মাদক চোরাচালান বন্ধে প্রয়োজনে মায়ানমার সীমান্তে গুলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী

মায়ানমার দিয়ে অস্ত্র ও মাদকসহ সব চোরাচালান রোধে প্রয়োজনে সীমান্তে গুলি চালানো হবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের নীতিগত সিদ্ধান্ত হচ্ছে বর্ডারে আমরা একটা লোকও মারব না। মায়ানমার-বাংলাদেশ বর্ডারে আমরা গুলি চালাতে চাই না। কিন্তু অবৈধ কর্মকা- বন্ধে এখন থেকে গুলি চালানো হবে। এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে।’

মায়ানমার সীমান্ত ঝামেলাপূর্ণ উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘মায়ানমার বর্ডারে গুলির সিদ্ধান্ত নেয়া হলেও এ ব্যাপারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও ভালো বলতে পারবে। এই বর্ডার খুবই ডিফিকাল্ট।’

গতকাল সিলেটের এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভারত সরকারের উপহারের অ্যাম্বুলেন্স হস্তান্তর অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী, সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার খলিলুর রহমান, ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ব্রায়ান বঙ্কিম হালদার, জেলা প্রশাসক এম কাজী এমদাদুল ইসলাম, সিলেট জেলা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ, জেলা সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন খান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ডা. সুলতানা রাজিয়া, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সিলেট বিভাগীয় পরিচালক হিমাংশু লাল রায়, সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ডা. মোর্শেদ আহমদ, ওসমানী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মইনুল হক প্রমুখ।

রোহিঙ্গাদের মায়ানমারে ফেরত পাঠানো প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘১৯৭৮ সালে ২ লাখ রোহিঙ্গা এসেছিল তাদের মায়ানমার ফেরত নিয়ে গেছে। ১৯৯২ সালে ২ লাখ ৫৩ হাজার রোহিঙ্গা এসেছিল। পরে ২ লাখ ৩৬ হাজার রোহিঙ্গাকে ফেরত নিয়ে যায় মায়ানমার। তবে এবারের সংখ্যা অনেক বেশি। প্রায় ১১ লাখ। তাদের ফেরত পাঠাতে কাজ করছে সরকার।’

রাখাইন নেতা মহিবুল্লাহ হত্যা প্রসঙ্গে আবদুল মোমেন বলেন, ‘ছেলেটা রোহিঙ্গাদের রাখাইনে ফিরিয়ে নিতে কথা বলেছিল। ওকে মেরে ফেলা হলো। সে বলতো বাংলাদেশে আমাদের ভবিষ্যৎ নেই। ওখানে গেলে আমরা ভালো থাকবো। কিন্তু তাকে মেরেই ফেললো! মহিবুল্লাহর হত্যার বিষয়টি তদন্ত করে সঠিক তথ্য নেবো, খুনিদের শাস্তি হবে।’ বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত হত্যা প্রসঙ্গে ড. মোমেন বলেন, ‘আমরা খুবই দানবীর। আমরা বর্ডারে কাউকে মারি না। মাঝেমধ্যে প্রতিবেশী দেশের হাতে এক-দু’জন মারা গেলে মিডিয়া আমাদের জান শেষ করে দেয়। কেউ মরলে মিডিয়ায় চিৎকার শুরু হয়। বাংলাদেশ-ভারত নীতিগতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, বর্ডারে একটি লোকও মরবে না।’

উল্লেখ্য, পররাষ্ট্রমন্ত্রী তার নির্বাচনী এলাকার বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও প্রকল্প এলাকা পরিদর্শনে একদিনের সফরে গতকাল সকালে সিলেট পৌঁছান। ভারত সরকারের অ্যাম্বুলেন্স হস্তান্তর অনুষ্ঠান শেষে নগরীর কুমারপাড়ায় লালদিঘিরপার রাস্তার কাজের উদ্বোধন করেন। এরপর দুপুরে সিলেট জেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে সংস্কৃতি চর্চার উন্নয়ন সংক্রান্ত এক সভায় যোগ দেন।

বুধবার, ০৬ অক্টোবর ২০২১ , ২১ আশ্বিন ১৪২৮ ২৭ সফর ১৪৪৩

মাদক চোরাচালান বন্ধে প্রয়োজনে মায়ানমার সীমান্তে গুলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

মায়ানমার দিয়ে অস্ত্র ও মাদকসহ সব চোরাচালান রোধে প্রয়োজনে সীমান্তে গুলি চালানো হবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের নীতিগত সিদ্ধান্ত হচ্ছে বর্ডারে আমরা একটা লোকও মারব না। মায়ানমার-বাংলাদেশ বর্ডারে আমরা গুলি চালাতে চাই না। কিন্তু অবৈধ কর্মকা- বন্ধে এখন থেকে গুলি চালানো হবে। এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে।’

মায়ানমার সীমান্ত ঝামেলাপূর্ণ উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘মায়ানমার বর্ডারে গুলির সিদ্ধান্ত নেয়া হলেও এ ব্যাপারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও ভালো বলতে পারবে। এই বর্ডার খুবই ডিফিকাল্ট।’

গতকাল সিলেটের এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভারত সরকারের উপহারের অ্যাম্বুলেন্স হস্তান্তর অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী, সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার খলিলুর রহমান, ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ব্রায়ান বঙ্কিম হালদার, জেলা প্রশাসক এম কাজী এমদাদুল ইসলাম, সিলেট জেলা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ, জেলা সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন খান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ডা. সুলতানা রাজিয়া, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সিলেট বিভাগীয় পরিচালক হিমাংশু লাল রায়, সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ডা. মোর্শেদ আহমদ, ওসমানী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মইনুল হক প্রমুখ।

রোহিঙ্গাদের মায়ানমারে ফেরত পাঠানো প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘১৯৭৮ সালে ২ লাখ রোহিঙ্গা এসেছিল তাদের মায়ানমার ফেরত নিয়ে গেছে। ১৯৯২ সালে ২ লাখ ৫৩ হাজার রোহিঙ্গা এসেছিল। পরে ২ লাখ ৩৬ হাজার রোহিঙ্গাকে ফেরত নিয়ে যায় মায়ানমার। তবে এবারের সংখ্যা অনেক বেশি। প্রায় ১১ লাখ। তাদের ফেরত পাঠাতে কাজ করছে সরকার।’

রাখাইন নেতা মহিবুল্লাহ হত্যা প্রসঙ্গে আবদুল মোমেন বলেন, ‘ছেলেটা রোহিঙ্গাদের রাখাইনে ফিরিয়ে নিতে কথা বলেছিল। ওকে মেরে ফেলা হলো। সে বলতো বাংলাদেশে আমাদের ভবিষ্যৎ নেই। ওখানে গেলে আমরা ভালো থাকবো। কিন্তু তাকে মেরেই ফেললো! মহিবুল্লাহর হত্যার বিষয়টি তদন্ত করে সঠিক তথ্য নেবো, খুনিদের শাস্তি হবে।’ বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত হত্যা প্রসঙ্গে ড. মোমেন বলেন, ‘আমরা খুবই দানবীর। আমরা বর্ডারে কাউকে মারি না। মাঝেমধ্যে প্রতিবেশী দেশের হাতে এক-দু’জন মারা গেলে মিডিয়া আমাদের জান শেষ করে দেয়। কেউ মরলে মিডিয়ায় চিৎকার শুরু হয়। বাংলাদেশ-ভারত নীতিগতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, বর্ডারে একটি লোকও মরবে না।’

উল্লেখ্য, পররাষ্ট্রমন্ত্রী তার নির্বাচনী এলাকার বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও প্রকল্প এলাকা পরিদর্শনে একদিনের সফরে গতকাল সকালে সিলেট পৌঁছান। ভারত সরকারের অ্যাম্বুলেন্স হস্তান্তর অনুষ্ঠান শেষে নগরীর কুমারপাড়ায় লালদিঘিরপার রাস্তার কাজের উদ্বোধন করেন। এরপর দুপুরে সিলেট জেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে সংস্কৃতি চর্চার উন্নয়ন সংক্রান্ত এক সভায় যোগ দেন।