সিএএ প্রত্যাহার দাবিতে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় প্রস্তাব পাস

বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) প্রত্যাহারের দাবিতে বিধানসভায় প্রস্তাব পাস করেছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার। গতকাল সন্ধ্যায় পাস হওয়া এই প্রস্তাবে সিএএ এবং এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট জাতীয় জনসংখ্যা পঞ্জি (এনপিআর) ও জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) বাতিলের দাবিও জানানো হয়। ভারতের কেরালা, পাঞ্জাব ও রাজস্থান রাজ্যের পর এবার পশ্চিমবঙ্গ সরকার এই সিএএ’ প্রত্যাহারের দাবিতে বিধানসভায় প্রস্তাব পাস করল।

রাজ্যের পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বিধানসভায় এই প্রস্তাব পেশ করেন। বাম ও কংগ্রেস বিধায়করা এই প্রস্তাবে সংশোধনী আনার পক্ষে মত দেন। কিন্তু রাজ্য সরকারের তরফ থেকে সংশোধনী না আনার জন্য দু’দলের বিধায়কদের কাছে আবেদন জানানো হয়। তবে এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছে বিজেপি। শেষমেশ কষ্ঠভোটে এই প্রস্তাব পাস হয়।

প্রস্তাবে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন যে নাগরিকত্ব আইনের দ্বারা কোন নাগরিকের নাগরিকত্ব কেড়ে নেয়া হবে না। কিন্তু এই আইনে তার কোন উল্লেখ নেই। যা নাগরিকদের মধ্যে একটা বিভ্রান্তি তৈরি করছে। তাই রাজ্যে সরকারের মাধ্যমে কেন্দ্র সরকারের কাছে দাবি জানানো হচ্ছে যে, সিএএ বাতিল এবং এনপিআর, এনআরসি প্রত্যাহারের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে হবে। এই প্রস্তাবে আরও বলা হয়েছে, সিএএ-র সাহায্যে কেন্দ্রের শাসক দল ধর্মের নামে দেশের মানুষের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করছে। মানবাধিকারকে ধ্বংস করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। ফলে পশ্চিমবঙ্গ-সহ দেশের প্রতিটি রাজ্যে চরম অস্থিরতা তৈরি হয়েছে।

গত ৬ সেপ্টেম্বর জাতীয় নাগরিক পঞ্জির বিরুদ্ধে প্রস্তাব পাশ করেছিল রাজ্য বিধানসভা। সেই প্রস্তাবে বলা হয়েছিল, এনআরসি-র তৈরির নামে বৈধ ভারতীয় নাগরিকদের হয়রানি করা হচ্ছে। এ রাজ্যে কোনও ভাবেই এনআরসি চালু করা যাবে না, সেই প্রস্তাবও গৃহীত হয়েছিল।

বিধানসভায় পাস হওয়া ওই প্রস্তাব নিয়ে আলোচনায় পশ্চিমবঙ্গের মুখমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় বলেন, নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন সংবিধান ও মানবতার পরিপন্থী। আমরা অবিলম্বে এই আইনের বাতিল চাই। একইসঙ্গে আমরা জাতীয় নাগরিক নিবন্ধন কার্যাক্রমও (এনপিআর) প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি।

সোমবার পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় নাগরিকত্ব আইন বিরোধী এই প্রস্তাবটি উত্থাপন করা হলে ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেস (টিএমসি) এবং কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়া-মার্ক্সবাদী (সিপিআই-এম) নেতৃত্বাধীন বামপন্থী দলগুলোর জোট উভয়ই প্রস্তাবটির পক্ষ সমর্থন করে। তবে পশ্চিম বিধানসভায় ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) বিধায়করা এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেন। শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেয়ার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার নাগরিকত্ব আইন সংশোধন করায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে ধন্যবাদ জানান তারা। ইতোমধ্যে কেরালা, রাজস্থান এবং পাঞ্জাবে এমন প্রস্তাব পাস হয়েছে।

মঙ্গলবার, ২৮ জানুয়ারী ২০২০ , ১৪ মাঘ ১৪২৬, ২ জমাদিউস সানি ১৪৪১

সিএএ প্রত্যাহার দাবিতে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় প্রস্তাব পাস

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |

বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) প্রত্যাহারের দাবিতে বিধানসভায় প্রস্তাব পাস করেছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার। গতকাল সন্ধ্যায় পাস হওয়া এই প্রস্তাবে সিএএ এবং এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট জাতীয় জনসংখ্যা পঞ্জি (এনপিআর) ও জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) বাতিলের দাবিও জানানো হয়। ভারতের কেরালা, পাঞ্জাব ও রাজস্থান রাজ্যের পর এবার পশ্চিমবঙ্গ সরকার এই সিএএ’ প্রত্যাহারের দাবিতে বিধানসভায় প্রস্তাব পাস করল।

রাজ্যের পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বিধানসভায় এই প্রস্তাব পেশ করেন। বাম ও কংগ্রেস বিধায়করা এই প্রস্তাবে সংশোধনী আনার পক্ষে মত দেন। কিন্তু রাজ্য সরকারের তরফ থেকে সংশোধনী না আনার জন্য দু’দলের বিধায়কদের কাছে আবেদন জানানো হয়। তবে এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছে বিজেপি। শেষমেশ কষ্ঠভোটে এই প্রস্তাব পাস হয়।

প্রস্তাবে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন যে নাগরিকত্ব আইনের দ্বারা কোন নাগরিকের নাগরিকত্ব কেড়ে নেয়া হবে না। কিন্তু এই আইনে তার কোন উল্লেখ নেই। যা নাগরিকদের মধ্যে একটা বিভ্রান্তি তৈরি করছে। তাই রাজ্যে সরকারের মাধ্যমে কেন্দ্র সরকারের কাছে দাবি জানানো হচ্ছে যে, সিএএ বাতিল এবং এনপিআর, এনআরসি প্রত্যাহারের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে হবে। এই প্রস্তাবে আরও বলা হয়েছে, সিএএ-র সাহায্যে কেন্দ্রের শাসক দল ধর্মের নামে দেশের মানুষের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করছে। মানবাধিকারকে ধ্বংস করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। ফলে পশ্চিমবঙ্গ-সহ দেশের প্রতিটি রাজ্যে চরম অস্থিরতা তৈরি হয়েছে।

গত ৬ সেপ্টেম্বর জাতীয় নাগরিক পঞ্জির বিরুদ্ধে প্রস্তাব পাশ করেছিল রাজ্য বিধানসভা। সেই প্রস্তাবে বলা হয়েছিল, এনআরসি-র তৈরির নামে বৈধ ভারতীয় নাগরিকদের হয়রানি করা হচ্ছে। এ রাজ্যে কোনও ভাবেই এনআরসি চালু করা যাবে না, সেই প্রস্তাবও গৃহীত হয়েছিল।

বিধানসভায় পাস হওয়া ওই প্রস্তাব নিয়ে আলোচনায় পশ্চিমবঙ্গের মুখমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় বলেন, নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন সংবিধান ও মানবতার পরিপন্থী। আমরা অবিলম্বে এই আইনের বাতিল চাই। একইসঙ্গে আমরা জাতীয় নাগরিক নিবন্ধন কার্যাক্রমও (এনপিআর) প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি।

সোমবার পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় নাগরিকত্ব আইন বিরোধী এই প্রস্তাবটি উত্থাপন করা হলে ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেস (টিএমসি) এবং কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়া-মার্ক্সবাদী (সিপিআই-এম) নেতৃত্বাধীন বামপন্থী দলগুলোর জোট উভয়ই প্রস্তাবটির পক্ষ সমর্থন করে। তবে পশ্চিম বিধানসভায় ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) বিধায়করা এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেন। শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেয়ার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার নাগরিকত্ব আইন সংশোধন করায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে ধন্যবাদ জানান তারা। ইতোমধ্যে কেরালা, রাজস্থান এবং পাঞ্জাবে এমন প্রস্তাব পাস হয়েছে।