শিশু-কিশোরদের আক্রান্তের ঝুঁকি কম

২০ বছর বা তার বেশি বয়সী মানুষদের তুলনায় শিশু এবং কিশোর বয়সীদের করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি প্রায় অর্ধেক বলে এক গবেষণা নিবন্ধে জানানো হয়েছে। গবেষকরা বলছেন, সমীক্ষায় ১০ থেকে ১৯ বছর বয়সীদের মধ্যে ২১ শতাংশের ক্ষেত্রে কোভিড-১৯ এর ক্লিনিকাল লক্ষণগুলো প্রকাশ পেতে দেখেছে তারা। ৭০ বছর বা এর বেশি বয়সীদের ক্ষেত্রে এই হার প্রায় ৬৯ শতাংশ।

লন্ডন স্কুল অব হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিকাল মেডিসিনের এপিডিমিওলজিস্টদের ওই গবেষণা নেচার মেডিসিন জার্নালে প্রকাশিত হয় বলে সিএনএন জানায়। রোগের ঝুঁকি এবং বয়সের সঙ্গে এর সম্পর্ক বের করতে সংক্রমণ মডেল ব্যবহার করা হয়েছে এই গবেষণায়।

নিবন্ধের লেখকরা বলছেন, অ্যাসিম্পটোমেটিক রোগীদের জন্য সংক্রমণ ছড়ানো নিয়ে আরও গবেষণা করা দরকার; তবে বাচ্চাদের মধ্যে সংক্রমণ রোধের পদক্ষেপগুলোয় এতে সামান্য প্রভাব পড়তে পারে- বিশেষত যদি অ্যাসিম্পটোমেটিক রোগীদের থেকে সংক্রমণ কম হয়। সমীক্ষায় বলা হয়েছে, শিশুদের মধ্যে নতুন করোনাভাইরাসে সংক্রমণের ঝুঁকি কম থাকা নিয়ে সরাসরি প্রমাণের ক্ষেত্রে মিশ্র ফল পাওয়া গেছে। তবে এটি সত্য হলে সামগ্রিকভাবে বিশ্বে কম সংক্রমণ হতে পারে। যেসব দেশের জনসংখ্যার গড় বয়স কম, সেসব দেশে মাথাপিছু কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা কম হতে পারে।

এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংক্রামক রোগ ও এপিডিমিওলজির অধ্যাপক মার্ক উলহাউস বলেন, গবেষকরা দেখতে পেরেছেন যে শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের সংক্রমণের ঝুঁকি কম এবং সংক্রমিত হলে লক্ষণগুলো দেখানোর সম্ভাবনাও কম। তবে তারা সংক্রমণ ছড়ানোর ক্ষেত্রেও অন্যদের চেয়ে কম কিনা তা গবেষকরা নির্ধারণ করতে পারেননি। এর ফলে কোভিড-১৯ এর বিস্তারের ওপর স্কুল বন্ধের প্রভাবের সঠিক মূল্যায়ন করা কঠিন হয়ে পড়েছে।

চীন, জাপান, ইতালি, সিঙ্গাপুর, কানাডা এবং দক্ষিণ কোরিয়ার মহামারী সংক্রান্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে গবেষকরা বলছেন, সংক্রমিত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসা শিশু-কিশোরদের কোভিড-১৯ হওয়ার ঝুঁকি অপেক্ষাকৃত কম এবং আক্রান্ত হলে তাদের অবস্থা কম গুরুতর হতে পারে। কোভিড-১৯ নিয়ে এখনও অনেক বিষয় বিজ্ঞানীদের অজানা। তবে যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) বলছে, কিছু শিশু করোনাভাইরাসে অসুস্থ হয়ে পড়লেও এখন পর্যন্ত আক্রান্তদের বেশিরভাগই প্রাপ্তবয়স্ক। যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত শিশুদের সাধারণত মৃদু উপসর্গ থাকে। করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে বিশ্বজুড়ে স্কুল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ইউনেস্কো ধারণা করছে, প্রায় ১৯০টি দেশে স্কুল বন্ধ হওয়ার কারণে ১৫০ কোটির বেশি শিক্ষার্থী অর্থাৎ বিশ্বের ৯০ শতাংশ শিক্ষার্থী ঘরে আটকে আছে।

বৃহস্পতিবার, ১৮ জুন ২০২০ , ৪ আষাঢ় ১৪২৭, ২৫ শাওয়াল ১৪৪১

করোনায়

শিশু-কিশোরদের আক্রান্তের ঝুঁকি কম

সংবাদ ডেস্ক |

২০ বছর বা তার বেশি বয়সী মানুষদের তুলনায় শিশু এবং কিশোর বয়সীদের করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি প্রায় অর্ধেক বলে এক গবেষণা নিবন্ধে জানানো হয়েছে। গবেষকরা বলছেন, সমীক্ষায় ১০ থেকে ১৯ বছর বয়সীদের মধ্যে ২১ শতাংশের ক্ষেত্রে কোভিড-১৯ এর ক্লিনিকাল লক্ষণগুলো প্রকাশ পেতে দেখেছে তারা। ৭০ বছর বা এর বেশি বয়সীদের ক্ষেত্রে এই হার প্রায় ৬৯ শতাংশ।

লন্ডন স্কুল অব হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিকাল মেডিসিনের এপিডিমিওলজিস্টদের ওই গবেষণা নেচার মেডিসিন জার্নালে প্রকাশিত হয় বলে সিএনএন জানায়। রোগের ঝুঁকি এবং বয়সের সঙ্গে এর সম্পর্ক বের করতে সংক্রমণ মডেল ব্যবহার করা হয়েছে এই গবেষণায়।

নিবন্ধের লেখকরা বলছেন, অ্যাসিম্পটোমেটিক রোগীদের জন্য সংক্রমণ ছড়ানো নিয়ে আরও গবেষণা করা দরকার; তবে বাচ্চাদের মধ্যে সংক্রমণ রোধের পদক্ষেপগুলোয় এতে সামান্য প্রভাব পড়তে পারে- বিশেষত যদি অ্যাসিম্পটোমেটিক রোগীদের থেকে সংক্রমণ কম হয়। সমীক্ষায় বলা হয়েছে, শিশুদের মধ্যে নতুন করোনাভাইরাসে সংক্রমণের ঝুঁকি কম থাকা নিয়ে সরাসরি প্রমাণের ক্ষেত্রে মিশ্র ফল পাওয়া গেছে। তবে এটি সত্য হলে সামগ্রিকভাবে বিশ্বে কম সংক্রমণ হতে পারে। যেসব দেশের জনসংখ্যার গড় বয়স কম, সেসব দেশে মাথাপিছু কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা কম হতে পারে।

এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংক্রামক রোগ ও এপিডিমিওলজির অধ্যাপক মার্ক উলহাউস বলেন, গবেষকরা দেখতে পেরেছেন যে শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের সংক্রমণের ঝুঁকি কম এবং সংক্রমিত হলে লক্ষণগুলো দেখানোর সম্ভাবনাও কম। তবে তারা সংক্রমণ ছড়ানোর ক্ষেত্রেও অন্যদের চেয়ে কম কিনা তা গবেষকরা নির্ধারণ করতে পারেননি। এর ফলে কোভিড-১৯ এর বিস্তারের ওপর স্কুল বন্ধের প্রভাবের সঠিক মূল্যায়ন করা কঠিন হয়ে পড়েছে।

চীন, জাপান, ইতালি, সিঙ্গাপুর, কানাডা এবং দক্ষিণ কোরিয়ার মহামারী সংক্রান্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে গবেষকরা বলছেন, সংক্রমিত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসা শিশু-কিশোরদের কোভিড-১৯ হওয়ার ঝুঁকি অপেক্ষাকৃত কম এবং আক্রান্ত হলে তাদের অবস্থা কম গুরুতর হতে পারে। কোভিড-১৯ নিয়ে এখনও অনেক বিষয় বিজ্ঞানীদের অজানা। তবে যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) বলছে, কিছু শিশু করোনাভাইরাসে অসুস্থ হয়ে পড়লেও এখন পর্যন্ত আক্রান্তদের বেশিরভাগই প্রাপ্তবয়স্ক। যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত শিশুদের সাধারণত মৃদু উপসর্গ থাকে। করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে বিশ্বজুড়ে স্কুল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ইউনেস্কো ধারণা করছে, প্রায় ১৯০টি দেশে স্কুল বন্ধ হওয়ার কারণে ১৫০ কোটির বেশি শিক্ষার্থী অর্থাৎ বিশ্বের ৯০ শতাংশ শিক্ষার্থী ঘরে আটকে আছে।