আজ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস

দেশে দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠায় জীবন উৎসর্গ করেন ১৬১ বাংলাদেশি

যুদ্ধ বিধ্বস্ত অথবা অভ্যন্তরীণ গোলযোগে জড়িয়ে পড়া দেশগুলোতে শান্তি প্রতিষ্ঠায় কাজ করতে গিয়ে গত ৩৪ বছরে ১৬১ বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী জীবন উৎসর্গ করেছেন। জীবন দেয়া এসব শান্তিরক্ষীদের বেশিরভাগই বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্য। জীবনের ঝুঁকি থাকলেও জাতিসংঘের হয়ে বিভিন্ন দেশে শান্তি রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী ও বাংলাদেশ পুলিশ।

‘আজ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস। বিশ^ শান্তি রক্ষায় বাংলাদেশ অনন্য সম্মান কুড়িয়েছে। আঞ্চলিক সন্ত্রাসীদের সন্ত্রাসী কর্মকা-ের ফলে জিম্মি থাকা দেশগুলোতে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী হিসেবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, আনসার, এবং পুলিশ সদস্যরা অত্যন্ত সুনামের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন। বিশ^ শান্তি রক্ষায় বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের অবস্থান প্রথম অবস্থানে রয়েছে। বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীরা পেশাদারিত্বের সঙ্গে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী হিসেবে যুদ্ধ, অভ্যন্তরীণ সমস্যায় জর্জরিত দেশগুলোতে পূনর্গঠনে ভূমিকা রাখছে’।

সেনাবাহিনীর পিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারের ওয়াকার উজ জামাান বলেন, জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর ন্যায় বাংলাদেশও বিশ^ শান্তিরক্ষী দিবস পালন করছে। এ বছর দিবসের প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে ‘জনগণের অংশীদারিত্বেই শান্তি ও সমৃদ্ধি’। শান্তির অনন্য দূত বাংলাদেশ। বিশ^ শান্তি রক্ষায় বাংলাদেশের অবস্থান আজ সর্ববিধিত। বিশ^ শান্তি রক্ষায় বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী ও বাংলাদেশ পুলিশ জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী হয়ে ৩৪ বছর কাজ করার মাধ্যমে দেশের সুনাম বয়ে এনেছে।

আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবদুল্লাহ ইবনে জায়েদ বলেন, বাংলাদেশ ১৯৮৮ সাল থেকে জাতিসংঘে শান্তিরক্ষী প্রেরণ করে আসছে। পেশাদারিত্ব, একগ্রতা এবং মানবিকতা দিয়ে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী আজ বিশ^ শান্তি রক্ষায় অনন্য রোড মডেল হয়ে দাঁড়িয়েছে।

আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষা মিশনে বর্তমানে ৯ মিশনে সশস্ত্র বাহিনীর ৬৩২৪ জন সক্রিয় রয়েছে। বাংলাদেশ পুলিশের রয়েছে ৫০১ জন শান্তিরক্ষী। বাংলাদেশ ইতোমধ্যে ৪৩টি দেশে ৫৫টি মিশনে ১ লাখ ৮৩ হাজার ৩৭৮ জন শান্তিরক্ষী প্রেরণ করে শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে উঁচু অবস্থানে রয়েছে। বর্র্তমানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৫ হাজার ৪৬৩ জন, নৌ বাহিনীর ৩৪৭ জন, বিমান বাহিনীর ৫১৪ জন এবং বাংলাদেশ পুলিশের ৫০১ জন বিভিন্ন দেশে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী হিসেবে নিয়োজিত রয়েছে। বাংলাদেশের ২৩২২ জন নারী জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী হিসেবে বিভিন্ন দেশে নিয়োজিত হয়েছে। এর মাধ্যমে নারী ক্ষমতায়ন এবং নারী পুরুষের সমঅধিকার বিষয়ে তারা অনন্য দৃষ্টান্ত রেখেছে।

গত ৩৪ বছরে শান্তিরক্ষী হিসেবে কাজ করতে গিয়ে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর ১৩৯ জন সদস্য জীবন দিয়েছেন। এছাড়া বাংলাদেশ পুলিশের ২২ জন সদস্যও একইভাবে জীবন দিয়েছেন। বিভিন্ন দেশে স্থানীয় জনগণকে রক্ষা করার দায়িত্ব পালনে সন্ত্রাসীদের মোকাবিলা করতে গিয়ে সশস্ত্র বাহিনীর ২৪০ জন এবং বাংলাদেশ পুলিশের ১২ জন সদস্য আহত হয়েছে। জাতিসংঘে শান্তিরক্ষা মিশনে সর্বোচ্চ শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ হিসেবেও এখনও শীর্ষ তালিকায় বাংলাদেশ। বর্তমানে আফ্রিকার দেশ ডিআর কঙ্গো, সেন্ট্রাল আফ্রিকা রিপাবলিক, দক্ষিণ সুদান, মালি ও লেবাননসহ মোট ৯টি দেশে বাংলাদেশের শান্তিরক্ষী নিয়োজিত রয়েছেন। বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের প্রতি ওইসব দেশের সাধারণ নাগরিকদের এবং জাতিসংঘের অগাধ আস্থা তৈরি হওয়ায় শান্তি মিশনে কর্তৃত্ব বা নেতৃত্বেও দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশকে।

শান্তিরক্ষী হিসেবে কাজ করার শুরু থেকে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১ লাখ ৪৮ হাজার ৮৪ জন, বাংলাদেশ নৌ বাহিনীর ৬ হাজার ৩৬৫ জন, বিমান বাহিনীর ১ হাজার ৩৩৮ জন এবং বাংলাদেশ পুলিশের ২০ হাজার ৭৯৪ জন নিয়োজিত হয়েছে।

পুলিশ হোডকোয়াটার্সের ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ (ডিআইজি) মোহাম্মদ হাদয়ার আলী জানান, পুলিশের অনেক কর্মকর্তা, সদস্য নিহত এবং আহত হয়েছে। কর্মকর্তা পর্যায়ের মধ্যে অতিরিক্ত আইজিপি পদমর্যাদার একজন পুলিশ কর্মকর্তাও প্রাণ দিয়েছেন শান্তি রক্ষা মিশনে কর্মরত অবস্থায়। তাদের এ ত্যাগ কখনও ভুলবার নয়।

জাতিসংঘের মহাসচিব কর্তৃক ‘দ্যাগ হ্যামারশোলড’ পদক প্রদান :

এদিকে প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও শান্তি রক্ষায় জীবন উৎসর্গের জন্য ২৭ মে জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস কর্তৃক ‘দ্যাগ হ্যামারশোলড’ পদক প্রদান করা হয়। এ বছর ৪২টি দেশের ১১৭ জন নারী ও পুরুষ এই পদক পেয়েছেন। যার মধ্যে ৫৫ জন সামরিক, ২ জন পুলিশও ৬০ জন বেসামরিক শান্তিরক্ষী রয়েছেন। বাংলাদেশে ২ জন শাস্তিরক্ষী লেফটেন্যান্ট কর্নেল এ কে এম মাহমুদুল হাসান, মধ্য অফ্রিকান প্রজাতন্ত্র এবং ল্যান্স কর্পোরাল মো. রবিউল মোল্লা, দক্ষিণ সুদানে শন্তি রক্ষায় সর্বোচ্চ ত্যাগের জন্য উক্ত পদক লাভ করেছেন। বাংলাদেশি পদকপ্রাপ্তদের পক্ষ থেকে এই সম্মাননা গ্রহণ করেছেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাবাব ফাতেমা।

এদিকে আজ ২৯ মে আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস উপলক্ষে বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও যথাযোগ্য মর্যাদায় এ বছর দিবসটি পালন করা হচ্ছে।

image

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর শান্তিরক্ষীরা গত বছর কঙ্গোতে কোডেকো মিলিশিয়াদের হামলায় আহত স্থানীয় ব্যক্তিকে উদ্ধার করে চিকিৎসাসেবা প্রদান করেন (আইএসপিআর ফাইল ছবি)

আরও খবর
সব নির্বাচনকে সমান গুরুত্ব দিচ্ছে ইসি
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়নি
শ্রদ্ধা-ভালোবাসায় শেষ বিদায় একুশের গানের কবিকে
পদ্মা সেতু, দুর্নীতির অভিযোগ তোলার পর বিশ্বব্যাংক দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়াতে চাপ দেয় : দাবি মসিউরের
বিশ্বের ৪০ শতাংশ দুগ্ধ উৎপাদন হয় এশিয়ায়
বর্ষার আগে ডেঙ্গু রোগী বাড়ছে, ২৪ ঘণ্টায় শিশুসহ ১৫ জন হাসপাতালে ভর্তি
সরকার ছাত্রদের ধ্বংস করছে ফখরুল
কীর্তনখোলা নদীর ভাঙন ঠেকাতে ৩৬০ কোটি টাকার প্রকল্প, কাজ শেষ পর্যায়ে
খোমেনি স্টাইলে বিপ্লব করার স্বপ্ন দেখছে বিএনপি : কাদের
ক্ষমতার পরিবর্তন ২০২৩ সালের আগেই : নূর
সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জের সুমন মিয়া হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন, ৬ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট শীঘ্রই

রবিবার, ২৯ মে ২০২২ , ১৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ ২৭ শাওয়াল ১৪৪৩

আজ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস

দেশে দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠায় জীবন উৎসর্গ করেন ১৬১ বাংলাদেশি

সাইফ বাবলু

image

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর শান্তিরক্ষীরা গত বছর কঙ্গোতে কোডেকো মিলিশিয়াদের হামলায় আহত স্থানীয় ব্যক্তিকে উদ্ধার করে চিকিৎসাসেবা প্রদান করেন (আইএসপিআর ফাইল ছবি)

যুদ্ধ বিধ্বস্ত অথবা অভ্যন্তরীণ গোলযোগে জড়িয়ে পড়া দেশগুলোতে শান্তি প্রতিষ্ঠায় কাজ করতে গিয়ে গত ৩৪ বছরে ১৬১ বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী জীবন উৎসর্গ করেছেন। জীবন দেয়া এসব শান্তিরক্ষীদের বেশিরভাগই বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্য। জীবনের ঝুঁকি থাকলেও জাতিসংঘের হয়ে বিভিন্ন দেশে শান্তি রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী ও বাংলাদেশ পুলিশ।

‘আজ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস। বিশ^ শান্তি রক্ষায় বাংলাদেশ অনন্য সম্মান কুড়িয়েছে। আঞ্চলিক সন্ত্রাসীদের সন্ত্রাসী কর্মকা-ের ফলে জিম্মি থাকা দেশগুলোতে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী হিসেবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, আনসার, এবং পুলিশ সদস্যরা অত্যন্ত সুনামের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন। বিশ^ শান্তি রক্ষায় বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের অবস্থান প্রথম অবস্থানে রয়েছে। বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীরা পেশাদারিত্বের সঙ্গে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী হিসেবে যুদ্ধ, অভ্যন্তরীণ সমস্যায় জর্জরিত দেশগুলোতে পূনর্গঠনে ভূমিকা রাখছে’।

সেনাবাহিনীর পিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারের ওয়াকার উজ জামাান বলেন, জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর ন্যায় বাংলাদেশও বিশ^ শান্তিরক্ষী দিবস পালন করছে। এ বছর দিবসের প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে ‘জনগণের অংশীদারিত্বেই শান্তি ও সমৃদ্ধি’। শান্তির অনন্য দূত বাংলাদেশ। বিশ^ শান্তি রক্ষায় বাংলাদেশের অবস্থান আজ সর্ববিধিত। বিশ^ শান্তি রক্ষায় বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী ও বাংলাদেশ পুলিশ জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী হয়ে ৩৪ বছর কাজ করার মাধ্যমে দেশের সুনাম বয়ে এনেছে।

আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবদুল্লাহ ইবনে জায়েদ বলেন, বাংলাদেশ ১৯৮৮ সাল থেকে জাতিসংঘে শান্তিরক্ষী প্রেরণ করে আসছে। পেশাদারিত্ব, একগ্রতা এবং মানবিকতা দিয়ে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী আজ বিশ^ শান্তি রক্ষায় অনন্য রোড মডেল হয়ে দাঁড়িয়েছে।

আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষা মিশনে বর্তমানে ৯ মিশনে সশস্ত্র বাহিনীর ৬৩২৪ জন সক্রিয় রয়েছে। বাংলাদেশ পুলিশের রয়েছে ৫০১ জন শান্তিরক্ষী। বাংলাদেশ ইতোমধ্যে ৪৩টি দেশে ৫৫টি মিশনে ১ লাখ ৮৩ হাজার ৩৭৮ জন শান্তিরক্ষী প্রেরণ করে শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে উঁচু অবস্থানে রয়েছে। বর্র্তমানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৫ হাজার ৪৬৩ জন, নৌ বাহিনীর ৩৪৭ জন, বিমান বাহিনীর ৫১৪ জন এবং বাংলাদেশ পুলিশের ৫০১ জন বিভিন্ন দেশে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী হিসেবে নিয়োজিত রয়েছে। বাংলাদেশের ২৩২২ জন নারী জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী হিসেবে বিভিন্ন দেশে নিয়োজিত হয়েছে। এর মাধ্যমে নারী ক্ষমতায়ন এবং নারী পুরুষের সমঅধিকার বিষয়ে তারা অনন্য দৃষ্টান্ত রেখেছে।

গত ৩৪ বছরে শান্তিরক্ষী হিসেবে কাজ করতে গিয়ে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর ১৩৯ জন সদস্য জীবন দিয়েছেন। এছাড়া বাংলাদেশ পুলিশের ২২ জন সদস্যও একইভাবে জীবন দিয়েছেন। বিভিন্ন দেশে স্থানীয় জনগণকে রক্ষা করার দায়িত্ব পালনে সন্ত্রাসীদের মোকাবিলা করতে গিয়ে সশস্ত্র বাহিনীর ২৪০ জন এবং বাংলাদেশ পুলিশের ১২ জন সদস্য আহত হয়েছে। জাতিসংঘে শান্তিরক্ষা মিশনে সর্বোচ্চ শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ হিসেবেও এখনও শীর্ষ তালিকায় বাংলাদেশ। বর্তমানে আফ্রিকার দেশ ডিআর কঙ্গো, সেন্ট্রাল আফ্রিকা রিপাবলিক, দক্ষিণ সুদান, মালি ও লেবাননসহ মোট ৯টি দেশে বাংলাদেশের শান্তিরক্ষী নিয়োজিত রয়েছেন। বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের প্রতি ওইসব দেশের সাধারণ নাগরিকদের এবং জাতিসংঘের অগাধ আস্থা তৈরি হওয়ায় শান্তি মিশনে কর্তৃত্ব বা নেতৃত্বেও দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশকে।

শান্তিরক্ষী হিসেবে কাজ করার শুরু থেকে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১ লাখ ৪৮ হাজার ৮৪ জন, বাংলাদেশ নৌ বাহিনীর ৬ হাজার ৩৬৫ জন, বিমান বাহিনীর ১ হাজার ৩৩৮ জন এবং বাংলাদেশ পুলিশের ২০ হাজার ৭৯৪ জন নিয়োজিত হয়েছে।

পুলিশ হোডকোয়াটার্সের ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ (ডিআইজি) মোহাম্মদ হাদয়ার আলী জানান, পুলিশের অনেক কর্মকর্তা, সদস্য নিহত এবং আহত হয়েছে। কর্মকর্তা পর্যায়ের মধ্যে অতিরিক্ত আইজিপি পদমর্যাদার একজন পুলিশ কর্মকর্তাও প্রাণ দিয়েছেন শান্তি রক্ষা মিশনে কর্মরত অবস্থায়। তাদের এ ত্যাগ কখনও ভুলবার নয়।

জাতিসংঘের মহাসচিব কর্তৃক ‘দ্যাগ হ্যামারশোলড’ পদক প্রদান :

এদিকে প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও শান্তি রক্ষায় জীবন উৎসর্গের জন্য ২৭ মে জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস কর্তৃক ‘দ্যাগ হ্যামারশোলড’ পদক প্রদান করা হয়। এ বছর ৪২টি দেশের ১১৭ জন নারী ও পুরুষ এই পদক পেয়েছেন। যার মধ্যে ৫৫ জন সামরিক, ২ জন পুলিশও ৬০ জন বেসামরিক শান্তিরক্ষী রয়েছেন। বাংলাদেশে ২ জন শাস্তিরক্ষী লেফটেন্যান্ট কর্নেল এ কে এম মাহমুদুল হাসান, মধ্য অফ্রিকান প্রজাতন্ত্র এবং ল্যান্স কর্পোরাল মো. রবিউল মোল্লা, দক্ষিণ সুদানে শন্তি রক্ষায় সর্বোচ্চ ত্যাগের জন্য উক্ত পদক লাভ করেছেন। বাংলাদেশি পদকপ্রাপ্তদের পক্ষ থেকে এই সম্মাননা গ্রহণ করেছেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাবাব ফাতেমা।

এদিকে আজ ২৯ মে আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস উপলক্ষে বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও যথাযোগ্য মর্যাদায় এ বছর দিবসটি পালন করা হচ্ছে।