খুলনা বিভাগে একদিনে ৪৬ জনের মৃত্যু

খুলনায় করোনাভাইরাস ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। বিভাগে গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে করোনা রোগী ভর্তির চাপ বাড়ছে। এ হাসপাতালে যে রোগী ভর্তি হচ্ছেন তাদের অধিকাংশই গ্রামের। করোনা শনাক্ত হয়েছে ১২৪৫ জনের। রংপুর, দিনাজপুর, নোয়াখালীর পরিস্থিতিও উদ্বেগজনক। এদিকে ‘দূষণ’ ছড়িয়ে পড়ায় খুলনা মেডিকেল কলেজের আরটি পিসিআর ল্যাবে গতকাল থেকে বন্ধ করা হয়েছে করোনার নমুনা পরীক্ষা। কঠোর লকডাউনেও সচল রয়েছে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম। অন্যান্য দিনের মতোই বন্দরে পেঁয়াজ, চাল, গম, ভুট্টা, পাথরসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি অব্যাহত রয়েছে।

খুলনা বিভাগে একদিনে ৪৬ মৃত্যুর রেকর্ড

খুলনা : এ বিভাগে করোনাভাইরাস ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। বিভাগে গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে, যা একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড। এ সময় নতুন করে ১২৪৫ জনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এর আগে গত মঙ্গলবার ৩২ জনের মৃত্যু হয়। বৃহস্পতিবার দুপুরে বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক রাশেদা সুলতানা এ তথ্য জানিয়েছেন।

রাশেদা বলেন, কোভিড সংক্রমণের শুরু থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত খুলনা বিভাগের ১০ জেলায় মোট ৫৭ হাজার ৫২০ জন করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছেন। এ সময় মারা গেছেন ১ হাজার ১০৫ জন। এদিকে খুলনা মেডিকেল কলেজের আরটি পিসিআর ল্যাবে ‘দূষণ’ ছড়িয়ে পড়ায় বৃহস্পতিবার থেকে তিনদিনের জন্য বন্ধ রয়েছে করোনার নমুনা পরীক্ষা।

তবে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও সদর হাসপাতালের করোনা ইউনিটে থাকা রোগীদের নমুনা পরীক্ষার প্রয়োজন হলে খুলনা মেডিকেল কলেজের আরটি পিসিআর ল্যাব থেকে কিট, রি-এজেন্ট নিয়ে ওখানকার জনবলই খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পিসিআর ল্যাবে শুধু পরীক্ষাগুলো করিয়ে আনবে। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পিসিআর ল্যাবে একদিনে মাত্র ৯৪টি নমুনা পরীক্ষার

খুলনা : পৃষ্ঠা : ১১ ক : ৫

খুলনা : বিভাগে

(১ম পৃষ্ঠার পর)

সুযোগ রয়েছে। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা প্রতিরোধ ও চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা বিষয়ক কমিটির সভাপতি এবং খুলনা মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ ডা. মেহেদী নেওয়াজ এ তথ্য জানিয়েছেন।

ডা. মেহেদী বলেন, বুধবার প্রায় সাড়ে পাঁচশ’র মতো নমুনা পরীক্ষার সময় দেখা যায়, সবগুলোই পজেটিভ। এরপর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ‘ল্যাব দূষণ’র বিষয়টি ধরা পড়লে বৃহস্পতিবার থেকে ল্যাবটির কার্যক্রম বন্ধ করে ‘দূষণমুক্ত’ করার সিদ্ধান্ত হয়।

মেহেদী আরও বলেন, পিসিআর ল্যাবে পরীক্ষা স্বাভাবিক রাখতে হলে প্রতিমাসে অন্তত একবার ল্যাব ‘দূষণমুক্ত’ করা প্রয়োজন। কিন্তু গত বছরের ৭ এপ্রিল থেকে খুলনা মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাবটি চালুর পর কখনই তা করা হয়নি। কেননা একবার ‘দূষণমুক্ত’ করতে হলে ল্যাব অন্তত দুদিন বন্ধ রাখতে হয়। কিন্তু এ ল্যাবে প্রচুর চাপ ছিল। যে কারণে মাসে দুদিন বন্ধ রাখা সম্ভব হয়নি।

বুধবার যেসব নমুনা পরীক্ষার ফলাফল দেয়া সম্ভব হয়নি সেগুলোর জন্য আর নতুন করে নমুনা নেয়ার প্রয়োজন নেই উল্লেখ করে মেহেদী বলেন, তাদের নমুনা যেহেতু রেখে দেয়া হয়েছিল পরবর্তীতে ঢাকা থেকে অথবা এ ল্যাবটি পুনরায় চালু হলে পরীক্ষা করা হবে। এদিকে পরিস্থিতির অবনতি হলেও মানছে না বিধিনিষেধ।

কুষ্টিয়ায় হাসপাতালে রোগী ভর্তির চাপ বাড়ছে

কুষ্টিয়া : কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে করোনা রোগী ভর্তির চাপ বাড়ছে। হাসপাতালে যে রোগী আসছেন তাদের অধিকাংশই গ্রামের। হাসপাতালের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ এএসএম মুসা কবির এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, কুষ্টিয়ার গ্রামের প্রতি ঘরে ঘরে জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে সবাইকে খোঁজ নিতে হবে। কারও জ্বর, ঠাণ্ডা, কাশি জাতীয় উপসর্গ দেখা দিলেই তাকে আইসোলেশনে রাখতে হবে। দ্রুত চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে। চিকিৎসা নিতে যত দেরি হবে, মৃত্যুর ঝুঁকি তত বাড়বে।

সিভিল সার্জন এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, মানুষকে সচেতন করা ছাড়া করোনা সংক্রমণ মোকাবিলার পথ নেই। জেলায় করোনায় আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে ৩২৪ জন। এদিন মারা গেছেন ৯ জন। বুধবার কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের পিসিআর ল্যাব ও র‌্যাপিড এন্টিজন টেস্ট মিলিয়ে মোট ৮৩০টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এটাই একদিনে সর্বোচ্চ আক্রান্ত কুষ্টিয়া জেলায়। এদিন শনাক্তের হার হয়েছে ৩৯ শতাংশ।

যশোরে মৃত্যু দেড়শ’ ছাড়ালো

যশোর : জেলায় করোনায় মৃতের সংখ্যা দেড়শ’ ছাড়ালো। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আরও ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। করোনা শনাক্ত হয়েছে ১৪২ জনের। ৫৩৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করে শনাক্তের এই সংখ্যা পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার যশোর সিভিল সার্জন অফিস এ তথ্য জানিয়েছে।

যশোর সিভিল সার্জন অফিসের তথ্য কর্মকর্তা ডা. মো. রেহেনেওয়াজ জানিয়েছেন, শনাক্তের হার ২৬ শতাংশ।

যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আরিফ আহমেদ জানিয়েছেন, করোনায় আক্রান্ত হয়ে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন ৪ জন। এছাড়া উপসর্গ নিয়ে মৃত্যু হয়েছে ৫ জনের। যশোর হাসপাতালের রেডজোনে এখন ভর্তি আছেন ১০৩ জন। এছাড়া উপসর্গ নিয়ে ইয়েলো জোনে ভর্তি আছেন আরও ৬১ জন।

যশোরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কাজী সায়েমুজ্জামান জানান, যশোরে করোনা সংক্রমণ বেড়েই চলেছে।

রংপুর বিভাগে আরও ১০ জনের মৃত্যু

রংপুর : গত ২৪ ঘণ্টায় রংপুর বিভাগের ৮ জেলায় দুই নারীসহ ১০ জন মারা গেছে। মোট ১১৪০ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৪৬৫ জনের করোনা পজিটিভ হয়েছে। দিনাজপুরে সর্বোচ্চ ১৫১ জন এবং ঠাকুরগাঁয়ে ১০৮ জনের করোনা পজেটিভ হয়েছে

এদিকে করোনা হয়ে ১০ জনের মারা যাবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রংপুর বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক ডা. জাকিরুল ইসলাম। এ নিয়ে রংপুর বিভাগে করোনায় মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ৫২৯ জনে।

চট্টগ্রামে ৫৫২ জনের করোনা শনাক্ত

চট্টগ্রাম : চট্টগ্রামে ২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড ৫৫২ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এই সময় মৃত্যু হয়েছে পাঁচজনের। জেলায় গত ১৪ মাসে একদিনে এত রোগী শনাক্ত হয়নি। ২৪ ঘণ্টায় ২ হাজার ৬২ জনের করোনার নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। সংক্রমণের হার ২৬ দশমিক ৭৭ শতাংশ।

দিনাজপুরে আক্রান্ত ১৫১

দিনাজপুর : গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে জেলায় মারা গেছেন আরও ৪ জন। এ নিয়ে জেলায় মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ১৭১ জনে। গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৯৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ১৫১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৮ দশমিক ২২ শতাংশ। এ নিয়ে জেলায় মোট শনাক্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৮ হাজার ৬১৯ জনে। হাসপাতালে ভর্তি আছেন ১৭০ জন। এদের মধ্যে কোভিড-১৯ পজেটিভ ৮৪ জন ও উপসর্গযুক্ত সন্দেহভাজন রোগী ৮৬ জন।

এদিকে করোনা সংক্রমণ রোধে সরকার ঘোষিত কঠোর লকডাউনেও সচল রয়েছে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম। অন্যান্য দিনের মতোই চলছে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে পণ্য আমদানি-রপ্তানি ও ছাড়করণ কাজ। ফলে বন্দরে পেঁয়াজ, চাল, গম, ভুট্টা, পাথরসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি অব্যাহত রয়েছে।

হিলি স্থলবন্দরের বেসরকারি অপারেটর প্রতিষ্ঠান হিলি পানামা পোর্টের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন প্রতাব মল্লিক বলেন, লকডাউন চলাকালে বন্দরের কার্যক্রম বন্ধ রাখার কোন সরকারি নির্দেশনা না থাকায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে বন্দরের আমদানি-রপ্তানি, পণ্য ট্রাকে ওঠা-নামার কাজ স্বাভাবিক নিয়মেই চলছে।

রামেক হাসপাতালে আরও ২২ জনের মৃত্যু

রাজশাহী ঃ রামেক হাসপাতালে আরও ২২ জনের মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী জানান, নতুন মারা যাওয়াদের ১৪ জনই রাজশাহীর। বাকিদের মধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জের একজন, নাটোরের একজন, নওগাঁর পাঁচজন। এদের মধ্যে ১২ জন পুরুষ ও ১০ জন নারী।

মারা যাওয়াদের মধ্যে নয় জনের বয়স ৬১ বছরের উপরে। বাকিদের মধ্যে ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে চারজন, ৪১ থেকে ৫০ বছর বয়সের মধ্যে চারজন, ৩১ থেকে ৪০ বছর বয়সের দুইজন এবং ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে তিনজন। এদের মধ্যে পাঁচজন মারা যান আইসিইউতে।

দক্ষিণাঞ্চলে ২৮৬ জন আক্রান্ত

বরিশাল : দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলায় ৭২৬ জনের নমুনা পরীক্ষায় এ বছরের একদিনে সর্বোচ্চ ২৮৬ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ মধ্যে বরিশাল মহানগরীতে ৫৫ জনসহ জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৮৫। মৃত্যুর সংখ্যাও ৬ জনে উন্নীত হয়েছে।

জুন মাসের ৩০ দিনে দক্ষিণাঞ্চলে নতুন ২ হাজার ৩৮০ জন সংক্রমণ ও মৃত্যু হয়েছে ২৫ জনের।

দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলায় শনাক্তের হার বৃহস্পতিবার ছিল ১৫.২৯%। গত ১০ দিনে এ অঞ্চলে শনাক্তের হার দশমিক ৬৬ ভাগ বেড়েছে।

নোয়াখালীতে শনাক্তের হার ২৮.৩৫

নোয়াখালী : জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১২৭ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। ৪৪৮ জনের নমুনা পরীক্ষায় এ ফল পাওয়া যায়। শনাক্তের হার ২৮ দশমিক ৩৫ শতাংশ। জেলায় মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এগারো হাজার ৩০২ জন। আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন রোগীর সংখ্যা তিন হাজার ৬৭১ জন। কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে (শহীদ ভুলু স্টেডিয়াম) ভর্তি রয়েছেন ৩৭ জন ও আইসোলেশনে রয়েছেন ১৭ জন।

শুক্রবার, ০২ জুলাই ২০২১ , ১৮ আষাঢ় ১৪২৮ ২০ জিলক্বদ ১৪৪২

খুলনা বিভাগে একদিনে ৪৬ জনের মৃত্যু

সংবাদ ডেস্ক

খুলনায় করোনাভাইরাস ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। বিভাগে গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে করোনা রোগী ভর্তির চাপ বাড়ছে। এ হাসপাতালে যে রোগী ভর্তি হচ্ছেন তাদের অধিকাংশই গ্রামের। করোনা শনাক্ত হয়েছে ১২৪৫ জনের। রংপুর, দিনাজপুর, নোয়াখালীর পরিস্থিতিও উদ্বেগজনক। এদিকে ‘দূষণ’ ছড়িয়ে পড়ায় খুলনা মেডিকেল কলেজের আরটি পিসিআর ল্যাবে গতকাল থেকে বন্ধ করা হয়েছে করোনার নমুনা পরীক্ষা। কঠোর লকডাউনেও সচল রয়েছে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম। অন্যান্য দিনের মতোই বন্দরে পেঁয়াজ, চাল, গম, ভুট্টা, পাথরসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি অব্যাহত রয়েছে।

খুলনা বিভাগে একদিনে ৪৬ মৃত্যুর রেকর্ড

খুলনা : এ বিভাগে করোনাভাইরাস ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। বিভাগে গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে, যা একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড। এ সময় নতুন করে ১২৪৫ জনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এর আগে গত মঙ্গলবার ৩২ জনের মৃত্যু হয়। বৃহস্পতিবার দুপুরে বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক রাশেদা সুলতানা এ তথ্য জানিয়েছেন।

রাশেদা বলেন, কোভিড সংক্রমণের শুরু থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত খুলনা বিভাগের ১০ জেলায় মোট ৫৭ হাজার ৫২০ জন করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছেন। এ সময় মারা গেছেন ১ হাজার ১০৫ জন। এদিকে খুলনা মেডিকেল কলেজের আরটি পিসিআর ল্যাবে ‘দূষণ’ ছড়িয়ে পড়ায় বৃহস্পতিবার থেকে তিনদিনের জন্য বন্ধ রয়েছে করোনার নমুনা পরীক্ষা।

তবে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও সদর হাসপাতালের করোনা ইউনিটে থাকা রোগীদের নমুনা পরীক্ষার প্রয়োজন হলে খুলনা মেডিকেল কলেজের আরটি পিসিআর ল্যাব থেকে কিট, রি-এজেন্ট নিয়ে ওখানকার জনবলই খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পিসিআর ল্যাবে শুধু পরীক্ষাগুলো করিয়ে আনবে। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পিসিআর ল্যাবে একদিনে মাত্র ৯৪টি নমুনা পরীক্ষার

খুলনা : পৃষ্ঠা : ১১ ক : ৫

খুলনা : বিভাগে

(১ম পৃষ্ঠার পর)

সুযোগ রয়েছে। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা প্রতিরোধ ও চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা বিষয়ক কমিটির সভাপতি এবং খুলনা মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ ডা. মেহেদী নেওয়াজ এ তথ্য জানিয়েছেন।

ডা. মেহেদী বলেন, বুধবার প্রায় সাড়ে পাঁচশ’র মতো নমুনা পরীক্ষার সময় দেখা যায়, সবগুলোই পজেটিভ। এরপর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ‘ল্যাব দূষণ’র বিষয়টি ধরা পড়লে বৃহস্পতিবার থেকে ল্যাবটির কার্যক্রম বন্ধ করে ‘দূষণমুক্ত’ করার সিদ্ধান্ত হয়।

মেহেদী আরও বলেন, পিসিআর ল্যাবে পরীক্ষা স্বাভাবিক রাখতে হলে প্রতিমাসে অন্তত একবার ল্যাব ‘দূষণমুক্ত’ করা প্রয়োজন। কিন্তু গত বছরের ৭ এপ্রিল থেকে খুলনা মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাবটি চালুর পর কখনই তা করা হয়নি। কেননা একবার ‘দূষণমুক্ত’ করতে হলে ল্যাব অন্তত দুদিন বন্ধ রাখতে হয়। কিন্তু এ ল্যাবে প্রচুর চাপ ছিল। যে কারণে মাসে দুদিন বন্ধ রাখা সম্ভব হয়নি।

বুধবার যেসব নমুনা পরীক্ষার ফলাফল দেয়া সম্ভব হয়নি সেগুলোর জন্য আর নতুন করে নমুনা নেয়ার প্রয়োজন নেই উল্লেখ করে মেহেদী বলেন, তাদের নমুনা যেহেতু রেখে দেয়া হয়েছিল পরবর্তীতে ঢাকা থেকে অথবা এ ল্যাবটি পুনরায় চালু হলে পরীক্ষা করা হবে। এদিকে পরিস্থিতির অবনতি হলেও মানছে না বিধিনিষেধ।

কুষ্টিয়ায় হাসপাতালে রোগী ভর্তির চাপ বাড়ছে

কুষ্টিয়া : কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে করোনা রোগী ভর্তির চাপ বাড়ছে। হাসপাতালে যে রোগী আসছেন তাদের অধিকাংশই গ্রামের। হাসপাতালের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ এএসএম মুসা কবির এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, কুষ্টিয়ার গ্রামের প্রতি ঘরে ঘরে জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে সবাইকে খোঁজ নিতে হবে। কারও জ্বর, ঠাণ্ডা, কাশি জাতীয় উপসর্গ দেখা দিলেই তাকে আইসোলেশনে রাখতে হবে। দ্রুত চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে। চিকিৎসা নিতে যত দেরি হবে, মৃত্যুর ঝুঁকি তত বাড়বে।

সিভিল সার্জন এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, মানুষকে সচেতন করা ছাড়া করোনা সংক্রমণ মোকাবিলার পথ নেই। জেলায় করোনায় আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে ৩২৪ জন। এদিন মারা গেছেন ৯ জন। বুধবার কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের পিসিআর ল্যাব ও র‌্যাপিড এন্টিজন টেস্ট মিলিয়ে মোট ৮৩০টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এটাই একদিনে সর্বোচ্চ আক্রান্ত কুষ্টিয়া জেলায়। এদিন শনাক্তের হার হয়েছে ৩৯ শতাংশ।

যশোরে মৃত্যু দেড়শ’ ছাড়ালো

যশোর : জেলায় করোনায় মৃতের সংখ্যা দেড়শ’ ছাড়ালো। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আরও ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। করোনা শনাক্ত হয়েছে ১৪২ জনের। ৫৩৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করে শনাক্তের এই সংখ্যা পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার যশোর সিভিল সার্জন অফিস এ তথ্য জানিয়েছে।

যশোর সিভিল সার্জন অফিসের তথ্য কর্মকর্তা ডা. মো. রেহেনেওয়াজ জানিয়েছেন, শনাক্তের হার ২৬ শতাংশ।

যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আরিফ আহমেদ জানিয়েছেন, করোনায় আক্রান্ত হয়ে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন ৪ জন। এছাড়া উপসর্গ নিয়ে মৃত্যু হয়েছে ৫ জনের। যশোর হাসপাতালের রেডজোনে এখন ভর্তি আছেন ১০৩ জন। এছাড়া উপসর্গ নিয়ে ইয়েলো জোনে ভর্তি আছেন আরও ৬১ জন।

যশোরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কাজী সায়েমুজ্জামান জানান, যশোরে করোনা সংক্রমণ বেড়েই চলেছে।

রংপুর বিভাগে আরও ১০ জনের মৃত্যু

রংপুর : গত ২৪ ঘণ্টায় রংপুর বিভাগের ৮ জেলায় দুই নারীসহ ১০ জন মারা গেছে। মোট ১১৪০ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৪৬৫ জনের করোনা পজিটিভ হয়েছে। দিনাজপুরে সর্বোচ্চ ১৫১ জন এবং ঠাকুরগাঁয়ে ১০৮ জনের করোনা পজেটিভ হয়েছে

এদিকে করোনা হয়ে ১০ জনের মারা যাবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রংপুর বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক ডা. জাকিরুল ইসলাম। এ নিয়ে রংপুর বিভাগে করোনায় মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ৫২৯ জনে।

চট্টগ্রামে ৫৫২ জনের করোনা শনাক্ত

চট্টগ্রাম : চট্টগ্রামে ২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড ৫৫২ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এই সময় মৃত্যু হয়েছে পাঁচজনের। জেলায় গত ১৪ মাসে একদিনে এত রোগী শনাক্ত হয়নি। ২৪ ঘণ্টায় ২ হাজার ৬২ জনের করোনার নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। সংক্রমণের হার ২৬ দশমিক ৭৭ শতাংশ।

দিনাজপুরে আক্রান্ত ১৫১

দিনাজপুর : গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে জেলায় মারা গেছেন আরও ৪ জন। এ নিয়ে জেলায় মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ১৭১ জনে। গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৯৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ১৫১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৮ দশমিক ২২ শতাংশ। এ নিয়ে জেলায় মোট শনাক্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৮ হাজার ৬১৯ জনে। হাসপাতালে ভর্তি আছেন ১৭০ জন। এদের মধ্যে কোভিড-১৯ পজেটিভ ৮৪ জন ও উপসর্গযুক্ত সন্দেহভাজন রোগী ৮৬ জন।

এদিকে করোনা সংক্রমণ রোধে সরকার ঘোষিত কঠোর লকডাউনেও সচল রয়েছে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম। অন্যান্য দিনের মতোই চলছে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে পণ্য আমদানি-রপ্তানি ও ছাড়করণ কাজ। ফলে বন্দরে পেঁয়াজ, চাল, গম, ভুট্টা, পাথরসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি অব্যাহত রয়েছে।

হিলি স্থলবন্দরের বেসরকারি অপারেটর প্রতিষ্ঠান হিলি পানামা পোর্টের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন প্রতাব মল্লিক বলেন, লকডাউন চলাকালে বন্দরের কার্যক্রম বন্ধ রাখার কোন সরকারি নির্দেশনা না থাকায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে বন্দরের আমদানি-রপ্তানি, পণ্য ট্রাকে ওঠা-নামার কাজ স্বাভাবিক নিয়মেই চলছে।

রামেক হাসপাতালে আরও ২২ জনের মৃত্যু

রাজশাহী ঃ রামেক হাসপাতালে আরও ২২ জনের মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী জানান, নতুন মারা যাওয়াদের ১৪ জনই রাজশাহীর। বাকিদের মধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জের একজন, নাটোরের একজন, নওগাঁর পাঁচজন। এদের মধ্যে ১২ জন পুরুষ ও ১০ জন নারী।

মারা যাওয়াদের মধ্যে নয় জনের বয়স ৬১ বছরের উপরে। বাকিদের মধ্যে ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে চারজন, ৪১ থেকে ৫০ বছর বয়সের মধ্যে চারজন, ৩১ থেকে ৪০ বছর বয়সের দুইজন এবং ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে তিনজন। এদের মধ্যে পাঁচজন মারা যান আইসিইউতে।

দক্ষিণাঞ্চলে ২৮৬ জন আক্রান্ত

বরিশাল : দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলায় ৭২৬ জনের নমুনা পরীক্ষায় এ বছরের একদিনে সর্বোচ্চ ২৮৬ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ মধ্যে বরিশাল মহানগরীতে ৫৫ জনসহ জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৮৫। মৃত্যুর সংখ্যাও ৬ জনে উন্নীত হয়েছে।

জুন মাসের ৩০ দিনে দক্ষিণাঞ্চলে নতুন ২ হাজার ৩৮০ জন সংক্রমণ ও মৃত্যু হয়েছে ২৫ জনের।

দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলায় শনাক্তের হার বৃহস্পতিবার ছিল ১৫.২৯%। গত ১০ দিনে এ অঞ্চলে শনাক্তের হার দশমিক ৬৬ ভাগ বেড়েছে।

নোয়াখালীতে শনাক্তের হার ২৮.৩৫

নোয়াখালী : জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১২৭ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। ৪৪৮ জনের নমুনা পরীক্ষায় এ ফল পাওয়া যায়। শনাক্তের হার ২৮ দশমিক ৩৫ শতাংশ। জেলায় মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এগারো হাজার ৩০২ জন। আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন রোগীর সংখ্যা তিন হাজার ৬৭১ জন। কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে (শহীদ ভুলু স্টেডিয়াম) ভর্তি রয়েছেন ৩৭ জন ও আইসোলেশনে রয়েছেন ১৭ জন।