বাংলাদেশের পক্ষ থেকে দেয়া ১ লাখ রোহিঙ্গার তালিকা থেকে মাত্র ৮ হাজার রোহিঙ্গাকে মায়ানমার সরকার স্বীকৃতি দিয়েছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আবদুল মোমেন। গতকাল শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে ‘ফ্ল্যাশ অন রোহিঙ্গা জেনোসাইড’ শীর্ষক আলোকচিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা বলেন। তিনি বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু করতে সম্প্রতি কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনের জন্য মায়ানমারের কাছে চিঠি দেয়া হয়েছে। কিন্তু তারা এখনও এই বিষয়ে কিছু জানায়নি আন্তর্জাতিক আদালতে রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগে মায়ানমারের শুনানির মুখোমুখি হওয়ার প্রসঙ্গ টেনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলে, একে আবদুল মোমেন বলেন, রোহিঙ্গা ‘হত্যাযজ্ঞ’ চালানোর বিষয়ে সেখানে অস্বীকার করেনি মায়ানমার। তবে ‘গণহত্যা’ হয়েছে সেটা নিয়ে আপত্তি করেছে তারা।
মায়ানমারের ‘আন্তরিকতার অভাবে’ রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের দুই দফা চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে জানিয়ে মোমেন বলেন, রোহিঙ্গাদের তালিকা নিয়ে তারা ঠিক মতো হোমওয়ার্ক করেনি। তাদের আন্তরিকতার অভাব থাকায় দুই দফা উদ্যোগ নিয়েও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু করা যায়নি। আমরা তাদের এক লাখ রোহিঙ্গার তালিকা দিয়েছিলাম। কিন্তু তারা মাত্র আট হাজার রোহিঙ্গাকে নিজেদের নাগরিক বলে মেনে নিয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ মানবিক দিক থেকে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছিল। কিন্তু তাদের জোর করে দেশে ফেরত পাঠাতে চায় না। তারা যেন নিরাপত্তা ও সম্মান নিয়ে নিজ দেশে ফিরতে পারে, সে লক্ষ্যে কাজ চলছে। আমরা মায়ানমার সরকারকে বলেছি, তোমাদের জনগণ তোমাদের বিশ্বাস করছে না। তোমরা রোহিঙ্গা নেতাদের দেশে নিয়ে গিয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেখাও। তাহলে তাদের মধ্যে বিশ্বাস তৈরি হতে পারে। এ বিষয়ে আমরা মায়ানমারকে চিঠিও দিয়েছি। কিন্তু এর কোন জবাব আসেনি।
রোহিঙ্গাদের কারণে কক্সবাজারে জীবনযাত্রার পরিবর্তন হয়ে যাওয়ার প্রসঙ্গ টেনে আবদুল মোমেন বলেন, কক্সবাজারে স্থানীয়দের থেকে রোহিঙ্গা দ্বিগুণ। স্থানীয় জনসংখ্যা পাঁচ লাখ। আর সেখানে এই মুহূর্তে ১১ লাখ রোহিঙ্গা অবস্থান করছে। এ কারণে কক্সবাজারের জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। সেখানকার তরুণরা চাকরি পাচ্ছে না। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে।
তিনি বলেন, বিশ্বের অনেক দেশ ও আন্তর্জাতিক অনেক সংস্থা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেও, তা যথেষ্ট নয়। রোহিঙ্গা সংকটের কারণে বাংলাদেশ সরকারের পাঁচ হাজার ৬৩৬ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। এই অর্থ আমরা আমাদের উন্নয়ন প্রকল্পে ব্যয় করতে পারতাম।
শিল্পকলা একাডেমি, দৈনিক ভোরের কাগজ এবং প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরাম যৌথভাবে সাত দিনের এই আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে। আগামী ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ১১টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত প্রদর্শনী সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
শুক্রবার, ০৩ জানুয়ারী ২০২০ , ২০ পৌষ ১৪২৬, ৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪১
সাংস্কৃতিক বার্তা পরিবেশক |
বাংলাদেশের পক্ষ থেকে দেয়া ১ লাখ রোহিঙ্গার তালিকা থেকে মাত্র ৮ হাজার রোহিঙ্গাকে মায়ানমার সরকার স্বীকৃতি দিয়েছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আবদুল মোমেন। গতকাল শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে ‘ফ্ল্যাশ অন রোহিঙ্গা জেনোসাইড’ শীর্ষক আলোকচিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা বলেন। তিনি বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু করতে সম্প্রতি কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনের জন্য মায়ানমারের কাছে চিঠি দেয়া হয়েছে। কিন্তু তারা এখনও এই বিষয়ে কিছু জানায়নি আন্তর্জাতিক আদালতে রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগে মায়ানমারের শুনানির মুখোমুখি হওয়ার প্রসঙ্গ টেনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলে, একে আবদুল মোমেন বলেন, রোহিঙ্গা ‘হত্যাযজ্ঞ’ চালানোর বিষয়ে সেখানে অস্বীকার করেনি মায়ানমার। তবে ‘গণহত্যা’ হয়েছে সেটা নিয়ে আপত্তি করেছে তারা।
মায়ানমারের ‘আন্তরিকতার অভাবে’ রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের দুই দফা চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে জানিয়ে মোমেন বলেন, রোহিঙ্গাদের তালিকা নিয়ে তারা ঠিক মতো হোমওয়ার্ক করেনি। তাদের আন্তরিকতার অভাব থাকায় দুই দফা উদ্যোগ নিয়েও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু করা যায়নি। আমরা তাদের এক লাখ রোহিঙ্গার তালিকা দিয়েছিলাম। কিন্তু তারা মাত্র আট হাজার রোহিঙ্গাকে নিজেদের নাগরিক বলে মেনে নিয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ মানবিক দিক থেকে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছিল। কিন্তু তাদের জোর করে দেশে ফেরত পাঠাতে চায় না। তারা যেন নিরাপত্তা ও সম্মান নিয়ে নিজ দেশে ফিরতে পারে, সে লক্ষ্যে কাজ চলছে। আমরা মায়ানমার সরকারকে বলেছি, তোমাদের জনগণ তোমাদের বিশ্বাস করছে না। তোমরা রোহিঙ্গা নেতাদের দেশে নিয়ে গিয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেখাও। তাহলে তাদের মধ্যে বিশ্বাস তৈরি হতে পারে। এ বিষয়ে আমরা মায়ানমারকে চিঠিও দিয়েছি। কিন্তু এর কোন জবাব আসেনি।
রোহিঙ্গাদের কারণে কক্সবাজারে জীবনযাত্রার পরিবর্তন হয়ে যাওয়ার প্রসঙ্গ টেনে আবদুল মোমেন বলেন, কক্সবাজারে স্থানীয়দের থেকে রোহিঙ্গা দ্বিগুণ। স্থানীয় জনসংখ্যা পাঁচ লাখ। আর সেখানে এই মুহূর্তে ১১ লাখ রোহিঙ্গা অবস্থান করছে। এ কারণে কক্সবাজারের জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। সেখানকার তরুণরা চাকরি পাচ্ছে না। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে।
তিনি বলেন, বিশ্বের অনেক দেশ ও আন্তর্জাতিক অনেক সংস্থা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেও, তা যথেষ্ট নয়। রোহিঙ্গা সংকটের কারণে বাংলাদেশ সরকারের পাঁচ হাজার ৬৩৬ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। এই অর্থ আমরা আমাদের উন্নয়ন প্রকল্পে ব্যয় করতে পারতাম।
শিল্পকলা একাডেমি, দৈনিক ভোরের কাগজ এবং প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরাম যৌথভাবে সাত দিনের এই আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে। আগামী ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ১১টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত প্রদর্শনী সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে।