সিট অনুযায়ী যাত্রী স্বাস্থ্যবিধি না মানলে আইনানুগ ব্যবস্থার নির্দেশ
পূর্বের ভাড়ায় সিট অনুযায়ী যাত্রী নিয়ে আজ চলবে সারাদেশের গণপরিবহন। সিটের বেশি কোন যাত্রী নেয়া যাবে না। দাঁড়িয়ে যাত্রী পরিবহন করলে যানবাহনের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ও সারাদেশের বিভাগীয় কমিশনারকে অনুরোধ করেছেন সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)’র চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার। এছাড়া যাত্রীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে অবশ্যই মাস্ক পরিধান করতে হবে। পরিবহনে পর্র্যাপ্ত সাবান পানি অথবা হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রাখাসহ ট্রিপের শুরু এবং শেষে যানবাহন জীবাণুমুক্ত রাখাসহ একাধিক নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। গতকাল এক প্রজ্ঞাপনে এই আদেশ জারি করে বিআরটিএ। তবে প্রজ্ঞাপনে পূর্বের ভাড়ার পরিসংখ্যান উল্লেখ করা হয়নি। এ নিয়ে যাত্রীদের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে।
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে গত ২৬ মার্চ থেকে ৩০ জুন ২ মাস ৫ দিন বন্ধ ছিল সারাদেশের গণপরিবহন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে ৬০ শতাংশ ভাড়া বৃদ্ধি করে গত ১ জুন থেকে চালু হয় বাস-মিনিবাসসহ সব ধরনের গণপরিবহন। এর আগে গত ৩০ মে করোনা পরিস্থিতি বিবেচনা করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাস-মিনিবাসে ৬০ শর্তাশ ভাড়া বৃদ্ধির প্রজ্ঞাপন জারি করছে সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগ। এর ফলে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহানগরী সিটি সার্ভিস ও দূরপাল্লাহর সব বাস-মিনিবাসের ৬০ শতাংশ বেশি ভাড়া কার্যকর করা হয়। করোনা পরিস্থিতিতে এক সিটে একজন যাত্রী বসিয়ে আরেক সিট ফাঁকা রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এছাড়া বাসের ভেতরে দাঁড়ানো যাত্রী না নেয়া, চালক-হেলপারসহ যাত্রীদের মুখে মাস্ক থাকা বাধ্যতামূলক, যাত্রী বাসে উঠার আগে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার ও ট্রিপের শুরু এবং শেষে যানবাহন জীবাণুমুক্ত রাখাসহ একাধিক নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে তা পালন করেনি বাস মালিক ও শ্রমিকরা। তাই ৬০ শতাংশের এই বর্ধিত ভাড়া প্রত্যাহার করে পূর্বের ভাড়ায় বাস-মিনি পরিচালনার নির্দেশনা দিয়েছে বিআরটিএ।
করোনার আগে ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীতে বাস-মিনিবাসে সরকার নির্ধারিত ভাড়া ছিল প্রতি কিলোমিটার ১ টাকা ৬০ পয়সা ও ১ টাকা ৭০ পয়সা। এছাড়া সর্বনি¤œ ভাড়া ছিল ৫/৭ টাকা। কিন্তু কোন পরিবহন এই ভাড়া আদায় করা হতো না। সিটিং সার্ভিস, বিরতিহীন, গেটলক ও স্পেশাল বিভিন্ন সার্ভিসের নামের দ্বিগুণ ভাড়া আদায় করতো বাস-মিনিবাস চালকরা। ২০১৫ সালে রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাসের (সিএনজি)’র দাম বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে রাজধানীর ও চট্টগ্রাম মহানগরী এবং ঢাকা আশপাশের জেলায় বড় বাস-মিনিবাসের ভাড়া বাড়ানো হয়। তখন ১০ পয়সা বাড়িয়ে বড় বাসে প্রতি কিলেমিটারে ১ টাকা ৭০ পয়সা এবং মিনিবাসে ১ টাকা ৬০ পয়সা নির্ধারণ করা হয়। যা আগে ছিল বড় বাসে ১ টাকা ৬০ পয়সা ও মিনিবাসে ১ টাকা ৫০ পয়সা। সর্বনিম্ন ভাড়া বড়বাসের জন্য ৭ টাকা ও মিনিবাসের জন্য ৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু রাজধানীর কোন পরিবহন এই ভাড়া মানা হতো না। তাই আগের বলতে সরকার নির্ধারিত ভাড়া যেন মানা হয় বিষয়ে কঠোর মনিটরিংয়ে পরামর্শ গণপরিবহন বিশেষজ্ঞদের।
এ বিষয়ে রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী মো. সাইদুর রহমান সংবাদকে বলেন, করোনার আগেই বাস-মিনিবাসের সরকার নির্ধারিত ভাড়া আদায় করা হতো না। বিভিন্ন সিটিং সার্ভিসের নামে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হতো। তাই করোনার স্বাস্থ্যবিধি শিথিল করে গণপরিবহনে সরকার নির্ধারিত আগের ভাড়া চালু করা দরকার। এক্ষেত্রে বিআরটিএ’র কঠোর মনিটরিং ব্যবস্থা থাকতে হবে। তা না হলে দ্বিগুণ ও তিনগুণ ভাড়া আদায় করবে বাস-মিনিবাস চালকরা।
এদিকে স্বাভাবিক ভাড়ায় যাত্রী পরিবহনের নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি। গত শনিবার সমিতির পক্ষ থেকে দেশের সব শাখা ও ইউনিটকে দেয়া এক চিঠিতে বলা হয়েছে, কোন গাড়িতে আগের ভাড়ার চেয়ে অতিরিক্ত অর্থাৎ জুন ২০২০ থেকে বর্ধিত ৬০ শতাংশ ভাড়া আদায় করা যাবে না। অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্ট গাড়ি ও গাড়ির স্টাফের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্যাহর স্বাক্ষরিত চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, করোনা ভাইরাসের কারণে সরকার গত ১ জুন থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরিবহন পরিচালনার জন্য অনুমতি দেয়া হয়। সে অনুযায়ী স্বাস্থ্যবিধি মেনে আমরা পরিবহন পরিচালনা করে আসছি।
মঙ্গলবার, ০১ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ১১ মহররম ১৪৪২, ১৫ ভাদ্র ১৪২৭
সিট অনুযায়ী যাত্রী স্বাস্থ্যবিধি না মানলে আইনানুগ ব্যবস্থার নির্দেশ
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |
পূর্বের ভাড়ায় সিট অনুযায়ী যাত্রী নিয়ে আজ চলবে সারাদেশের গণপরিবহন। সিটের বেশি কোন যাত্রী নেয়া যাবে না। দাঁড়িয়ে যাত্রী পরিবহন করলে যানবাহনের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ও সারাদেশের বিভাগীয় কমিশনারকে অনুরোধ করেছেন সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)’র চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার। এছাড়া যাত্রীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে অবশ্যই মাস্ক পরিধান করতে হবে। পরিবহনে পর্র্যাপ্ত সাবান পানি অথবা হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রাখাসহ ট্রিপের শুরু এবং শেষে যানবাহন জীবাণুমুক্ত রাখাসহ একাধিক নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। গতকাল এক প্রজ্ঞাপনে এই আদেশ জারি করে বিআরটিএ। তবে প্রজ্ঞাপনে পূর্বের ভাড়ার পরিসংখ্যান উল্লেখ করা হয়নি। এ নিয়ে যাত্রীদের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে।
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে গত ২৬ মার্চ থেকে ৩০ জুন ২ মাস ৫ দিন বন্ধ ছিল সারাদেশের গণপরিবহন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে ৬০ শতাংশ ভাড়া বৃদ্ধি করে গত ১ জুন থেকে চালু হয় বাস-মিনিবাসসহ সব ধরনের গণপরিবহন। এর আগে গত ৩০ মে করোনা পরিস্থিতি বিবেচনা করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাস-মিনিবাসে ৬০ শর্তাশ ভাড়া বৃদ্ধির প্রজ্ঞাপন জারি করছে সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগ। এর ফলে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহানগরী সিটি সার্ভিস ও দূরপাল্লাহর সব বাস-মিনিবাসের ৬০ শতাংশ বেশি ভাড়া কার্যকর করা হয়। করোনা পরিস্থিতিতে এক সিটে একজন যাত্রী বসিয়ে আরেক সিট ফাঁকা রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এছাড়া বাসের ভেতরে দাঁড়ানো যাত্রী না নেয়া, চালক-হেলপারসহ যাত্রীদের মুখে মাস্ক থাকা বাধ্যতামূলক, যাত্রী বাসে উঠার আগে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার ও ট্রিপের শুরু এবং শেষে যানবাহন জীবাণুমুক্ত রাখাসহ একাধিক নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে তা পালন করেনি বাস মালিক ও শ্রমিকরা। তাই ৬০ শতাংশের এই বর্ধিত ভাড়া প্রত্যাহার করে পূর্বের ভাড়ায় বাস-মিনি পরিচালনার নির্দেশনা দিয়েছে বিআরটিএ।
করোনার আগে ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীতে বাস-মিনিবাসে সরকার নির্ধারিত ভাড়া ছিল প্রতি কিলোমিটার ১ টাকা ৬০ পয়সা ও ১ টাকা ৭০ পয়সা। এছাড়া সর্বনি¤œ ভাড়া ছিল ৫/৭ টাকা। কিন্তু কোন পরিবহন এই ভাড়া আদায় করা হতো না। সিটিং সার্ভিস, বিরতিহীন, গেটলক ও স্পেশাল বিভিন্ন সার্ভিসের নামের দ্বিগুণ ভাড়া আদায় করতো বাস-মিনিবাস চালকরা। ২০১৫ সালে রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাসের (সিএনজি)’র দাম বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে রাজধানীর ও চট্টগ্রাম মহানগরী এবং ঢাকা আশপাশের জেলায় বড় বাস-মিনিবাসের ভাড়া বাড়ানো হয়। তখন ১০ পয়সা বাড়িয়ে বড় বাসে প্রতি কিলেমিটারে ১ টাকা ৭০ পয়সা এবং মিনিবাসে ১ টাকা ৬০ পয়সা নির্ধারণ করা হয়। যা আগে ছিল বড় বাসে ১ টাকা ৬০ পয়সা ও মিনিবাসে ১ টাকা ৫০ পয়সা। সর্বনিম্ন ভাড়া বড়বাসের জন্য ৭ টাকা ও মিনিবাসের জন্য ৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু রাজধানীর কোন পরিবহন এই ভাড়া মানা হতো না। তাই আগের বলতে সরকার নির্ধারিত ভাড়া যেন মানা হয় বিষয়ে কঠোর মনিটরিংয়ে পরামর্শ গণপরিবহন বিশেষজ্ঞদের।
এ বিষয়ে রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী মো. সাইদুর রহমান সংবাদকে বলেন, করোনার আগেই বাস-মিনিবাসের সরকার নির্ধারিত ভাড়া আদায় করা হতো না। বিভিন্ন সিটিং সার্ভিসের নামে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হতো। তাই করোনার স্বাস্থ্যবিধি শিথিল করে গণপরিবহনে সরকার নির্ধারিত আগের ভাড়া চালু করা দরকার। এক্ষেত্রে বিআরটিএ’র কঠোর মনিটরিং ব্যবস্থা থাকতে হবে। তা না হলে দ্বিগুণ ও তিনগুণ ভাড়া আদায় করবে বাস-মিনিবাস চালকরা।
এদিকে স্বাভাবিক ভাড়ায় যাত্রী পরিবহনের নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি। গত শনিবার সমিতির পক্ষ থেকে দেশের সব শাখা ও ইউনিটকে দেয়া এক চিঠিতে বলা হয়েছে, কোন গাড়িতে আগের ভাড়ার চেয়ে অতিরিক্ত অর্থাৎ জুন ২০২০ থেকে বর্ধিত ৬০ শতাংশ ভাড়া আদায় করা যাবে না। অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্ট গাড়ি ও গাড়ির স্টাফের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্যাহর স্বাক্ষরিত চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, করোনা ভাইরাসের কারণে সরকার গত ১ জুন থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরিবহন পরিচালনার জন্য অনুমতি দেয়া হয়। সে অনুযায়ী স্বাস্থ্যবিধি মেনে আমরা পরিবহন পরিচালনা করে আসছি।