আইসিউ থেকে ফিরেই সর্বোচ্চ স্কোরার

কোচ ম্যাথু হেইডেন মতে তিনি একজন যোদ্ধা। বিশ্বকাপ সেমিফাইনালের ঠিক আগের দুইদিন ছিলেন হসপিটালের আইসিউতে। অথচ আইসিউ থেকে ফিরেই ব্যাট হাতে ম্যাচ সর্বোচ্চ রান করেন রিজওয়ান।

আইসিউ থেকে ফিরেই বৃহস্পতিবার ফিটনেস টেস্টে উত্তীর্ণ হয়ে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে সেমিফাইনাল ম্যাচে ফেরেন তিনি। এই ম্যাচের মধ্যেও একবার বাউন্সারের আঘাত লাগে রিজওয়ানের মাথায়। তবু তার ব্যাট থেকে আসে ৫২ বলে ৬৭ রানের ইনিংস।

অথচ এই ম্যাচটি খেলার জন্য নিজেকে তৈরি করতে দুই দিন হাসপাতালে কাটাতে হয়েছে রিজওয়ানকে। দলের পক্ষ থেকে প্রাথমিকভাবে হালকা জ্বর ও সর্দির কথা বলা হলেও, গুরুতর বুকের ব্যথা নিয়ে দুই দিন হাসপাতালের আইসিইউতে ছিলেন পাকিস্তানের উইকেটরক্ষক ব্যাটার।

সেমিফাইনাল ম্যাচের পরপর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায় রিজওয়ানের হাসপাতালের বেডে শুয়ে থাকা একটি ছবি। যা দেখে স্বাভাবিকভাবেই সবার মনে প্রশ্ন জাগে, আগেরদিন হাসপাতালে থেকে পরদিন কীভাবে খেললেন রিজওয়ান? পুরো বিষয়টি পরিষ্কার করেছেন দলের চিকিৎসক নাজিব সোমরো।

নাজিব বলেছেন, ‘নভেম্বরের ৯ তারিখে (মঙ্গলবার) প্রচ- বুকের ব্যথার কথা জানায় রিজওয়ান। যার ফলে তাকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিল। সেরে ওঠার জন্য দুই দিন আইসিইউ (ইন্টেন্সিভ কেয়ার ইউনিট) বেডে থাকতে হয়েছে।’

তিনি আরও যোগ করেন, ‘সে অস্বাভাবিক দ্রুততার সঙ্গে সেরে উঠেছে এবং ম্যাচের আগেই ফিট হয়ে গেছে। দেশের জন্য তার নিবেদন ও আত্মত্যাগের উদাহরণই দেখলাম আমরা। মাঠে সে কেমন খেলেছে সেটা তো সবাই-ই দেখলো।’

রিজওয়ানকে খেলানোর সিদ্ধান্ত পুরো দলের ছিল জানিয়ে নাজিব আরও বলেন, ‘এই সিদ্ধান্তটা পুরো টিম ম্যানেজম্যান্ট মিলে নিয়েছে। এটা দলের জন্য একপ্রকার মানসিক পরীক্ষাও ছিল। তাই আমরা পুরো বিষয়টি দলের বাইরে যেতে দেইনি।’

অবশ্য অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচের প্রথম ইনিংস শেষে রিজওয়ানের হাসপাতালে থাকার কথা জানিয়েছিলেন পাকিস্তানের ব্যাটিং পরামর্শক ম্যাথু হেইডেন। তবে আইসিইউতে থাকা কিংবা পরিস্থিতি যে এত গুরুতর তা বলেননি হেইডেন। দলীয় সিদ্ধান্তে এটি গোপন করা হলেও পরে ঠিকই ছড়িয়ে গেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। পাকিস্তান তো বটেই, বিশ্বব্যাপী ক্রিকেটপ্রেমীরা প্রশংসায় ভাসাচ্ছেন রিজওয়ানকে। সবাই তাকে কুর্নিশ জানাচ্ছে দেশের প্রতি আত্মনিবেদনের এমন দৃষ্টান্ত স্থাপন করায়।

পাকিস্তানের সাবেক পেসার শোয়েব আখতার রিজওয়ানের হাসপাতালে শুয়ে থাকা ছবি পোস্ট করে লিখেছেন, ‘আপনি কি ভাবতে পারেন, (ছবির) এই লোকই আজকে (বৃহস্পতিবার) তার দেশের হয়ে খেলেছে এবং সেরাটাই দিয়েছে। সে দুই দিন ধরে হাসপাতালে ছিল। অজস্র সম্মান রিজওয়ান।’

সেমিফাইনালে পকিস্তান বাদ পড়লেও রিজওয়ানের এমন দেশ ও ক্রিকেট ভক্তিতে সবাই পঞ্চমুখ।

শনিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২১ , ২৮ কার্তিক ১৪২৮ ৭ রবিউস সানি ১৪৪৩

আইসিউ থেকে ফিরেই সর্বোচ্চ স্কোরার

সংবাদ স্পোর্টস ডেস্ক

image

কোচ ম্যাথু হেইডেন মতে তিনি একজন যোদ্ধা। বিশ্বকাপ সেমিফাইনালের ঠিক আগের দুইদিন ছিলেন হসপিটালের আইসিউতে। অথচ আইসিউ থেকে ফিরেই ব্যাট হাতে ম্যাচ সর্বোচ্চ রান করেন রিজওয়ান।

আইসিউ থেকে ফিরেই বৃহস্পতিবার ফিটনেস টেস্টে উত্তীর্ণ হয়ে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে সেমিফাইনাল ম্যাচে ফেরেন তিনি। এই ম্যাচের মধ্যেও একবার বাউন্সারের আঘাত লাগে রিজওয়ানের মাথায়। তবু তার ব্যাট থেকে আসে ৫২ বলে ৬৭ রানের ইনিংস।

অথচ এই ম্যাচটি খেলার জন্য নিজেকে তৈরি করতে দুই দিন হাসপাতালে কাটাতে হয়েছে রিজওয়ানকে। দলের পক্ষ থেকে প্রাথমিকভাবে হালকা জ্বর ও সর্দির কথা বলা হলেও, গুরুতর বুকের ব্যথা নিয়ে দুই দিন হাসপাতালের আইসিইউতে ছিলেন পাকিস্তানের উইকেটরক্ষক ব্যাটার।

সেমিফাইনাল ম্যাচের পরপর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায় রিজওয়ানের হাসপাতালের বেডে শুয়ে থাকা একটি ছবি। যা দেখে স্বাভাবিকভাবেই সবার মনে প্রশ্ন জাগে, আগেরদিন হাসপাতালে থেকে পরদিন কীভাবে খেললেন রিজওয়ান? পুরো বিষয়টি পরিষ্কার করেছেন দলের চিকিৎসক নাজিব সোমরো।

নাজিব বলেছেন, ‘নভেম্বরের ৯ তারিখে (মঙ্গলবার) প্রচ- বুকের ব্যথার কথা জানায় রিজওয়ান। যার ফলে তাকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিল। সেরে ওঠার জন্য দুই দিন আইসিইউ (ইন্টেন্সিভ কেয়ার ইউনিট) বেডে থাকতে হয়েছে।’

তিনি আরও যোগ করেন, ‘সে অস্বাভাবিক দ্রুততার সঙ্গে সেরে উঠেছে এবং ম্যাচের আগেই ফিট হয়ে গেছে। দেশের জন্য তার নিবেদন ও আত্মত্যাগের উদাহরণই দেখলাম আমরা। মাঠে সে কেমন খেলেছে সেটা তো সবাই-ই দেখলো।’

রিজওয়ানকে খেলানোর সিদ্ধান্ত পুরো দলের ছিল জানিয়ে নাজিব আরও বলেন, ‘এই সিদ্ধান্তটা পুরো টিম ম্যানেজম্যান্ট মিলে নিয়েছে। এটা দলের জন্য একপ্রকার মানসিক পরীক্ষাও ছিল। তাই আমরা পুরো বিষয়টি দলের বাইরে যেতে দেইনি।’

অবশ্য অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচের প্রথম ইনিংস শেষে রিজওয়ানের হাসপাতালে থাকার কথা জানিয়েছিলেন পাকিস্তানের ব্যাটিং পরামর্শক ম্যাথু হেইডেন। তবে আইসিইউতে থাকা কিংবা পরিস্থিতি যে এত গুরুতর তা বলেননি হেইডেন। দলীয় সিদ্ধান্তে এটি গোপন করা হলেও পরে ঠিকই ছড়িয়ে গেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। পাকিস্তান তো বটেই, বিশ্বব্যাপী ক্রিকেটপ্রেমীরা প্রশংসায় ভাসাচ্ছেন রিজওয়ানকে। সবাই তাকে কুর্নিশ জানাচ্ছে দেশের প্রতি আত্মনিবেদনের এমন দৃষ্টান্ত স্থাপন করায়।

পাকিস্তানের সাবেক পেসার শোয়েব আখতার রিজওয়ানের হাসপাতালে শুয়ে থাকা ছবি পোস্ট করে লিখেছেন, ‘আপনি কি ভাবতে পারেন, (ছবির) এই লোকই আজকে (বৃহস্পতিবার) তার দেশের হয়ে খেলেছে এবং সেরাটাই দিয়েছে। সে দুই দিন ধরে হাসপাতালে ছিল। অজস্র সম্মান রিজওয়ান।’

সেমিফাইনালে পকিস্তান বাদ পড়লেও রিজওয়ানের এমন দেশ ও ক্রিকেট ভক্তিতে সবাই পঞ্চমুখ।