বগুড়ায় ৯ মাসেও খোঁজ নেই সিজানের

সিজানের বয়সের ছেলেদের দেখলেই সিজানের মায়ের বুক ফেটে যায়। সিজানের জন্য কেঁদে কেঁদে তার চোখের নিচে কালো দাগ পড়েছে। ফকির ও গুণীনদের কথায় ছেলের খোঁজে কত জায়গায় ছুটে গেছে। না, গত নয় মাসেও সিজানের খোঁজ মেলেনি। থানায় জিডি হয়েছে। সিজানের বাবা নাসির শিকদার ছেলের খোঁজে থানাতেও ধর্না দিয়েছে। গরিব মানুষ, এক দিন কাজে না গেলে হেসেলে হাঁড়ি ওঠে না। তাই নাসির সিকদারের পক্ষে নিখোঁজ ছেলের সন্ধানে পুলিশের সাথে লেগে থাকা সম্ভব হয়নি। ফলে যা হবার তাই হয়েছে। নয় মাসেও খোঁজ মেলেনি বলে প্রশ্ন উঠেছে সিজান কী বেঁচে আছে ? না তাকে পাচার করা হয়েছে ? না কী সে আতœগোপন করে আছে ? ১৩ বছর বয়সের সিজান বগুড়া শহরের হাকির মোড় এলাকায় জহুরুল ইসলাম বাপ্পীর মালিকানাধীন ‘জ্যোতি জান্নাতি এন্টারপ্রাইজ’ নামে অটোরিক্সা মেরামতের দোকানে কাজ করতো। সিজানরা শহরের শিববাটি পাড়ার কোরবান আলীর বাসার ভাড়াটিয়া।

নিখোঁজ হবার দিন ১ এপ্রিল (২০২১) সে ওই বাসা থেকে তার কর্মস্থল হাকির মোড়ে অবস্থিত জহুরুল ইসলাম বাপ্পীর অটোরিক্সা মেরামতের দোকানে যায়। প্রতিদিন দুপুরে ওই গ্যারেজ মালিকের বাসায় সে ভাত খেত। ওইদিনেও দুপুরে সে তার মালিকের বাসায় খাওয়া দাওয়া করেছে। প্রতিদিনের মতো কাজ শেষে বাড়িতে না ফিরলে সিজানের বাবা তার ছেলের সন্ধানে দোকান মালিকের কাছে যায়।

দোকান মালিক সিজানের বাবা নাসির সিকদারকে জানায়, তার ছেলে সাতদিন ধরে কাজে আসেনি ! সিজান নিখোঁজ হবার পর তার বাবা নাসির সিকদার থানায় জিডি করেন। জিডির সূত্রে প্রাথমিক তদন্তে নেমে ফুলবাড়ি পুলিশ ফাঁড়ির এসআই মো. নজরুল ইসলাম জানতে পারেন অটোরিক্সা মেরামতের দোকানের মালিক জহুরুল ইসলাম বাপ্পীর সাতদিন ধরে সিজানের দোকানে না যাওয়ার কথা বলা ঠিক ছিল না। ওই দোকানের আশেপাশের দোকানদাররা সিজানকে নিয়মিত অটোরিক্সা মেরামতের দোকানে আসা যাওয়া করতে দেখেছেন। ঘটনাটি পুলিশে গড়ালে জহুরুল ইসলাম বাপ্পী তার অটোরিক্সা মেরামতের দোকান বিক্রি করে দেয়। আরও আশ্চর্যের বিষয় তার দোকান লুটপাটের অভিযোগে নিখোঁজ সিজানের বাবা নাসির সিকদারের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এসব ঘটনায় সিজানের নিখোঁজ হওয়া নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। সিজান কি সত্যই নিখোঁজ হয়েছে? না পাচারের শিকার হয়েছে? না নিজে থেকে আত্মগোপনে রয়েছে। কেউ কেউ বলছেন সিজানকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে! পুলিশের জোরালো তদন্ত হলে এই সব প্রশ্নের জবাব মিলতে পারে। নিখোঁজ সিজানের গরিব পিতা মাতা সেই আশায় পথ চেয়ে আছেন।

ফুলবাড়ী ফাঁড়ির এসআই নজরুল ইসলাম জানান, বিষয়টি তদন্ত চলছে। এখনও তেমনকিছু পাওয়া যায়নি।

সোমবার, ১০ জানুয়ারী ২০২২ , ২৬ পৌষ ১৪২৮ ৬ জমাদিউস সানি ১৪৪৩

বগুড়ায় ৯ মাসেও খোঁজ নেই সিজানের

প্রতিনিধি, বগুড়া

সিজানের বয়সের ছেলেদের দেখলেই সিজানের মায়ের বুক ফেটে যায়। সিজানের জন্য কেঁদে কেঁদে তার চোখের নিচে কালো দাগ পড়েছে। ফকির ও গুণীনদের কথায় ছেলের খোঁজে কত জায়গায় ছুটে গেছে। না, গত নয় মাসেও সিজানের খোঁজ মেলেনি। থানায় জিডি হয়েছে। সিজানের বাবা নাসির শিকদার ছেলের খোঁজে থানাতেও ধর্না দিয়েছে। গরিব মানুষ, এক দিন কাজে না গেলে হেসেলে হাঁড়ি ওঠে না। তাই নাসির সিকদারের পক্ষে নিখোঁজ ছেলের সন্ধানে পুলিশের সাথে লেগে থাকা সম্ভব হয়নি। ফলে যা হবার তাই হয়েছে। নয় মাসেও খোঁজ মেলেনি বলে প্রশ্ন উঠেছে সিজান কী বেঁচে আছে ? না তাকে পাচার করা হয়েছে ? না কী সে আতœগোপন করে আছে ? ১৩ বছর বয়সের সিজান বগুড়া শহরের হাকির মোড় এলাকায় জহুরুল ইসলাম বাপ্পীর মালিকানাধীন ‘জ্যোতি জান্নাতি এন্টারপ্রাইজ’ নামে অটোরিক্সা মেরামতের দোকানে কাজ করতো। সিজানরা শহরের শিববাটি পাড়ার কোরবান আলীর বাসার ভাড়াটিয়া।

নিখোঁজ হবার দিন ১ এপ্রিল (২০২১) সে ওই বাসা থেকে তার কর্মস্থল হাকির মোড়ে অবস্থিত জহুরুল ইসলাম বাপ্পীর অটোরিক্সা মেরামতের দোকানে যায়। প্রতিদিন দুপুরে ওই গ্যারেজ মালিকের বাসায় সে ভাত খেত। ওইদিনেও দুপুরে সে তার মালিকের বাসায় খাওয়া দাওয়া করেছে। প্রতিদিনের মতো কাজ শেষে বাড়িতে না ফিরলে সিজানের বাবা তার ছেলের সন্ধানে দোকান মালিকের কাছে যায়।

দোকান মালিক সিজানের বাবা নাসির সিকদারকে জানায়, তার ছেলে সাতদিন ধরে কাজে আসেনি ! সিজান নিখোঁজ হবার পর তার বাবা নাসির সিকদার থানায় জিডি করেন। জিডির সূত্রে প্রাথমিক তদন্তে নেমে ফুলবাড়ি পুলিশ ফাঁড়ির এসআই মো. নজরুল ইসলাম জানতে পারেন অটোরিক্সা মেরামতের দোকানের মালিক জহুরুল ইসলাম বাপ্পীর সাতদিন ধরে সিজানের দোকানে না যাওয়ার কথা বলা ঠিক ছিল না। ওই দোকানের আশেপাশের দোকানদাররা সিজানকে নিয়মিত অটোরিক্সা মেরামতের দোকানে আসা যাওয়া করতে দেখেছেন। ঘটনাটি পুলিশে গড়ালে জহুরুল ইসলাম বাপ্পী তার অটোরিক্সা মেরামতের দোকান বিক্রি করে দেয়। আরও আশ্চর্যের বিষয় তার দোকান লুটপাটের অভিযোগে নিখোঁজ সিজানের বাবা নাসির সিকদারের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এসব ঘটনায় সিজানের নিখোঁজ হওয়া নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। সিজান কি সত্যই নিখোঁজ হয়েছে? না পাচারের শিকার হয়েছে? না নিজে থেকে আত্মগোপনে রয়েছে। কেউ কেউ বলছেন সিজানকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে! পুলিশের জোরালো তদন্ত হলে এই সব প্রশ্নের জবাব মিলতে পারে। নিখোঁজ সিজানের গরিব পিতা মাতা সেই আশায় পথ চেয়ে আছেন।

ফুলবাড়ী ফাঁড়ির এসআই নজরুল ইসলাম জানান, বিষয়টি তদন্ত চলছে। এখনও তেমনকিছু পাওয়া যায়নি।