে হবে। যাতে ৮০ শতাংশ পর্যন্ত সরবরাহ সেখান থেকে পাওয়া যায়। আর ২০ শতাংশের জন্য স্পট বাজারের উপর নির্ভর করা যেতে পারে। সঠিক দামে এলএনজি কেনার জন্য প্রাইস গেজিং অনুসরণ করতে হবে। এছাড়া চীন, জাপান, কোরিয়া যারা বড় জ্বালানি আমদানিকারক তাদের সঙ্গে কোয়ালিশন করে আমদানি করা যেতে পারে।’

তিনি বলেন, ‘মাতারবাড়ি এলএনজি টার্মিনাল নিয়ে কাজ হচ্ছে। এছাড়া পায়রায় গভীর সাগরে এফএসআরইউ করার জন্য দুটি প্রস্তাব সরকারের বিবেচনায় আছে। আমার মনে হয় তা হবে খুব ব্যয়বহুল ও ঝুঁকিপূর্ণ। ভারত থেকে এলএনজি পাইপ লাইনে আমদানি নিয়ে দুটি এমওইউ হয়েছে। তবে এর সম্ভাবনা খুব কম।’

ইঞ্জিনিয়ার মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘দীর্ঘ মেয়াদি জ্বালানি চুক্তি না থাকায় এরই মধ্যে আমাদের স্পট মার্কেট থেকে ৩টি কার্গো কিনতে বর্তমানের দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির দামের চেয়ে অতিরিক্ত ২৫০ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করতে হয়েছে। এলএনজির দাম ভবিষ্যতে আরও বাড়বে, এটা ধরে নিয়েই পুরো ম্যানেজমেন্ট করা দরকার। জাপান, কোরিয়ার সঙ্গে জ্বালানি ক্রয় নিয়ে কোয়ালিশন সময়সাপেক্ষ বিষয়।’

মুর্তজা আহমেদ ফারুক সরকারকে একক নীতি থেকে সরে এসে স্থলভাগে গ্যাস অনুসন্ধানে আইওসিদের কাজে লাগানোর পরামর্শ দিয়ে বলেন, সরকার পার্বত্য চট্টগ্রামে তেল গ্যাস অনুসন্ধানে বাপেক্স’র সঙ্গে জয়েন ভেঞ্চার করার উদ্যোগ নিয়েছে। কিন্তু দুটি ব্লকে একাধিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জেভি করা হলে অনুসন্ধান কাজে গতি আসবে।’

নাভিদুল হক বলেন, ‘এলএনজি আমদানির পর দেশে গ্যাসের যে গড় দাম হবে তার পুরোটাই পরিশোধ করতে হলে বস্ত্রখাত কোনভাবেই আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতায় সক্ষম থাকবে না। কারণ গ্যাসের দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাবে। গ্যাস সংকটের যে তথ্য দেয়া হচ্ছে, আরও ৩-৪ বছর আমদানি করা জ্বালানি দিয়ে শিল্প চালাতে হলে ব্যাপক চাপে পড়বে। তাই বস্ত্রখাত টিকিয়ে রাখতে হলে ভর্তুকি আরও কিছু সময় পর্যন্ত অব্যাহত রাখতে হবে। এছাড়া বড় ইন্ডাস্ট্রিগুলোতে স্মার্ট মিটার বসান জরুরি। ডিস্ট্রিবিউশনের ক্ষেত্রেও এনার্জি এফিশিয়েন্ট হতে হবে।’