শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলবে কবে?

২০২০ সালে ৮ মার্চ বাংলাদেশে করোনা শনাক্ত হওয়ার পর সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয় সরকার। ২০২০ সালের ২৬ মার্চ সারাদেশে কঠোর বিধিনিষেধ শুরু হয় এবং এখন পর্যন্ত ৬ দফায় মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। অর্থনীতি স্থিতিশীল রাখতে সব কিছু আংশিকভাবে চললেও গত ১৫ মাস পুরোপুরিভাবে বন্ধ রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের সকল ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এই পরিস্থিতিতে মানসিকভাবে বিষাদগ্রস্ত শিক্ষার্থীরা।

প্রাথমিক শিক্ষাঙ্গনের হৈচৈ, খেলাধুলাই মেতে ওঠা রঙিন দিনগুলো থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিশুরা। বেশি বিপাকে পড়ছে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা। এদিকে সেশনজট অন্য দিকে চাকরির বয়স নিয়ে দুশ্চিন্তায় ভুগছে তারা। সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অনলাইনের মাধ্যমে ক্লাস নেয়ার ব্যবস্থা করা হলেও অধিকাংশ শিক্ষার্থী নেটওয়ার্ক সমস্যার কারণে ক্লাসে যুক্ত হতে পারেনি। করোনাভাইরাস মহামারিকালে শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে এক বেসরকারি গবেষণায় উঠে এসেছে যে দেশের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ে ৬৯.৫ শতাংশ শিক্ষার্থী দূরশিক্ষণে অংশই নিতে পারেনি। উচ্চমাধ্যমিক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদেরও একই অবস্থা।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে ঝরে পড়েছে অনেক শিক্ষার্থী। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকে বেশিরভাগ মেয়ে শিক্ষার্থী বাল্যবিবাহের শিকার হয়েছে। করোনাই আর্থিক সংকট কমাতে ছেলেরা যুক্ত হয়েছে নানা ধরনের পেশায়, দূরে সরে এসেছে পড়াশোনা থেকে। অনেকে আবার সময় কাটাতে আসক্ত হয়ে গেছে ইন্টারনেট গেমসে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অধিকাংশ টিউশনির মাধ্যমে নিজের পড়ালেখার খরচ চালিয়ে থাকে। অনেকে আবার পরিবারেও টাকা পাঠায়। কিন্তু প্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ায় তারা হারিয়েছে তাদের উপার্জন। শিক্ষার্থীদের বাবা মায়েরাও সন্তানের পড়ালেখা এবং ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন।

গবেষকরা বলছেন, করোনার সংক্রমণ আগামী তিন/চার বছর থাকতে পারে। একইভাবে যদি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকে তাহলে শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে। সরকারকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার জন্য দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। শিক্ষক শিক্ষার্থী এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কার্যরত সব কর্মচারী কর্মকর্তাদের করোনা টিকার আওতায় আনতে হবে। সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। শিক্ষার্থীরা যেন সব ধরনের স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্লাস, পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে সেই ব্যাপারে শিক্ষকদের কড়া নজরদারি রাখতে হবে।

শাপলা খাতুন

বুধবার, ১৯ মে ২০২১ , ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ ৬ শাওয়াল ১৪৪২

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলবে কবে?

২০২০ সালে ৮ মার্চ বাংলাদেশে করোনা শনাক্ত হওয়ার পর সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয় সরকার। ২০২০ সালের ২৬ মার্চ সারাদেশে কঠোর বিধিনিষেধ শুরু হয় এবং এখন পর্যন্ত ৬ দফায় মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। অর্থনীতি স্থিতিশীল রাখতে সব কিছু আংশিকভাবে চললেও গত ১৫ মাস পুরোপুরিভাবে বন্ধ রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের সকল ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এই পরিস্থিতিতে মানসিকভাবে বিষাদগ্রস্ত শিক্ষার্থীরা।

প্রাথমিক শিক্ষাঙ্গনের হৈচৈ, খেলাধুলাই মেতে ওঠা রঙিন দিনগুলো থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিশুরা। বেশি বিপাকে পড়ছে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা। এদিকে সেশনজট অন্য দিকে চাকরির বয়স নিয়ে দুশ্চিন্তায় ভুগছে তারা। সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অনলাইনের মাধ্যমে ক্লাস নেয়ার ব্যবস্থা করা হলেও অধিকাংশ শিক্ষার্থী নেটওয়ার্ক সমস্যার কারণে ক্লাসে যুক্ত হতে পারেনি। করোনাভাইরাস মহামারিকালে শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে এক বেসরকারি গবেষণায় উঠে এসেছে যে দেশের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ে ৬৯.৫ শতাংশ শিক্ষার্থী দূরশিক্ষণে অংশই নিতে পারেনি। উচ্চমাধ্যমিক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদেরও একই অবস্থা।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে ঝরে পড়েছে অনেক শিক্ষার্থী। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকে বেশিরভাগ মেয়ে শিক্ষার্থী বাল্যবিবাহের শিকার হয়েছে। করোনাই আর্থিক সংকট কমাতে ছেলেরা যুক্ত হয়েছে নানা ধরনের পেশায়, দূরে সরে এসেছে পড়াশোনা থেকে। অনেকে আবার সময় কাটাতে আসক্ত হয়ে গেছে ইন্টারনেট গেমসে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অধিকাংশ টিউশনির মাধ্যমে নিজের পড়ালেখার খরচ চালিয়ে থাকে। অনেকে আবার পরিবারেও টাকা পাঠায়। কিন্তু প্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ায় তারা হারিয়েছে তাদের উপার্জন। শিক্ষার্থীদের বাবা মায়েরাও সন্তানের পড়ালেখা এবং ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন।

গবেষকরা বলছেন, করোনার সংক্রমণ আগামী তিন/চার বছর থাকতে পারে। একইভাবে যদি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকে তাহলে শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে। সরকারকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার জন্য দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। শিক্ষক শিক্ষার্থী এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কার্যরত সব কর্মচারী কর্মকর্তাদের করোনা টিকার আওতায় আনতে হবে। সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। শিক্ষার্থীরা যেন সব ধরনের স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্লাস, পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে সেই ব্যাপারে শিক্ষকদের কড়া নজরদারি রাখতে হবে।

শাপলা খাতুন