নিয়োগ দুর্নীতি, রেলের ৫ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

পছন্দের প্রার্থীদের রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীতে নিয়োগ দিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ বিভিন্ন কোটার পরীক্ষার্থীদের মৌখিক পরীক্ষায় ফেল করিয়েছেন নিয়োগ কমিটির সদস্যরা। শুধু তাই নয় কোটা অনুসরণ না করে নিজেদের লোকজনকে সুবিধা পাইয়ে দিতে নিয়েছেন বিভিন্ন দুর্নীতির আশ্রয়। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। নিরাপত্তাকর্মী নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে রেলওয়ের সাবেক চিফ কমাড্যান্ট (পূর্ব- পশ্চিম) সহকারী সচিব ফুয়াদ হাসান পরাগসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল দুদকের চট্টগ্রাম জেলা সমন্বিত কার্যালয়ে এ মামলা দায়ের করা হয়।

দুদকের উপপরিচালক মো. নাজমুচ্ছায়াদাত বলেন, সিপাহী নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুদক। গতকাল দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১-এ মামলাটি করেন উপপরিচালক মোহাম্মদ সিরাজুল হক। ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারাসহ দ-বিধি ১০৯ ধারায় মামলাটি করা হয়েছে। আসামিরা সবাই আরএনবি সিপাহি নিয়োগ কমিটিতে ছিলেন।

রেলওয়েতে সিপাহি নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে আসামি হওয়া রেলওয়ের পূর্ব ও পশ্চিমাঞ্চলের চিফ কমাড্যান্ট ফুয়াদ হোসেন পরাগ বর্তমানে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব। আসামিদের মধ্যে অন্যরা হলেনÑ রেলওয়ের নিয়োগ কমিটির সদস্য ও বর্তমানে চিফ কমান্ড্যান্ট (পূর্ব) মো. জহিরুল ইসলাম (৫১), চিফ কমান্ড্যান্ট (পশ্চিম) মোহা. আশাবুল ইসলাম (৩৯)। রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সাবেক এসপিও মো. সিরাজ উল্যাহ এবং রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সাবেক মহাব্যবস্থাপক সৈয়দ ফারুক আহামেদকে (৬০)। তবে পূর্ব রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সাবেক চিফ কমান্ড্যান্ট মো. ইকবাল হোসেনের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের সময় অপরাধ প্রমাণিত হলেও তিনি মারা যাওয়ায় তাকে মামলার দায় থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।

দুদক সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ রেলওয়ে থেকে ২০১৭ সালে আরএনবির সিপাহি চতুর্থ শ্রেণীর ১৮৫টি পদে নিয়োগের ছাড়পত্র দেয়া হয়। একই বছর নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয় এবং নিয়োগ কমিটি গঠন করা হয়। আসামিরা নিয়োগ কমিটিতে ছিলেন। আসামিদের বিরুদ্ধে পরস্পর যোগসাজশে অবৈধভাবে নিজেরা লাভবান হয়ে বা অন্যকে লাভবান করার অসাধু অভিপ্রায়ে নিয়োগ কমিটির আহ্বায়ক, সদস্য সচিব, সদস্য ও অনুমোদনকারী হিসেবে ন্যস্ত ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। এছাড়া পরিকল্পিতভাবে অসৎ উদ্দেশে বিশেষ কোটার প্রার্থী যেমন মুক্তিযোদ্ধা কোটা, পোষ্য কোটার প্রার্থীদের পাসের কাছাকাছি নম্বর দিয়ে মৌখিক পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ দেখিয়ে ওই কোটায় পছন্দের প্রার্থীদের মৌখিক পরীক্ষায় পাস দেখিয়ে চাকরি দেয়ার সুযোগ করে দিয়েছেন।

এছাড়া বিভাগীয় কোটা, জেলা কোটা, পোষ্য কোটাসহ অন্য কোটা বিধি অনুযায়ী যথাযথভাবে প্রতিপালন না করে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারাসহ দ-বিধি ১০৯ ধারায় দুর্নীতি দমন কমিশন, সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম-১ মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। তদন্তে অন্য কারো সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন দুদক কর্মকর্তারা।

সোমবার, ২৯ আগস্ট ২০২২ , ১৪ ভাদ্র ১৪২৯ ১ সফর ১৪৪৪

নিয়োগ দুর্নীতি, রেলের ৫ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

পছন্দের প্রার্থীদের রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীতে নিয়োগ দিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ বিভিন্ন কোটার পরীক্ষার্থীদের মৌখিক পরীক্ষায় ফেল করিয়েছেন নিয়োগ কমিটির সদস্যরা। শুধু তাই নয় কোটা অনুসরণ না করে নিজেদের লোকজনকে সুবিধা পাইয়ে দিতে নিয়েছেন বিভিন্ন দুর্নীতির আশ্রয়। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। নিরাপত্তাকর্মী নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে রেলওয়ের সাবেক চিফ কমাড্যান্ট (পূর্ব- পশ্চিম) সহকারী সচিব ফুয়াদ হাসান পরাগসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল দুদকের চট্টগ্রাম জেলা সমন্বিত কার্যালয়ে এ মামলা দায়ের করা হয়।

দুদকের উপপরিচালক মো. নাজমুচ্ছায়াদাত বলেন, সিপাহী নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুদক। গতকাল দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১-এ মামলাটি করেন উপপরিচালক মোহাম্মদ সিরাজুল হক। ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারাসহ দ-বিধি ১০৯ ধারায় মামলাটি করা হয়েছে। আসামিরা সবাই আরএনবি সিপাহি নিয়োগ কমিটিতে ছিলেন।

রেলওয়েতে সিপাহি নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে আসামি হওয়া রেলওয়ের পূর্ব ও পশ্চিমাঞ্চলের চিফ কমাড্যান্ট ফুয়াদ হোসেন পরাগ বর্তমানে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব। আসামিদের মধ্যে অন্যরা হলেনÑ রেলওয়ের নিয়োগ কমিটির সদস্য ও বর্তমানে চিফ কমান্ড্যান্ট (পূর্ব) মো. জহিরুল ইসলাম (৫১), চিফ কমান্ড্যান্ট (পশ্চিম) মোহা. আশাবুল ইসলাম (৩৯)। রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সাবেক এসপিও মো. সিরাজ উল্যাহ এবং রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সাবেক মহাব্যবস্থাপক সৈয়দ ফারুক আহামেদকে (৬০)। তবে পূর্ব রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সাবেক চিফ কমান্ড্যান্ট মো. ইকবাল হোসেনের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের সময় অপরাধ প্রমাণিত হলেও তিনি মারা যাওয়ায় তাকে মামলার দায় থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।

দুদক সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ রেলওয়ে থেকে ২০১৭ সালে আরএনবির সিপাহি চতুর্থ শ্রেণীর ১৮৫টি পদে নিয়োগের ছাড়পত্র দেয়া হয়। একই বছর নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয় এবং নিয়োগ কমিটি গঠন করা হয়। আসামিরা নিয়োগ কমিটিতে ছিলেন। আসামিদের বিরুদ্ধে পরস্পর যোগসাজশে অবৈধভাবে নিজেরা লাভবান হয়ে বা অন্যকে লাভবান করার অসাধু অভিপ্রায়ে নিয়োগ কমিটির আহ্বায়ক, সদস্য সচিব, সদস্য ও অনুমোদনকারী হিসেবে ন্যস্ত ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। এছাড়া পরিকল্পিতভাবে অসৎ উদ্দেশে বিশেষ কোটার প্রার্থী যেমন মুক্তিযোদ্ধা কোটা, পোষ্য কোটার প্রার্থীদের পাসের কাছাকাছি নম্বর দিয়ে মৌখিক পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ দেখিয়ে ওই কোটায় পছন্দের প্রার্থীদের মৌখিক পরীক্ষায় পাস দেখিয়ে চাকরি দেয়ার সুযোগ করে দিয়েছেন।

এছাড়া বিভাগীয় কোটা, জেলা কোটা, পোষ্য কোটাসহ অন্য কোটা বিধি অনুযায়ী যথাযথভাবে প্রতিপালন না করে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারাসহ দ-বিধি ১০৯ ধারায় দুর্নীতি দমন কমিশন, সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম-১ মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। তদন্তে অন্য কারো সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন দুদক কর্মকর্তারা।