করোনাভাইরাস সন্দেহে রাজধানীর হাসপাতালে চীনা নাগরিক

জ্বর ও কাশি নিয়ে রাজধানীর গুলশানে একটি প্রাইভেট হাসপাতালে এক চীনা নাগরিককে ভর্তি করা হয়েছে। গতকাল দুপুরের দিকে তিনি হাসপাতালে ভর্তি হন। তার শরীরে সন্দেহ ভাজন করোনাভাইরা সে আক্রান্ত এমন আশংকা থেকে তাকে বিশেষ রুমে রাখা হয়েছে। তার পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে।

গতকাল দুপুর আড়াইটার দিকে ওই চীনা নাগরিক অসুস্থ হয়ে হ্সাপাতালে চিকিৎসা নিতে যায়। তখন তার জ্বরসহ অন্য উপসর্গ ধরা পড়েছে। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে তাকে বিশেষ রুমে রাখা হয়েছে। ওই চীনা নাগরিক বিশেষজ্ঞদের জানান, চলতি মাসে তিনি ঢাকায় আসেন। মহাখালী রোগ তত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের কর্মকতা বলেন, আমরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও যাচাই করে দেখতেছি। করোনারীভাইরাস হলে জানাব। এখনও পরীক্ষা শেষ হয়নি।

অপরদিকে একটি করোনাভাইরাস প্রতিরোধে আড়াই হাজার ব্যক্তিকে বিমানবন্দরসহ বিভিন্ন চেকপোস্টে থার্মাল স্ক্যান করা হয়েছে। প্রতিদিন শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে চীন থেকে আসা ব্যক্তিদের গুরুত্ব দিয়ে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। তাদের জ্বরসহ অন্যান্য পরীক্ষা করা হচ্ছে। করোনাভাইরাস প্রতিরোধ ও করণীয় নিয়ে গতকাল মহাখালী স্বাস্থ্য অধিদফতরে এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ ছাড়াও বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশেষজ্ঞদের নিয়ে করোনাভাইরাস প্রতিরোধ নিয়ে ইতোমধ্যে ভিসি প্রফেসর কনকান্তি বড়–য়া বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠক করে করণীয় নির্ধারণ নিয়ে আলোচনা করছেন। আজ তারা করোনাভাইরাস কী এবং প্রতিরোধের উপায় নিয়ে তাদের তথ্য আনুষ্ঠানিকভাবে তুলে ধরবেন। তারা আলাদা ওয়ার্ড চালু থেকে পরবর্তী সতর্কতা সম্পর্কে বিশেষজ্ঞ গাইডলাইন দিবেন। অপরদিকে গতকাল রাতে সর্বশেষ তথ্যে জানা গেছে, জ্বর ও কাঁশি নিয়ে রাজধানীর একটি হাসপাতালে এক চীনা নাগরিক ভর্তি হয়েছে। তাকে হাসপাতালের বিশেষ কক্ষে রাখা হয়েছে। গতকাল দুপুরে থার্মাল স্ক্যান করার সময় তার চীনা নাগরিকের জ্বর শনাক্ত হয়। এরপর তাকে বিশেষ ব্যবস্থায় চিকিৎসা করানো হয়।

মহাখালী স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমাজেন্সি শাখার দায়িত্ব সহকারী পরিচালক ডা. আয়শা আক্তার জানান, করোনাভাইরাস নিয়ে গতকাল দুপুর পর্যন্ত বিমানবন্দরে চীন থেকে আসা যাত্রীসহ ২৪৭০ জনের থার্মাল স্ক্যান করা হয়েছে। তাদের জ্বরসহ অন্য বিষয় পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে। বিকেল ও রাত পর্যন্ত এ সংখ্যা আরও বেশি হবে। তবে বাংলাদেশে এখনও করোনারি ভাইরাসের অস্তিত্ব মিলেনি। এরপর ইমিগ্রেশন চেকপোস্টগুলোতে স্বাস্থ্য কর্মীরা তৎপর রয়েছে। এ ছাড়াও মহাখালী রোগ তত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে আলাদাভাবে কন্ট্রোল রুম চালুসহ সব ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছেন ।

জেলা পর্যায়ে প্রতিটি হাসপাতালে আলাদা (আইসোলেশন) ওয়ার্ড চালু ও ৫টি করে বেড প্রস্তুত রাখার বিষয় নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আর সব সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালগুলোতে একইভাবে ওয়ার্ড চালু করা হবে। ইমিগ্রেশন চেকপোস্টগুলোতে থার্মাল স্ক্যান করার পর সন্দেহ হলে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

মহাখালী রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক মীরজাদী স্রেবরিনা ফ্লোরা গতকাল সন্ধ্যায় মুঠোফোনে বলেন, গত রোববার থেকে কন্ট্রোল রুম চালু করা হয়েছে।। কন্ট্রোল রুমের মাধ্যমে করোনাভাইরাস সংক্রান্ত সব তথ্য জানা গেছে। কন্ট্রোল রুম থেকে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থাকে সর্বশেষ পরিস্থিতি জানানো হবে। এ ছাড়াও দেশের সব বিমানবন্দর, ইমিগ্রেশন চেকপোস্টগুলোতে থার্মাল স্ক্যান করা হচ্ছে।

বিশেষজ্ঞদের অপর এক সূত্র জানায়, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে বেশির ভাগ রোগীকে আইসিইউতে (ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট) রাখতে হবে। কিন্তু পর্যাপ্ত পরিমাণ আইসিইউ নেই। আইসিইউ না থাকলে শ্বাসকষ্ট ও সংক্রামক রোগীদের আইসিইউ সাপোর্ট দেয়া কঠিন হয়ে পড়তে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, অনেক চীনা নাগরিকের জ্বর সুপ্ত অবস্থায় থাকে। তারা বাংলাদেশে আসার পর তাদের পর্যবেক্ষণে রাখার উপর গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।

একজন বিশেষজ্ঞ বলেন, জ্বরসহ অনেকই শনাক্ত হয়েছে। তবে গতকাল জ্বরসহ শনাক্তকারী চীনা নাগরিককে আলাদা স্থানে পরীক্ষা ও চিকিৎসার জন্য নেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

এ ব্যাপারে রাতে মহাখালী রোগ তত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের কন্ট্রোল রুমের দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক ডা. এম আলমগীরের সঙ্গে তার মুঠোফোনে বার বার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় সর্বশেষ তথ্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

গতকাল রাত ৮টার দিকে রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, চীনা নাগরিসহ আমাদের কাছে যত তথ্য আসবে আমরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জানাবো। চীনা নাগরিককে গুলশানের একটি প্রাইভেট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ সম্পর্কে তিনি বলেন, আমাদের কাছে তথ্য আসলে আমরা যাচাই করে তথ্য জানাবো।

মঙ্গলবার, ২৮ জানুয়ারী ২০২০ , ১৪ মাঘ ১৪২৬, ২ জমাদিউস সানি ১৪৪১

করোনাভাইরাস সন্দেহে রাজধানীর হাসপাতালে চীনা নাগরিক

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

জ্বর ও কাশি নিয়ে রাজধানীর গুলশানে একটি প্রাইভেট হাসপাতালে এক চীনা নাগরিককে ভর্তি করা হয়েছে। গতকাল দুপুরের দিকে তিনি হাসপাতালে ভর্তি হন। তার শরীরে সন্দেহ ভাজন করোনাভাইরা সে আক্রান্ত এমন আশংকা থেকে তাকে বিশেষ রুমে রাখা হয়েছে। তার পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে।

গতকাল দুপুর আড়াইটার দিকে ওই চীনা নাগরিক অসুস্থ হয়ে হ্সাপাতালে চিকিৎসা নিতে যায়। তখন তার জ্বরসহ অন্য উপসর্গ ধরা পড়েছে। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে তাকে বিশেষ রুমে রাখা হয়েছে। ওই চীনা নাগরিক বিশেষজ্ঞদের জানান, চলতি মাসে তিনি ঢাকায় আসেন। মহাখালী রোগ তত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের কর্মকতা বলেন, আমরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও যাচাই করে দেখতেছি। করোনারীভাইরাস হলে জানাব। এখনও পরীক্ষা শেষ হয়নি।

অপরদিকে একটি করোনাভাইরাস প্রতিরোধে আড়াই হাজার ব্যক্তিকে বিমানবন্দরসহ বিভিন্ন চেকপোস্টে থার্মাল স্ক্যান করা হয়েছে। প্রতিদিন শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে চীন থেকে আসা ব্যক্তিদের গুরুত্ব দিয়ে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। তাদের জ্বরসহ অন্যান্য পরীক্ষা করা হচ্ছে। করোনাভাইরাস প্রতিরোধ ও করণীয় নিয়ে গতকাল মহাখালী স্বাস্থ্য অধিদফতরে এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ ছাড়াও বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশেষজ্ঞদের নিয়ে করোনাভাইরাস প্রতিরোধ নিয়ে ইতোমধ্যে ভিসি প্রফেসর কনকান্তি বড়–য়া বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠক করে করণীয় নির্ধারণ নিয়ে আলোচনা করছেন। আজ তারা করোনাভাইরাস কী এবং প্রতিরোধের উপায় নিয়ে তাদের তথ্য আনুষ্ঠানিকভাবে তুলে ধরবেন। তারা আলাদা ওয়ার্ড চালু থেকে পরবর্তী সতর্কতা সম্পর্কে বিশেষজ্ঞ গাইডলাইন দিবেন। অপরদিকে গতকাল রাতে সর্বশেষ তথ্যে জানা গেছে, জ্বর ও কাঁশি নিয়ে রাজধানীর একটি হাসপাতালে এক চীনা নাগরিক ভর্তি হয়েছে। তাকে হাসপাতালের বিশেষ কক্ষে রাখা হয়েছে। গতকাল দুপুরে থার্মাল স্ক্যান করার সময় তার চীনা নাগরিকের জ্বর শনাক্ত হয়। এরপর তাকে বিশেষ ব্যবস্থায় চিকিৎসা করানো হয়।

মহাখালী স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমাজেন্সি শাখার দায়িত্ব সহকারী পরিচালক ডা. আয়শা আক্তার জানান, করোনাভাইরাস নিয়ে গতকাল দুপুর পর্যন্ত বিমানবন্দরে চীন থেকে আসা যাত্রীসহ ২৪৭০ জনের থার্মাল স্ক্যান করা হয়েছে। তাদের জ্বরসহ অন্য বিষয় পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে। বিকেল ও রাত পর্যন্ত এ সংখ্যা আরও বেশি হবে। তবে বাংলাদেশে এখনও করোনারি ভাইরাসের অস্তিত্ব মিলেনি। এরপর ইমিগ্রেশন চেকপোস্টগুলোতে স্বাস্থ্য কর্মীরা তৎপর রয়েছে। এ ছাড়াও মহাখালী রোগ তত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে আলাদাভাবে কন্ট্রোল রুম চালুসহ সব ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছেন ।

জেলা পর্যায়ে প্রতিটি হাসপাতালে আলাদা (আইসোলেশন) ওয়ার্ড চালু ও ৫টি করে বেড প্রস্তুত রাখার বিষয় নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আর সব সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালগুলোতে একইভাবে ওয়ার্ড চালু করা হবে। ইমিগ্রেশন চেকপোস্টগুলোতে থার্মাল স্ক্যান করার পর সন্দেহ হলে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

মহাখালী রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক মীরজাদী স্রেবরিনা ফ্লোরা গতকাল সন্ধ্যায় মুঠোফোনে বলেন, গত রোববার থেকে কন্ট্রোল রুম চালু করা হয়েছে।। কন্ট্রোল রুমের মাধ্যমে করোনাভাইরাস সংক্রান্ত সব তথ্য জানা গেছে। কন্ট্রোল রুম থেকে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থাকে সর্বশেষ পরিস্থিতি জানানো হবে। এ ছাড়াও দেশের সব বিমানবন্দর, ইমিগ্রেশন চেকপোস্টগুলোতে থার্মাল স্ক্যান করা হচ্ছে।

বিশেষজ্ঞদের অপর এক সূত্র জানায়, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে বেশির ভাগ রোগীকে আইসিইউতে (ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট) রাখতে হবে। কিন্তু পর্যাপ্ত পরিমাণ আইসিইউ নেই। আইসিইউ না থাকলে শ্বাসকষ্ট ও সংক্রামক রোগীদের আইসিইউ সাপোর্ট দেয়া কঠিন হয়ে পড়তে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, অনেক চীনা নাগরিকের জ্বর সুপ্ত অবস্থায় থাকে। তারা বাংলাদেশে আসার পর তাদের পর্যবেক্ষণে রাখার উপর গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।

একজন বিশেষজ্ঞ বলেন, জ্বরসহ অনেকই শনাক্ত হয়েছে। তবে গতকাল জ্বরসহ শনাক্তকারী চীনা নাগরিককে আলাদা স্থানে পরীক্ষা ও চিকিৎসার জন্য নেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

এ ব্যাপারে রাতে মহাখালী রোগ তত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের কন্ট্রোল রুমের দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক ডা. এম আলমগীরের সঙ্গে তার মুঠোফোনে বার বার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় সর্বশেষ তথ্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

গতকাল রাত ৮টার দিকে রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, চীনা নাগরিসহ আমাদের কাছে যত তথ্য আসবে আমরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জানাবো। চীনা নাগরিককে গুলশানের একটি প্রাইভেট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ সম্পর্কে তিনি বলেন, আমাদের কাছে তথ্য আসলে আমরা যাচাই করে তথ্য জানাবো।