নানা অজুহাতে বের হয়ে গ্রেপ্তার, জরিমানা, গাড়ি জব্দ

করোনার ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট ভেড়ে যাওয়ায় সরকার সারাদেশে লকডাউন ঘোষণা করেছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কাউকে ঘর থেকে বের না হওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে। লকডাউনের প্রথম দিনে নানা অজুহাতে অকারণে ঘর থেকে বের হওয়া এবং অযোচিত চলাচালের কারণে রাজধানীতে আটক করা হয়েছে ৪৯৭ জনকে। ঢাকার বাইরে বিভিন্ন জেলাও আটক করা হয়।

এর মধ্যে ২৫৮ জনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। বিভিন্ন ব্যক্তি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান জরিমানা করা হয়েছে প্রায় ৫ লাখ টাকা। এছাড়া ২৭৪টি গাড়ির বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হয়েছে, জরিমানা করা হয়েছে লাখ ৬৩ হাজার ৫০ টাকা। রেকারিং করা হয়েছে ৭৭টি গাড়ি আর জব্দ করা হয়েছে ছয়টি গাড়ি।

ডিএমপি থেকে জানানো হয়েছে ঢাক মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ৮টি বিভাগে ক্রাইম বিভাগ এবং ট্রাফিক বিভাগ একযোগে মাঠে অভিযান চালিয়েছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া যেসব ব্যক্তি অকারণে রাস্তায় ঘোরাফেরা করেছে এমন ব্যক্তিদের আটক করা হয়েছে। এছাড়া অকারণে যানবাহন নিয়ে রাস্তায় ঘোরাফেরা করার কারণে বিভিন্ন যানবাহন আটক করে মামলা রেকারিং এবং জব্দ করা হয়েছে। গতকাল প্রথম দিনে সকাল ৮ থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত পুলিশের এ তৎপরতা ছিল।

ডিএমিপর হিসাব অনুযায়ী, রমনা বিভাগে ৪৫টি গাড়ির বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। জরিমানা করা হয়েছে ৭৯ হাজার ৩৫০ টাকা। রেকারিং করা হয়েছে ৯টি গাড়ি। একই বিভাগে আটক করা হয়েছে ৫৭ জনকে। এর মধ্যে লকডাউন অমান্য করার ঘটনায় ২ জনের বিরুদ্ধ মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের জরিমানা করা হয়েছে ৫৮ হাজার ৫শ’ টাকা।

লালবাগ বিভাগে ৩৭টি গাড়ির বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। ৩৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এর মধ্যে মোবাইল কোর্টে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে ১৫ জনকে। বিভিন্ন বক্তি ও প্রতিষ্ঠানের মোট ৭৮ হাজার ১শ’ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। মতিঝিল বিভাগে ২৮টি গাড়ির বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে ৬০ হাজার ২শ’ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে ২ জনকে। ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের জরিমানা করা হয়েছে ৬৫ হাজার ৮৫০ টাকা।

হিসাব অনুযায়ী ওয়ারি বিভাগে ১৫ গাড়ির বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। জরিমানা করা হয়েছে ৭০ হাজার টাকা। গ্রেপ্তার করা হয়েছে ১৬ জনকে। সব মিলিয়ে জরিমানা করা হয়েছে ৭১ হাজার ৭শ’ টাকা। তেজাগাঁও বিভাগে ১২ গাড়ির বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। জরিমানা করা হয়েছে ২৩ হাজার ৮০০ টাকা। আটক করা হয়েছে ২৩২ জনকে। জরিমানা করা হয়েছে ৪৭ হাজার ৩শ’ টাকা। গুলশান বিভাগে ১৫ জনকে আটক ১৩১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জরিমানা করা হয়েছে ১ লাখ ২ হাজর ১০৭ টাকা। বিভিন্ন গাড়ির বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে ২১টি। উত্তরা বিভাগে ৩৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, ১৭ হাজা ৪শ’ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। বিভিন্ন গাড়ির বিরুদ্ধে মামলা ১৮টি।

পুলিশ জানিয়েছে, যারা লকডাউন আইন অমান্য করেছেন এবং সতর্ক করা সত্ত্বেও বাসায় ফিরে না গিয়ে অকারণে রাস্তায় চলাফেরা করেছেন এমন ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃদের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দেয়া হয়েছে। আটক ব্যক্তিদের জরিমানা করে মুচলেকায় ছেড়ে দেয়া হয়েছে। বিভিন্ন যানবাহনের জরিমানার পাশাপাশি প্রয়োজন ছাড়া রাস্তায় বের হওয়ার ক্ষেত্রে যেসব যানবানের মালিকদের বেশি অপরাধ পাওয়া গেছে সেসব যানবাহন রেকারিং করে জরিমানা করা হয়েছে।

পুলিশের ওয়ারী বিভাগের উপকমিশনার ইফতেখায়রুজ্জামান টেলিফোনে সংবাদকে জানান, সরকারের সংক্রমণ ব্যাধি নিরাময় আইনের অনুসরণ করে পুলিশ লকডাউন বাস্তবায়নে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করছে। সরকারের নির্দেশনা অমন্য করে রাস্তায় অকারণে যারা বের হচ্ছেন তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে। এখানে ম্যাজিস্টেট আটক, গ্রেপ্তার জরিমানা করছেন। পুলিশ তা বাস্তবায়নে সহযোগিতা করছে। যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ডিএমপি অ্যাক্টে বা ৫৪ ধারায় মামলা হবে।

শুক্রবার, ০২ জুলাই ২০২১ , ১৮ আষাঢ় ১৪২৮ ২০ জিলক্বদ ১৪৪২

নানা অজুহাতে বের হয়ে গ্রেপ্তার, জরিমানা, গাড়ি জব্দ

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

করোনার ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট ভেড়ে যাওয়ায় সরকার সারাদেশে লকডাউন ঘোষণা করেছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কাউকে ঘর থেকে বের না হওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে। লকডাউনের প্রথম দিনে নানা অজুহাতে অকারণে ঘর থেকে বের হওয়া এবং অযোচিত চলাচালের কারণে রাজধানীতে আটক করা হয়েছে ৪৯৭ জনকে। ঢাকার বাইরে বিভিন্ন জেলাও আটক করা হয়।

এর মধ্যে ২৫৮ জনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। বিভিন্ন ব্যক্তি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান জরিমানা করা হয়েছে প্রায় ৫ লাখ টাকা। এছাড়া ২৭৪টি গাড়ির বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হয়েছে, জরিমানা করা হয়েছে লাখ ৬৩ হাজার ৫০ টাকা। রেকারিং করা হয়েছে ৭৭টি গাড়ি আর জব্দ করা হয়েছে ছয়টি গাড়ি।

ডিএমপি থেকে জানানো হয়েছে ঢাক মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ৮টি বিভাগে ক্রাইম বিভাগ এবং ট্রাফিক বিভাগ একযোগে মাঠে অভিযান চালিয়েছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া যেসব ব্যক্তি অকারণে রাস্তায় ঘোরাফেরা করেছে এমন ব্যক্তিদের আটক করা হয়েছে। এছাড়া অকারণে যানবাহন নিয়ে রাস্তায় ঘোরাফেরা করার কারণে বিভিন্ন যানবাহন আটক করে মামলা রেকারিং এবং জব্দ করা হয়েছে। গতকাল প্রথম দিনে সকাল ৮ থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত পুলিশের এ তৎপরতা ছিল।

ডিএমিপর হিসাব অনুযায়ী, রমনা বিভাগে ৪৫টি গাড়ির বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। জরিমানা করা হয়েছে ৭৯ হাজার ৩৫০ টাকা। রেকারিং করা হয়েছে ৯টি গাড়ি। একই বিভাগে আটক করা হয়েছে ৫৭ জনকে। এর মধ্যে লকডাউন অমান্য করার ঘটনায় ২ জনের বিরুদ্ধ মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের জরিমানা করা হয়েছে ৫৮ হাজার ৫শ’ টাকা।

লালবাগ বিভাগে ৩৭টি গাড়ির বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। ৩৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এর মধ্যে মোবাইল কোর্টে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে ১৫ জনকে। বিভিন্ন বক্তি ও প্রতিষ্ঠানের মোট ৭৮ হাজার ১শ’ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। মতিঝিল বিভাগে ২৮টি গাড়ির বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে ৬০ হাজার ২শ’ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে ২ জনকে। ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের জরিমানা করা হয়েছে ৬৫ হাজার ৮৫০ টাকা।

হিসাব অনুযায়ী ওয়ারি বিভাগে ১৫ গাড়ির বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। জরিমানা করা হয়েছে ৭০ হাজার টাকা। গ্রেপ্তার করা হয়েছে ১৬ জনকে। সব মিলিয়ে জরিমানা করা হয়েছে ৭১ হাজার ৭শ’ টাকা। তেজাগাঁও বিভাগে ১২ গাড়ির বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। জরিমানা করা হয়েছে ২৩ হাজার ৮০০ টাকা। আটক করা হয়েছে ২৩২ জনকে। জরিমানা করা হয়েছে ৪৭ হাজার ৩শ’ টাকা। গুলশান বিভাগে ১৫ জনকে আটক ১৩১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জরিমানা করা হয়েছে ১ লাখ ২ হাজর ১০৭ টাকা। বিভিন্ন গাড়ির বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে ২১টি। উত্তরা বিভাগে ৩৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, ১৭ হাজা ৪শ’ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। বিভিন্ন গাড়ির বিরুদ্ধে মামলা ১৮টি।

পুলিশ জানিয়েছে, যারা লকডাউন আইন অমান্য করেছেন এবং সতর্ক করা সত্ত্বেও বাসায় ফিরে না গিয়ে অকারণে রাস্তায় চলাফেরা করেছেন এমন ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃদের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দেয়া হয়েছে। আটক ব্যক্তিদের জরিমানা করে মুচলেকায় ছেড়ে দেয়া হয়েছে। বিভিন্ন যানবাহনের জরিমানার পাশাপাশি প্রয়োজন ছাড়া রাস্তায় বের হওয়ার ক্ষেত্রে যেসব যানবানের মালিকদের বেশি অপরাধ পাওয়া গেছে সেসব যানবাহন রেকারিং করে জরিমানা করা হয়েছে।

পুলিশের ওয়ারী বিভাগের উপকমিশনার ইফতেখায়রুজ্জামান টেলিফোনে সংবাদকে জানান, সরকারের সংক্রমণ ব্যাধি নিরাময় আইনের অনুসরণ করে পুলিশ লকডাউন বাস্তবায়নে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করছে। সরকারের নির্দেশনা অমন্য করে রাস্তায় অকারণে যারা বের হচ্ছেন তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে। এখানে ম্যাজিস্টেট আটক, গ্রেপ্তার জরিমানা করছেন। পুলিশ তা বাস্তবায়নে সহযোগিতা করছে। যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ডিএমপি অ্যাক্টে বা ৫৪ ধারায় মামলা হবে।